উপজেলা নির্বাচনে দিনাজপুর জেলায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুর্গের পতন ঘটেছে। তাদের শক্তি ও সমর্থন এখন ৩ নম্বর অবস্থানে। এতে প্রথম হয়েছে বিএনপি আর দ্বিতীয় হয়েছে জামায়াতে ইসলামী। জেলার ১৩ উপজেলার ৩৯টি পদের মধ্যে বিএনপি পেয়েছে ১৬টি, জামায়াতে ইসলামী ১৩টি, আওয়ামী লীগ পেয়েছে ৮টি এবং অন্যান্য ২টি। এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামীর বিষ্ময়কর সাফল্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ অনেকটা চিন্তিত। দিনাজপুর সদর, বীরগঞ্জ ও বিরামপুর উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে সমঝোতা হলে এ জেলায় আওয়ামী লীগ হোয়াইট ওয়াশ হতো বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করেছেন।
১৩ উপজেলার চেয়ারম্যান পদে বিএনপি ও জামায়াত ৯টি এবং আওয়ামী লীগ পেয়েছে মাত্র ৪টি। ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি ও জামায়াত ১২টি আর আওয়ামী লীগ পেয়েছে মাত্র ১টি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বিএনপি ও জামায়াত ৮টি, আওয়ামী লীগ ৩টি ও অন্যান্য ২টি পদে জয়ী হয়েছে। নবাবগঞ্জ উপজেলায় বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর একাধিক প্রার্থী থাকলেও চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে জামায়াত প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে। কোন উপজেলায় জামায়াত-বিএনপির লড়াই হয়েছে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগের অবস্থান মানুষের মন থেকে উঠে গেছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে ২টি উপজেলায়, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৯টি উপজেলায় ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২টি উপজেলায় বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে। ভাইস চেয়ারম্যান পদে দিনাজপুর সদরের মাত্র একটি পদই আওয়ামী লীগের মুখ রক্ষা করেছে। বাকী ১২টি ভাইস চেয়ারম্যানের পদই জামায়াত ও বিএনপির প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে। জামায়াত ও বিএনপির প্রতি মানুষের এই অকুন্ঠ সমর্থন আওয়ামী দুঃশাসনে অতিষ্ট মানুষের নিরব প্রতিবাদ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। অযথা হয়রানি ও মামলা করে সাধারণ মানুষকে নির্যাতন করে আওয়ামী লীগ আসলে নিজের ক্ষতিই করেছে। এখনো মামলার ভয়ে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর, খানসামা, নবাবগঞ্জ ও বিরামপুরের বহু গ্রামের মানুষ নিজ বাসায় উঠতে পারছেন না। এ অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই আওয়ামী লীগকে একেবারে বিদায় জানাবে দিনাজপুরসহ পুরো দেশবাসী-এমনটাই জানিয়েছেন দিনাজপুরের সাধারণ মানুষ। তাই সময় থাকতে ক্ষমতাসীনদের সজাগ হবার পরামর্শ দিয়েছেন তারা