মোবাইল ফোনে বন্ধুত্বের ফাঁদ পেতে সেনাবাহিনীর সদস্য আলীকে নাটোর থেকে খাগড়াছড়ির রামগড়ে দাওয়াত দিয়ে এনে অপহরণের সাথে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠন যুবলীগের নেতা্কর্মীরা।
এই অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবলীগের নয় নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কৃতরা হলেন খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন (তাহের ফারুক), পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম মাহমুদ, ৪নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সুমন, ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শিপন, সাধারণ সম্পাদক চিকন ফারুক, প্রচার সম্পাদক মুরগি মিলন (এসি মিলন), উপজেলা যুবলীগের সদস্য ফরিদ (বড় ফরিদ), রুবেল ও ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম। একই কারণে রামগড় পৌর যুবলীগের কমিটিও ভেঙে দেয়া হয়েছে।
সেনা সদস্যের অভিযোগে জানা যায়, বগুড়ার সেনাবাহিনীর এনসি একাডেমীতে কর্মরত সৈনিক নান্টু আলী নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার কাদিম চিলান গ্রামের বাসিন্দা। মোবাইল ফোনে বন্ধুত্বের ফাঁদ পেতে সেনাবাহিনীর সদস্য আলীকে নাটোর থেকে গত রোববার রামগড়ে দাওয়াত দিয়ে আনে। পরে অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা করে রামগড় যুবলীগের ওই নয় নেতাকর্মী। র্যাব অভিযান চালিয়ে সোমবার রামগড়ের বনবিথী বন বাগান থেকে অপহৃত সেনা সদস্যকে উদ্ধার করে। ওই দিনই র্যাব এদের মধ্যে উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক হোসেন (তাহের ফারুক), পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শামিম মাহমুদ ও ৯নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শিপনকে গ্রেফতার করে।
বর্তমানে আটক যুবলীগের নেতরা খাগড়াছড়ি জেলা কারাগারে আটক আছেন। অপর ছয়জন আত্মগোপন করেছেন। তারা নয়জনই রামগড় থানায় অপহৃত সেনাসদস্যের করা অপহরণ ও চাঁদাবাজি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।
খাগড়াছড়ি জেলা যুবলীগের সভাপতি যতন কুমার ত্রিপুরা জানান, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক হারুণ অর রশিদের মৌখিক নির্দেশে গত বৃহস্পতিবার জেলা যুবলীগের এক সভায় রামগড়ের ওই নয় যুবলীগ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার এবং পৌর যুবলীগের কমিটি ভেঙে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তবে রামগড় উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল কাদের বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সদস্যকে অপহরণের সঙ্গে ওই নয়জন নেতার সবাই জড়িত নয়। সত্যিকারভাবে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আমার আপত্তি নেই।’
এদিকে যুবলীগের এ তিন নেতাকে আটকের খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোস্তফা হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান কাজী আলমগীর হোসেন ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের থানায় ছুটে যান। তিনি দাবি করেন, তারা সবাই রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার।