১. মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার জাতীয় ঐক্যের সরকার হানিমুন পিরিয়ডের তিন মাসেই ব্যবসাবান্ধব সরকারের চরিত্রে আবির্ভূত হয়েছে। বিগত শাসনামলে একদল মন্ত্রীর অযোগ্যতা, অদক্ষতা, পদে পদে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি, দুর্নীতি, অন্যদিকে বিএনপি ও জামায়াতের সহিংস হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দেশের অর্থনীতি স্তব্ধ করে দিয়েছিল। শিল্প কারখানা, গার্মেন্ট খাত ও ৭০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগে বাধায় আবাসন খাতকে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছিল। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে চরম বন্ধ্যত্বই নয়, রীতিমতো বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। জাতীয় নির্বাচনের আগে তিন মাসের অবরোধে এক লাখ কোটি টাকার অর্থনৈতিক লোকসান হয়েছিল বলে অর্থমন্ত্রী ও ব্যবসায়ী নেতারা জানিয়েছিলেন।
২. এবার সরকার গঠনের শুরুতে প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ, ত্যাগী ও নবীন নেতৃত্বের সমন্বয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মন্ত্রিসভা উপহার দেন তা যেমন গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে, তেমনি দেশের অর্থনৈতিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে, স্থবিরতা, বন্ধ্যত্ব কাটিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি ফিরিয়ে আনতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে। তিন মাসের মধ্যেই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ব্যবসায়ীদের সঙ্গে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট বিশ্বকাপ নিয়ে খোলা মনে বৈঠক করেছেন। বলেছেন, পরিস্থিতি স্থিতিশীল, গ্যাস-বিদ্যুৎ খাতের উন্নতি হয়েছে। শিল্প খাতের বিকাশ এখন সময়ের ব্যাপার। অর্থমন্ত্রী এখন আগামী অর্থবছরের বাজেট প্রণয়নের কাজে ব্যস্ত। নানা সূত্র আভাস দিয়েছে, এ বাজেট হবে ব্যবসাবান্ধব। যেখানে বিভিন্ন খাতে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে প্রণোদনা প্যাকেজেরও সুযোগ থাকছে। বিগত শাসনামলে শেয়ার কেলেঙ্কারি, হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপসহ নানা ব্যাংকিং স্ক্যান্ডাল নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওপর। এ নিয়ে অর্থমন্ত্রীই নন, প্রধানমন্ত্রীও বারবার বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন। আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংক কঠোর সমালোচনা করেছিল। এবার সরকার গঠনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতির প্রশ্নে জিরো টলারেন্স নেওয়ায় দক্ষ মন্ত্রীদের কাজের সুবিধা হচ্ছে। অর্থনৈতিক খাতেও তিন মাসে কোনো বিশৃঙ্খলা দূরে থাক, ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে। আইএমএফও সোমবার বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক স্থিতিশীল এবং আগের থেকে ভালো। অর্থমন্ত্রী মুহিত আগাগোড়াই আপাদমস্তক একজন সৎ ও সৃজনশীল মানুষ হিসেবে সব মহলে পরিচিত। এবার অর্থমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ছায়ায়ই নন, ব্যবসাবান্ধব মন্ত্রিসভায় দক্ষ, প্রাজ্ঞ সহকর্মীও পেয়েছেন। বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টও রবিবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন অনেক সম্ভাবনাময় সময় পার করছে। একে কাজে লাগাতে হবে। এ তিন মাসে অর্থমন্ত্রী ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে ব্যবসায়িক সাফল্য আনতে পাঁচ বছরের জন্য ‘বিজনেস প্ল্যান’ তৈরি করেছেন।
৩. দেশের শিল্প-বাণিজ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা রয়েছে, ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হয় এমনটি বিগত সরকারের শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া ভুলেই গিয়েছিলেন। একসময়ের ১৫ দলের রাজনীতির মিস্টার ডিসিশন, আওয়ামী লীগ রাজনীতির দুঃসময়ের কাণ্ডারি প্রবীণ রাজনীতিবিদ আমির হোসেন আমু শিল্পমন্ত্রী হওয়ার পর ফের শিল্প-বাণিজ্যের সঙ্গে নতুন সেতুবন্ধনই তৈরি করেননি, স্থবির শিল্প খাতে গতিসঞ্চার করেছেন। বসে নেই তিনি। প্রথম দিন থেকেই শিল্পপতি-ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতামত বৈঠকই করেননি, যেখানে যার প্রতিবন্ধকতা সেখানেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। এমনকি তার মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ঘুরে ঘুরে, বৈঠকের পর বৈঠক করে প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছেন। অচল প্রতিষ্ঠান সচল করছেন। নেতিবাচক ইমেজ থেকে পজিটিভ ইমেজে শিল্প মন্ত্রণালয়কে আলোর মুখ দেখিয়েছেন। একজন সিনিয়র মন্ত্রী এবং অভিজ্ঞ-বিচক্ষণ রাজনীতিবিদ হিসেবে তার প্রজ্ঞা, মেধা ও দূরদর্শিতা দিয়ে দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিগত দিনে যারা সরকারের দূরত্ব তৈরি করেছিলেন তা দূর করতে তিনি অনন্যসাধারণ ভূমিকা রাখছেন। নিজের মন্ত্রণালয়ের বাইরেও শিল্পপতিদের স্বার্থে উদ্যমী হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। তাদের সমস্যার সমাধানে রাখছেন ভূমিকা। শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলেও খাদ্যমন্ত্রী হিসেবে আমির হোসেন আমু সাফল্যের মুকুট পরেছিলেন। সরকার বিদায়কালে খাদ্য উদ্বৃত্ত ছিল।
