সরকারের সমালোচনা করলেই হামলা : ইমরান

0
164
Print Friendly, PDF & Email

গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার সরকারের সমালোচনা করলে হামলা চালানো হয় বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, আন্দোলন সরকারের পক্ষে গেলে সমর্থন দেয়, সহযোগিতা করে। আর সমালোচনা করলে শুরু হয় হামলা-মামলা। গতকাল সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
ইমরান এইচ সরকার বলেন, ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার প্রতিবাদ করায় এই পরিস্থিতির শিকার হতে হয়েছে। যতই হামলা-মামলা হোক, গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন চলবে বলে জানান ইমরান। তবে গতকাল কোনও পক্ষকেই শাহবাগে দেখা যায়নি। গত শুক্রবারের ঘটনায় আটক উভয়পক্ষের ৭ জন মুক্তি পেয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে মঞ্চের কর্মীদের ওপর ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে তার প্রতিবাদে শুক্রবার শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে সমাবেশের ডাক দেয়ে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র। একই দিনে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড নামে সংগঠন সমাবেশের ডাক দেয়। উভয়পক্ষের কোনও অনুমতি না থাকায় সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ। পরে তারা সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশ মঞ্চের কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। উভয়পক্ষের ৭ জনকে আটক করা হয়। তবে সবাই আজ মুক্তি পায়। গত শুক্রবার ইমরান এইচ সরকারকে শাহবাগে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছিল মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। তবে গতকাল কোনও পক্ষকেই শাহবাগে দেখা যায়নি। ইমরান এইচ সরকারসহ গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীরা পরীবাগের সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে দুপুর থেকে ৩ ঘণ্টাব্যাপী মিটিং করেন। পরে সেখানেই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তারা নতুন কোনও কর্মসূচি ঘোষণা করেননি।
মঞ্চের নামে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অর্থ সহায়তা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে— এমন প্রশ্নে ইমরান বলেন, আমরা কোনও সংগঠনের পক্ষ থেকে চাঁদা নিই না। আমাদের কর্মীরাই আন্দোলনের আয়োজন করে। কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণে একনায়কতন্ত্র চলে, যার ফলে মঞ্চের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে এবং কোন্দল দেখা দিয়েছে— এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কথাটা ঠিক নয়। আমরা আলোচনার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিই। ছাত্রলীগের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, একটি সংগঠন বাদে আমরা সবাই একত্রেই আছি। কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় অন্য সংগঠনগুলোর নেতারা আসতে না পারলে পরে তাদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করা হয়।
ইমরান বলেন, ছাত্রলীগ আমাদের প্রতিপক্ষ নয়। মঞ্চের কর্মীদের ওপর হামলার জন্য আমরা ছাত্রলীগ কিংবা কোনও একটি সংগঠনকে দায়ী করছি না। কয়েকজন কর্মীর নাম বলেছি। তাদের বিরুদ্ধে সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করছি।
এ ছাড়া সরকারের মধ্যে ভূত রয়েছে উল্লেখ করে ইমরান বলেন, আমাদের দাবির সঙ্গে সরকার একসময় একমত পোষণ করেছে। কিন্তু সরষের মধ্যে ভূত রয়েছে, যা সরকার উপলব্ধি করতে পারছে না। তাই আসল বিষয়টি উপলব্ধি করে গণজাগরণ মঞ্চের ৬ দফা বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার রাতে মারামারির পর শুক্রবার শাহবাগে প্রজন্ম চত্বরে পাল্টাপাল্টি সমাবেশের চেষ্টা হলে উভয়পক্ষের ৭ জনকে আটক করে পুলিশ। গণজাগরণ মঞ্চের গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— শামস রশীদ জয়, ধীমান আজিজ, ফরিদ আহমেদ, সোহাগ আজিজ ও টিটু। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের সভাপতি মেহেদী ছাড়া কমান্ডের কর্মী পারভেজ আহমেদকে আটক করা হয়, তারা সবাই গতকাল মুক্তি পেয়েছেন। সেই রাতের মারামারির ঘটনায় শাহবাগ থানায় দুটি মামলা হয়। গণজাগরণ মঞ্চের কর্মী নরেন্দ্র সাহা জয় বাদি হয়ে একটি মামলা করেন। এতে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের সভাপতি মেহেদী হাসান, যুবলীগনেতা নাসিম আল মামুন রূপকসহ ৮ জনকে আসামি করা হয়। মামলার অন্য আসামিরা হলেন— আবীর, শিশির, শেখ আসলাম, এমএম শাহিন, মেসবাহ ও বাবুল। অন্যদিকে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ কমান্ডের সভাপতি মেহেদী বাদি হয়ে গণজাগরণ মঞ্চের ৩ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, মাহমুদুল হক মুন্সী বাঁধন ও কর্মী জয়কে।

শেয়ার করুন