বছরের প্রথম ৩ মাসে বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার ৬৯ জন

0
191
Print Friendly, PDF & Email

বছরের প্রথম তিন মাসে সারা দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৬৯ জন। গুম হয়েছেন ছয় জন। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য এসেছে। গতকাল প্রকাশিত এ প্রতিবেদনের সুপারিশে ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আনুগত্য না দেখিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের স্বচ্ছ, অবাধ ও নিরপেক্ষভাবে নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করতে এবং তা না হলে পদত্যাগের কথা বলেছে অধিকার।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মধ্যে কথিত ক্রসফায়ারে নিহত হয়েছেন ৪০ জন; জানুয়ারি মাসে ২০ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৩ জন এবং মার্চ মাসে সাতজন। নির্যাতনে মারা গেছেন তিন জন; ফেব্রুয়ারি মাসে দুইজন এবং মার্চে একজন। গুলিতে নিহত হয়েছে ২৪ জন; জানুয়ারি মাসে ১৮ জন, ফেব্রুয়ারিতে একজন এবং মার্চে পাঁচজন। পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে দুই জনকে। জানুয়ারি মাসে একজন এবং মার্চে একজন। জানুয়ারি মাসে গুম হয়েছেন একজন এবং ফেব্রুয়ারি মাসে পাঁচজন।
উপজেলা নির্বাচনে সহিংসতা ও ভোট জালিয়াতির কথা উল্লেখ করে অধিকার তার প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নির্বাচনে সংঘটিত ব্যাপক সহিংসতা ও ভোট জালিয়াতির ঘটনা প্রমাণ করে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি নির্দলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো প্রয়োজন। এ দেশের জনগণ এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ব্যতীত মুক্তভাবে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার চর্চা করতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
অধিকার রাজনৈতিক সহিংসতা অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করেছে প্রতিবেদনে। অধিকারের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মার্চ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় ২২ জন নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ১৩৫০ জন। অধিকার তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতা গ্রহণ করেছে এবং ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে আওয়ামী লীগের সহযোগী ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দুর্বৃত্তায়ন অব্যাহত আছে। সরকার ও ক্ষমতাসীন দল বিরোধী রাজনৈতিক দলের ও মতের অনেক সভা-সমাবেশে বাধা দেয় এবং হামলা চালায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধিকারের নির্যাতন বিরোধী সভায় কথা বলার কারণে পুলিশ গত ১৬ মার্চ এজাজ নামে এক ব্যবসায়ীকে মাদক মামলায় গ্রেফতার করে ১৭ মার্চ আদালতে পাঠায়।
অধিকার জানায়, মার্চ মাসে দেশে একজন সাংবাদিক নিহত এবং সাতজন আহত হয়েছেন। তিনজন সাংবাদিক হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। অধিকার এই ঘটনায় নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং হামলাকারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে।

অধিকার তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক মানবাধিকার লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ মার্চ মাসে দুইজন বাংলাদেশীকে গুলি করে হত্যা করেছে। তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। একই সময়ে বিএসএফের হাতে অপহৃত হয়েছেন ১২ জন।
অধিকার তার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে নারীর প্রতি সহিংসতা অব্যাহত রয়েছে। অনেক নারী ধর্ষণ, যৌতুক, এসিড সন্ত্রাস এবং বখাটেদের হয়রানির শিকার হয়েছেন। মার্চ মাসে ৩৩ জন নারী ও মেয়ে শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অধিকারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

শেয়ার করুন