‘৯৬ সালের সরকারের পর মানুষ ভুলেই গিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসাবান্ধব চরিত্র নিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নে কতটা ভূমিকা রাখতে পারে। শুরুতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দক্ষতার সঙ্গে চালিয়েছিলেন তোফায়েল আহমেদ। সেবার পরের ১৪ মাস মরহুম আবদুল জলিল দায়িত্ব পালন করলেও ছন্দপতন ঘটেনি। ২০০১ সালের শাসনামলে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাণিজ্যমন্ত্রী থাকাকালে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিসহ নানা বিতর্কে তাকে সরে দাঁড়াতে হয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ জোট ক্ষমতায় এলে প্রথমে জাতীয় পার্টির জি এম কাদের ও আওয়ামী লীগের কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এ সময়টায় দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক কূটনীতির সঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রীর যে ভূমিকা রয়েছে তা মানুষ ভুলে গিয়েছিল। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছিল। বাণিজ্যমন্ত্রী একজন বোবা দর্শক হয়ে বসেছিলেন। আরেকজন বাজার ঘুরে জনগণকে মোবাইল ফোন নম্বর উপহার দিলেও মানুষ দ্রব্যমূল্যের নাগাল পায়নি। তাকেও নয়। ব্যবসায়ীরাও সন্তুষ্ট হতে পারেননি। জিএসপি নিয়ে মার্কিন স্থগিতাদেশ গার্মেন্ট খাতকে অনিশ্চয়তার অন্ধকারে ঠেলে দেয়। আওয়ামী লীগ রাজনীতির ক্রাইসিস ম্যানেজার তোফায়েল আহমেদ ফের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর বাণিজ্যমন্ত্রী হয়ে রীতিমতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে অ্যারাবিয়ান ব্লাকহর্সের মতোই ছুটতে শুরু করেন। দেশের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্বশীল সব সংগঠনের সঙ্গে তিনি সিরিজ বৈঠক করেন। দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গেও আলাদা বৈঠক করেন। ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা, সংকট এবং তা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেন। এমনকি তার মন্ত্রণালয়ের বাইরে যেখানে যেখানে কথা বলতে হয় সেখানে কথা বলেন, কোথাও বা সমন্বয় করেন। সমস্যার সমাধান করেন। ভারতের সঙ্গেও বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে তিনি দিলি্ল ছুটে যান। সেখানকার বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধার ওপর আরোপিত স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারে অন্দরে-বাইরে কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপও অব্যাহত রাখেন। জিএসপি স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত পূরণেও জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন। তোফায়েল আহমেদ গতরাতে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন সংক্রান্ত জেনেভা বৈঠকে যোগ দিতে ঢাকা ছেড়েছেন। ওই বৈঠক শেষে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত আরেক বৈঠকে যোগ দিতে তিনি দুবাই যাবেন। বিদেশি বিনিয়োগ আনতে এবং রপ্তানি বাড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছেন যা ব্যবসায়ীদের মধ্যেও প্রাণচাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। এ পরিষদে তোফায়েল আহমেদ নিজে চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআইর সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ সদস্যসচিব হয়েছেন। গত এক যুগ যেসব ব্যবসায়ী-শিল্পপতিকে সচিবালয়ের ভেতরে দেখা যায়নি তাদের এখন তোফায়েল আহমেদের ডাকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে দেখতে পাওয়া যায়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রাণ ফিরে এসেছে। দেশের তৈরি পোশাক শিল্প খাতের বিকাশে প্রণোদনা প্যাকেজেরও উদ্যোগ নিয়েছেন। তোফায়েল আহমেদ নতুন নতুন দেশে পণ্য রপ্তানির দুয়ার খুলে দিতে উদ্যোগই নেননি, সেখানকার বাংলাদেশ মিশনকেও কাজে লাগিয়েছেন। শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলে মরহুম পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুস সামাদ আজাদ রসিকতা করে তোফায়েলকে বলেছিলেন, বুঝতে পারি না পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমি না তুমি? বিগত শাসনামলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কের দরজায় অনেক ক্ষেত্রেই তালা মেরেছিল। এবার বাণিজ্যমন্ত্রীর কারণে অর্থনৈতিক কূটনীতির তৎপরতায় সে তালা খুলছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে টিসিবির সব ধরনের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। আমদানিকারকদের সঙ্গে বৈঠক অব্যাহত রয়েছে। ভারত, বাংলাদেশ, চীন, মিয়ানমার মিলে চার দেশে কানেকটিভিটি নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতেও তিনি হাত বাড়িয়েছেন। