পুরোপুরি ছুটির আমেজেই থাকা নিউজিল্যান্ড কালও অনুশীলন করেনি। অধিনায়ক ব্রেন্ডন ম্যাককালাম তো গলফ খেলতে ভাটিয়ারীও চলে গিয়েছিলেন। তাঁদের বিপক্ষে জেতার পরদিন ছুটি ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটারদেরও। তবে তাঁদের কারো বাইরে কোথাও যাওয়ার কোনো খবর নেই। হোটেলবন্দি হয়ে পুরো দিন পার করে দেওয়া প্রোটিয়া শিবির কাল আবার নেদারল্যান্ডস ম্যাচ সামনে রেখে অনুশীলনে।
কিউইদের বিপক্ষে ১৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে জয়ের নায়ক ডেল স্টেইন অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে তুলে ধরলেন গত পরশুর দিনলিপিও, ‘হোটেলে আমাদের বেশ বড় একটা টিম রুম আছে। পোকার খেলা, সিনেমা দেখা থেকে শুরু করে সময় কাটানোর জন্য আরো যা যা করার, সব ওখানেই করি। অর্ডার দিলে হোটেলের উল্টো দিকের দোকান থেকে পিৎজাও চলে আসে। আমাদের তাই খুব একটা বাইরে বের হতে হয় না।’
তবে শ্রীলঙ্কার কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরুর মানসিক অবসাদ থেকে স্টেইনরা ঠিকই বের হয়ে এসেছেন। একই দলের কাছে নেদারল্যান্ডসের ৩৯ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জার পর স্টেইনের সঙ্গে কথোপকথন পর্বে আজকের ডাচ ম্যাচ প্রসঙ্গ তাই তেমন একটা উঠলই না। যা উঠল তার সবই নিউজিল্যান্ড ম্যাচ কেন্দ্রিক। যে ম্যাচের শেষ ওভারে কিউইদের জেতার জন্য দরকার ছিল মাত্র ৭ রান। নিউজিল্যান্ডের নাগালের মধ্যে থাকা ম্যাচ বের করে আনা স্টেইন নাকি নিজেও ভাবতে পারেননি জেতাতে পারবেন, ‘ওই ওভার শুরুর আগে আমার অন্তত দলকে জেতাতে পারব বলে মনে হয়নি। কিন্তু ভালো ব্যাপার হলো, শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতেছি।’ যে জয়ের পর দলের পরিবেশও অনেকটাই পাল্টে গেছে বলে জানালেন এই ফাস্ট বোলার, ‘ওই ম্যাচটি হেরে গেলে আমাদের দলের চেহারা একদমই অন্য রকম হয়ে যেত। সম্ভবত দেশে ফেরার টিকিটও অনেকটা নিশ্চিত করে ফেলতাম আমরা।’
যদিও শেষ ওভারে স্টেইনের হাতে বল তুলে দেওয়ার আগে বিশেষ কিছু ঘটবে বলেই আশা করেছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসিস। স্টেইন সে আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন। যে প্রতিদান দেওয়ায় বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ডের অবদানের কথাও বললেন, ‘ওনার প্রভাব অনেক। এ ডি এমন একজন, যিনি চাপের মুখে বোলিং করার সময় চাপ সরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটা আপনাকে শেখাবেন। যদিও তাঁর টি-টোয়েন্টি অভিজ্ঞতা তেমন নেই। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো প্রচুর খেলেছেন। তাই চাপ নিয়ন্ত্রণে তাঁর বিশেষজ্ঞ মতামতটা আমরা পাই।’
নিউজিল্যান্ড ম্যাচের শেষ ওভারটা অনন্ত চাপ নিয়েই করতে এসেছিলেন স্টেইন। কিন্তু চাপ সামলে ‘বিশেষ’ পারফরম্যান্সে ম্যাচ বের করে নেওয়ার পর অধিনায়ক দু প্লেসিসের প্রশংসায় ভেসেছেন এই ফাস্ট বোলার। বেশ কিছুদিন ধরেই তাঁর বিশ্বসেরা বোলারের মর্যাদা পেয়ে আসার যৌক্তিকতাও ওই পারফরম্যান্সে দেখেছে সবাই। হোসে মরিনহোর মতো তাই তাঁকেও ক্রিকেটের ‘স্পেশাল ওয়ান’ বলে ডাকার বিধিনিষেধও ছিল না কোনো। তবে প্রসঙ্গটা যখন স্বয়ং স্টেইনের সামনেই তোলা হলো, মৃদু হাসিতে বাধাই দিলেন যেন, “নিজেকে ‘স্পেশাল ওয়ান’ বলে মনে হয় না আমার। আমি রাসেল ডমিঙ্গোর (দক্ষিণ আফ্রিকার হেড কোচ) কথাই বলব। হোসে মরিনহো আর তাঁকে একই নামে ডাকা যেতে পারে।”