টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষেও নিজেদের ফিরে পায়নি বাংলাদেশ। যথারীতি টপঅর্ডারে ব্যর্থ তারা। এ ম্যাচেও জ্বলে উঠতে পারেননি তামিম-সাকিব-জিয়ারা। তাদের কা-জ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে শেষ পর্যন্ত থামতে হয়েছে ১৩৮ রানে। নির্ধারিত ওভারে এই রান তুলতে স্বাগতিকরা হারায় ৭ ব্যাটসম্যানকে। গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারত প্রথমে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায়। ব্যাট করতে নেমে মুশফিরা সেই আগের মতোই শুরুতে বিপর্যয়ে পড়ে। ৮২ রান তুলতে তাদের হারাতে হয় দলের নির্ভরযোগ্য ৫ ব্যাটসম্যানকে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান এনামুল হক, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম ও নাসির হোসেন ছাড়া বাকিদের ব্যাটিং ছিলো একবারে যাচ্ছেতাই। নিজের নামের প্রতি সুবিচার করে খেলতে পারেননি ওপেনার তামিম ইকবাল ও অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। এনামুলকে সঙ্গে নিয়ে দলের ব্যাটিং উদ্বোধনে এসে তামিম মাত্র ৬ রান করে ফিরে যান। ৩.২ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ তখন ছিলো ২০ রান। পরের বলেই তামিমকে অনুসরণ করে শামসুর রহমান শুভ। এক বল মোকাবেলা করে কোন রান না তুলেই তিনি প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটেন। পরের ওভারেই আউট হন সাকিব। ৪.১ ওভারে দলীয় ২১ রানে সাকিব ফিরে যান মাত্র ১ রান করে। ২১ রানে তিন উইকেটের পতন হলে বাংলাদেশ ব্যাকফুটে চলে যায়। যা থেকে আর বেরুতে পারেনি তারা। নির্ভরযোগ্য তিন ব্যাটসম্যানকে এনামুল-মুশফিক কিছুটা শক্ত ভিত গড়ার চেষ্ট করলেও এ জুটি বেশীক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১১ ওভারে দলীয় ৬৭ রানে মুশফিক ২৪ রান করে আউট হলে এনামুলকেই দায়িত্ব নিতে হয়। কিন্তু ভারতীয় বোলার মিশ্রা বেশিদূর এগুতে দেননি বাংলাদেশের এই ওপেনারকে।। ১৩ ওভারেই তিনি ফিরিয়ে দেন এনামুলকে। দলীয় ৮২ রানে আউট হওয়ায় আগে এনামুল করেন সর্বোচ্চ ৪৪ রান। ৪৩ বলে তার এই সংগ্রহে ছিলো ৫টি চার ও ২টি ছয়ের মার। এরপর নাসিরকে সঙ্গে নিয়ে মাহমুদুল্লাহ কিছুটা দৃঢ়তা দেখালেও দলীয় সংগ্রহ দেড়’শ তুলতে পারেননি। ১৯.১ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ যখন ১৩১ তখনই ফিরে যান নাসির। ১৭ বলে ১ চারের মারে ১৬ রান তুলে নাসির আউট হলে হতাশায় ডুবেন দর্শকরা। পরের বলেই শূন্য রানে জিয়াউর রহমান ফিরে গেলে মাশরাফিকে নিয়ে নির্ধারিত ওভার শেষ করেন মাহমুদুল্লাহ। শেষ পর্যন্ত তিনি ২৩ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ের সাহায্যে ৩৩ এবং মাশরাফি ২ বলে ১ ছয়ের মারে ৬ রানে অপরাজিত থাকেন।
২৬ রানে ৩ উইকেট শিকার করে মিশ্রা হন ভারতের সেরা বোলার। অশ্বিন ১৫ রানে পান ২ উইকেট।
জবাবে জয়ের জন্য ১৩৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভারত ৯ বল হাতে রেখে ২ উইকেটে ১৪১ রান করে ৮ উইকেটের সহজ জয় তুলে নেয়। ওপেনার রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলীর ৭৮ বলে এক’শ রানের পার্টনারশিপই মূলত ভারতের জয়ে ভীত গড়ে দেয়। বাকি কাজটি করেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনী। শর্মা ৪৪ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ের মারে ৫৬ রান করে আউট হলেও শেষ পর্যন্ত কোহলী ও ধোনী ছিলেন অপরাজিত। ২.৫ ওভারে দলীয় ১৩ রানে ভারত ওপেনার শেখর ধাওয়ানের উইকেট হারানোর পর দীর্ঘ বিরতিতে ১৫.২ ওভারে দলীয় ১১৩ রানে হারায় রোহিত শর্মাকে। কোহলি ৫০ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ের মারে ৫৭ এবং ধোনী ১২ বলে ১ চার ও ২ ছয়ের মারে ২২ রানে অপরাজিত থাকেন। ধাওয়ানের সংগ্রহ মাত্র ১ রান। মাশরাফি ২৩ ও আল-আমিন ৩৮ রানে পান একটি করে উইকেট। ম্যাচ সেরা নির্বাচিত হন অশ্বিন।