দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের দক্ষতার অভাবে প্রতিষ্ঠানটি অনেকাংশে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, দুদকের কর্মকর্তাদের পক্ষে অনুসন্ধানে স্বচ্ছতা না থাকাতেই প্রতিষ্ঠানের অনেক কাজে সমস্যা দেখা দেয়, ফলে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সমস্যাও হয়।
গতকাল রোববার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দুদকের কর্মকর্তাদের আইনবিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দুদকের ব্যর্থতা আইনের জন্য নয়। অনুসন্ধান ও তদন্তের মধ্যে যদি স্বচ্ছতা থাকে, তাহলে দুদক আইনের মধ্যে থেকেই আসল ঘটনা প্রমাণ করা সম্ভব।
দুদক আইন প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রী বলেন, দুদক আইন আদালতের মাধ্যমে পরিশুদ্ধ হয়ে একটি আদর্শ আইনে পরিণত হয়েছে। যে কেউ আইনের মধ্যে থেকে অনুসন্ধান ও তদন্ত করলে কোনো ফাঁকফোকর থাকার কথা নয়। তিনি দুদকের কর্মকর্তাদের আরও দক্ষ হওয়ার তাগিদ দেন।
প্রতারণা, জালিয়াতি ও আত্মসাৎ-সংক্রান্ত ধারাগুলো সর্বশেষ সংশোধিত দুদক আইনে সংযোজিত হওয়ার বিষয়ে আনিসুল হক বলেন, আইনটি নিয়ে প্রয়োজনে পর্যালোচনা করা হবে। তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সমস্যার সমাধান সম্ভব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক বলেন, কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রেও দুর্নীতির কথা রয়েছে, যা কিনা প্রাচীন ভারতে দুর্নীতির অস্তিত্বকে নির্দেশ করে। মানবসভ্যতার সঙ্গেই দুর্নীতি চলে এসেছে। দুর্নীতিকে অবশ্যই অনিয়ন্ত্রিত থাকতে দেওয়া যায় না। আইন প্রসঙ্গে এ বি এম খায়রুল বলেন, অহরহ আইনের পরিবর্তনে বিচারকসহ সবাই বিভ্রান্তিতে পড়েন। তাই যেকোনো আইনের সংশোধন ধীরস্থিরভাবে করা উচিত।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সভাপতি ও দুদকের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বলেন, দুদকের মামলার সফলতার হার মাত্র ৪০ শতাংশ, যা কাম্য নয়। আইনজীবীরা সহযোগিতা করলে দুদক সফল হবে।
কমিশনের উপসহকারী পরিচালক থেকে পরিচালক পদমর্যাদার অনুসন্ধান ও তদন্তকাজে নিযুক্ত প্রায় ২৫০ জন কর্মকর্তাকে আটটি ব্যাচে (প্রতি ব্যাচে পাঁচ দিন) এ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন হাইকোর্টের আইনজীবীরা।