মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের রাজধানী বাঙ্গুইতে এক অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে গ্রেনেড হামলায় ১১ জন নিহত হয়েছেন, খবর জানিয়েছে রেড ক্রস। এর আগে সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছিলেন নিহতের সংখ্যা ২০। কিন্তু তখন বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছিলো যে, প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে কম। স্থানীয়রা বলছেন, সেলেকা মিলিশিয়া বাহিনীর প্রাক্তন যোদ্ধারা এ হামলার জন্য দায়ী। ২০১৩ সালের মার্চ মাসে সেলেকা বিদ্রোহীরা তৎকালীন প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে গৃহযুদ্ধের চরম বর্বরতা চলছে দেশটিতে। জননিরাপত্তা মন্ত্রী ডেনিস ওয়াঙগাও কিযিমালে জাতীয় বেতারের মাধ্যমে দেশবাসীকে জানান, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে (২২:০০ জিএমটি) এ হামলার ঘটনা ঘটে। বেতারে কিযিমালে বলেন, হামলাকারীরা ‘পুলিশদের চেনা সন্ত্রাসী’।মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের রেড ক্রস প্রধান অ্যান্টোইন ম্বাও বোগো বিদেশী এক সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘১১ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছেন ১৪ জন।’ তিনি আরো বলেন, ‘রেড ক্রসের স্বেচ্ছাসেবকরা লাশ সংগ্রহ করতে যাওয়ার পথে অচেনা সশস্ত্র ব্যক্তিরা তাদের বাধা দেয় এবং তাদের সেলফোন ছিনিয়ে নেয়।’ কেউ হতাহত হননি এ ঘটনায়। তবে বিদেশী এক সংবাদ মাধ্যমের একজন সাংবাদিক বলেন, এ ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে, দেশটিতে কাজ করা ত্রাণ কর্মীদের জন্য কতো কঠিন এ মুহূর্তে।জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান নাভি পিলারি গত সপ্তাহে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছিলেন, দেশটিতে খৃস্টান এবং মুসলমানদের পরস্পরের প্রতি ঘৃণা ‘ভয়ঙ্কর সীমায়’ পৌঁছেছে। ঘটানো হচ্ছে ভয়ানক সব হামলা। শিশুদের মাথা কেটে ফেলা হচ্ছে। এমনকি হত্যার পর নিহতের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ চিবিয়ে খাওয়ার মতো জঘন্য ঘটনাও ঘটছে।মূলত মুসলিম বিদ্রোহী গোষ্ঠী সেলেকা ২০১৩ সালে প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া বোযিযকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে তাদের নেতা মাইকেল ডিযোটাকে ক্ষমতায় বসানোর পর থেকেই গৃহযুদ্ধ দানা বেঁধে ওঠে মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রে। উপদলগুলোর মধ্যকার সহিংসতা নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নেননি- এমন প্রবল সমালোচনার মুখে জানুয়ারিতে ডিযোটা ক্ষমতার সিংহাসন থেকে নেমে যেতে বাধ্য হলেও সহিংসতা এখনো কমেনি। বরং দিনকে দিন বেড়ে চলেছে।