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি সে দেশের বাণিজ্য, অর্থ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী থাকাকালে রিলায়েন্স গ্রুপসহ আজকের ভারতের অনেক শক্তিশালী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে ভূমিকা রেখেছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েলের হাত ধরে বীমা খাত এ দেশে বিকশিত হয়েছিল। অলরাউন্ডার মিনিস্টার তোফায়েল বাণিজ্যমন্ত্রী হয়েও কাজের পরিধি নিজের ক্যারিশমায় দিগন্তবিস্তৃত করেছেন। রাজনৈতিক সমালোচকরাও তার কাজের প্রশংসা করছেন।
৪. বিগত শাসনামলে গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী হয়ে আবদুল মান্নান খান দেহভঙ্গিমায় সংসদের ভেতর-বাইরে বিপ্লবী শব্দের গাঁথুনিতে অতিকথনের তুফান তুললেও বিগত নির্বাচনে ভোটযুদ্ধে নিজের ভরাডুবিই ঘটাননি, মন্ত্রণালয়কেও পথে বসিয়ে গিয়েছিলেন। দেশের ৭০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে বাধা আবাসন খাতকে স্থবির করে দিয়েছিলেন। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, তিনি ফিরে এলে এ খাতের মৃত্যুঘণ্টা বাজত। শেখ হাসিনার প্রথম শাসনামলের সফল বিমান ও পূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবার গৃহায়ন ও পূর্তমন্ত্রী হয়ে তিন মাসের মধ্যেই প্রমাণ করতে শুরু করেছেন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে আবাসন খাতকে স্থবির করে রাখলে চলবে না। আবাসন খাতের সঙ্গে প্লট, ফ্ল্যাট, নির্মাণসামগ্রী, আসবাব, ডেকোরেশন, ক্রোকারিজসহ শিল্প খাতের এক বড় অংশ জড়িয়ে আছে। মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই করে দিতে বেসরকারি খাতের বিকাশের কোনো বিকল্প নেই। তিনি তিন মাসের মধ্যেই পথে পথে আবাসন খাতের বাধা সরিয়ে দিতে শুরু করেছেন। কেনা জায়গায় ভবন নির্মাণের অনুমতিদানের ফাইল আটকে রাখার মধ্য দিয়ে মানুষের জীবনে যে হতাশা নামানো হয়েছিল তা সরিয়ে দিতে শুরু করেছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আবাসন খাতের স্থবিরতা সৃষ্টি করায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের হার অতীতে কমেছিল। এ খাতের বিকাশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা অব্যাহত থাকলে, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সরিয়ে উদার হাত প্রসারিত থাকলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন দুই ডিজিটে চলে যেতে পারে। কৃষি, গার্মেন্ট, সেবা ও আবাসন খাত আমাদের অর্থনীতির ভিত্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ আবাসন খাতের নেতিবাচক প্রভাব দূর করে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে শুরু করেছেন। বিগত শাসনামলে এ খাত রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গেলেও আবাসন খাতের ব্যবসায়ীসহ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে তিনিও নতুন করে এ খাতে আশার আলো জাগিয়েছেন। নতুন করে ঘুরে দাঁড়াতে যাচ্ছে আবাসন খাত। এমনটি বলছেন পর্যবেক্ষকরা। গৃহায়নমন্ত্রী শুধু বেসরকারি খাতই নয়, সরকারি খাতেরও বন্ধ, স্থবির অবস্থা কাটাতে উদ্যোগ নিয়েছেন। সরকারি আবাসন প্রকল্প করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এমনকি পরিত্যক্ত সম্পত্তি নয়ছয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নেওয়ার পথ বন্ধ করে সেখানে বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে আবাসন সংকট নিরসনে রাজউককে নির্দেশ দিয়েছেন। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, সেবারের সফল মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এবারও পারছেন। যাত্রা সবে শুরু, লক্ষ্য বহুদূর।
৫. দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসাবান্ধব সরকারের বিকল্প নেই। বিগত সরকারের আমলে শেয়ার কেলেঙ্কারি, ব্যাংকিং খাতে নানা স্ক্যান্ডাল, পদ্মা সেতু বিতর্ক, অর্থনৈতিক খাতে বিশৃঙ্খলা- সব মিলিয়ে অর্থনীতিতে গতি আসেনি। কিছু কিছু মন্ত্রীর অতিকথন আর কারও কারও দুর্নীতিতে সরকারের জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছিল। এবার সরকার গঠনের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতির প্রশ্নে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। বিগত শাসনামলে যে সমালোচনার তীর সরকারকে সইতে হয়েছে এবারের তিন মাসে সেখানে পজিটিভ ইমেজ তৈরির নেপথ্যে মন্ত্রীদের ধারে ও ভারে কাটা ভূমিকা রয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন। পাশাপাশি অর্থনৈতিক স্থবিরতা কাটিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের উন্নয়নে সরকারের দায়িত্বশীল মন্ত্রীরা ভূমিকা রাখছেন। এ ক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের দূরদর্শিতা ও দক্ষতা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। ব্যবসাবান্ধব সরকারের ইমেজ গড়ে উঠছে।