নির্বাচন প্রশ্নে আগের অবস্থানেই যুক্তরাষ্ট্র

0
138
Print Friendly, PDF & Email

ক্রাইমিয়া সাধারণ পরিষদ গৃহীত রেজুলেশনের পক্ষে বিপক্ষে কোন অবস্থান না নেয়ায় ঢাকার ওপর ক্ষুব্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা গতকাল সংবাদ সম্মেলনে ওই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ভোট দান থেকে বিরত থাকায় রোববার এক সেমিনারে বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধন্যবাদ জানান ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার এ নিকোলায়েভ। এ বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক সাংবাদিক ঢাকার অবস্থানে ওয়াশিংটনের প্রতিক্রিয়া জানতে চান। জবাবে প্রায় তিন সপ্তাহ ওয়াশিংটনে কাটিয়ে সদ্য ঢাকায় ফেরা ড্যান মজিনা বলেন, ক্রাইমিয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ যেখানে রেজুলেশনের পক্ষে ভোট দিয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের ভোট দান থেকে বিরত থাকা খুবই দুঃখজনক। আমেরিকান ক্লাবে বিকালে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে দূতাবাসের প্রেস অফিসার ক্যালি এস. ম্যাকার্থিসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। জাতিসংঘের ভোটাভুটি প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমি এটাকে একটি বড় নির্বাচন হিসেবে দেখেছি। এর মধ্য দিয়ে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোন দেশের ‘আত্মসাৎ বৃত্তি’কে মেনে নেয় না। রাশিয়ার সঙ্গে ক্রাইমিয়া অন্তর্ভুক্তি প্রশ্নে গৃহীত গণভোটকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে ২৮শে মার্চ নিউ ইয়র্কে ওই ভোটাভুটি হয়। সেখানে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১০০ রাষ্ট্র ওই প্রস্তাবের পক্ষে দেয়ায় তা সংখ্যাগরিষ্ঠের মত হিসেবে গৃহীত হয়েছে। রাশিয়াসহ ১১ রাষ্ট্র প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ছিল। বাংলাদেশসহ ৫৮ রাষ্ট্র কোন পক্ষে না গিয়ে নীরবতা পালন করে। ঢাকার পররাষ্ট্র দপ্তর বলছে, ক্ষমতাধর দু’টি পক্ষ যখন মুখোমুখি অবস্থানে থাকে তখন উন্নয়নশীল অনেক দেশ সরাসরি কারও পক্ষে অবস্থান নেয় না। বাংলাদেশ সেই রেওয়াজ অনুসরণ করেছে। যেমনটি অতীতে বসনিয়া ও কসোভোর ক্ষেত্রে করা হয়েছে।
নতুন নির্বাচন প্রশ্নে আগের অবস্থানেই আছে যুক্তরাষ্ট্র: মজিনার তিন সপ্তাহ ওয়াশিংটনে অবস্থান, সেখানে স্টেট ডিপার্টমন্টের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার আলোচনা, দেশটির বিভিন্ন এলাকায় বসবাসরত বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত আমেরিকানদের সঙ্গে সিরিজ মতবিনিমতো সম্পর্কে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনের পর বহু বার গণমাধ্যমের মুখোমুখি হলেও আনুষ্ঠানিক কোন সংবাদ সম্মেলন গতকালই ছিল প্রথম। সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশের নির্বাচন ও নতুন সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে একাধিক প্রশ্ন এসেছে। সংলাপের মধ্য দিয়ে চলমান সঙ্কট নিরসন করে সবার অংশগ্রহণে বাংলাদেশে দ্রুত একটি নতুন নির্বাচন দেখার যে আকাঙক্ষা যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দুনিয়ার তা নিয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে নির্বাচনের পর দিন (৬ই জানুয়ারি) ওয়াশিংটন থেকে প্রকাশিত বিবৃতি এবং ১১ই ফেব্রুয়ারির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সহকারী মার্কিন মন্ত্রী নিশা দেশাই বিসওয়াল যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটিই যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বলে পুনরুল্লেখ করেন তিনি। স্পষ্ট করেই তিনি জানিয়ে দেন বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার সব রকম চেষ্টা তার আছে এবং থাকবে। অপর এক প্রশ্নে ড্যান মজিনা বলেন, রানা প্লাজার মর্মান্তিক ঘটনা এখনও দুনিয়াবাসী ভোলেনি। অনেকে সেই ঘটনা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তার সফরকালে। জানিয়েছেন তাদের অনুভূতি। ‘এমন চিত্র আর কেউ দেখতে চায় না’ উল্লেখ করে তিনি ২৪শে এপ্রিলে ওই ঘটনার বছরপূর্তির আগে শ্রম মান উন্নয়নে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়ন প্রত্যাশা করেন। উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্ট রাজনৈতিক উত্তেজনা, জালভোট, কেন্দ্র দখল ইত্যাদি সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ড্যান মজিনা বলেন, গণতন্ত্রে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়।

শেয়ার করুন