দীর্ঘ আট বছর পর নতুন করে সন্ত্রাসী তালিকা করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটান পুলিশ (সিএমপি)। এক্ষেত্রে হরতাল-অবরোধে নাশকতা সৃষ্টিকারী ও পুলিশের ওপর হামলাকারীদের নাম তালিকায় থাকবে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে। সে সঙ্গে তালিকায় থাকবে পৃষ্ঠপোষকদের নামও। এদিকে বিএনপি নেতারা দাবি করছেন, রাজনৈতিকভাবে হয়রানির জন্যই এ তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।
বিগত ২০০৬ সালে সর্বশেষ সন্ত্রাসী তালিকা প্রণয়নের পর নতুন আর কোনো তালিকা করেনি চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এর মাঝে কয়েকবার শুধুমাত্র হালনাগাদ করা হলেও গত দুই বছর ধরে তাও বন্ধ রয়েছে। তাই নতুন করে সন্ত্রাসী তালিকা তৈরি করতে যাচ্ছে পুলিশ। পুলিশ কর্মকর্তাদের মতে, এক্ষেত্রে নতুন এ তালিকায় ভিন্নমাত্রার সন্ত্রাসীদের নামই অন্তর্ভূক্ত করা হবে। সিএমপি’র অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রকৌশলী বনজ কুমার মজুমদার বলেন, এক-দুই বছর ধরে যারা পুলিশের উপর আক্রমণ করে, বোমা হামলা চালানো হচ্ছে। সন্ত্রাস বলতে এখন এগুলো অšত্মর্ভুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।
সিএমপি’র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) বাবুল আকতার বলেন, প্রতিনিয়ত পুলিশের উপর হামলায় যারা পরোক্ষভাবে জড়িত ছিলো নতুন তালিকায় তাদের নাম অšত্মর্ভুক্ত করা হবে। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, তালিকাভূক্তরা সব সময় থাকবে পুলিশের নজরদারীর মধ্যে। আর এ তালিকা অপরাধ দমনে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে। বাবুল আকতার আরও বলেন, ভবিষ্যতে এ রকম ঘটনা কেউ যদি ঘটাতে চাই সে ক্ষেত্রে আগে থেকেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া সহজ হবে। এলাকা ভিত্তিক কারা এ ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত তা সহজেই বের করা সক্ষম হবে বলেও জানান তিনি।
তবে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন দাবি করছেন, প্রকৃত সন্ত্রাসীদের বাদ দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের রাজনৈতিকভাবে হয়রানী করতেই এ তালিকা করা হচ্ছে। ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, অনৈতিক মামলাগুলো থেকে যদি সন্ত্রাসী তালিকায় তাদের নাম আসে, এ ধরণের ঘটনায় আসল সন্ত্রাসীরা ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে এবং রাজনীতিবীদদের কুলশীত করা হচ্ছে। অবশ্য বিএনপি নেতার এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিএমপি’র এ কর্মকর্তা। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) প্রকৌশলী বনজ কুমার মজুমদার বলেন, এ কথাগুলো সঠিক নয়, যারা সন্ত্রাসী তালিকায় আসবেন তাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকতে হয় এবং তাদের নামে মামলা থাকতে হবে।
গত এক বছরে নাশকতার ঘটনায় নগরীর ১৬টি থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে ১০৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৬৫টি, বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১১টি এবং জোটভূক্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ২৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় আসামী রয়েছে ১৪ হাজার নেতা-কর্মী।