বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ চার শীর্ষ নেতার জামিন আবেদন নাকচ করেছে দায়রা জজ আদালত।
গতকাল ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মো. রুহুল আমিন শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
রাজধানী রমনা থানায় দায়েরকৃত তিনটি হত্যা মামলায় মির্জা ফখরুল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালামের জামিন চেয়ে পৃথক আবেদন করা হয়। অন্যদিকে দুদকের দায়েরকৃত অর্থপাচার মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেনের পক্ষে পৃথক আবেদনে একই আদালতে জামিন চাওয়া হয়।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জামিন না মঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে গত ১৮ মার্চ সংশ্লিষ্ট আদালতে ফৌজদারি বিবিধমূলে জামিনের আবেদন করা হয়।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের আপিল বিভাগে আসামিদের জামিন বাতিল হলে গতকাল ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে তা নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়। একইদিন তিনদিনের রিমান্ড শেষে সিএমএম আদালতে মোশারফকে হাজির করা হয়। ওইদিন তার জামিনও নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
আসামিদের অন্যতম আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জানান, মামলাগুলোর মধ্যে মির্জা আব্বাস তিনটি হত্যা মামলারই আসামি। ফখরুল ও সালাম রমনা থানার একটি করে মামলার আসামি। এর আগে গত ৯ মার্চ হাইকোর্টের আপিল বিভাগ মামলাগুলোতে আসামিদের জামিন বাতিল করেন।
উল্লেখ্য, ফখরুল, আব্বাস ও সালামের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলাগুলোর মধ্যে একটি গত ৩ জানুয়ারি রাজধানীর পরিবাগ মোড়ে রাস্তার ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যাত্রীবাসে আগুন দিলে বাসযাত্রী ফরিদ মিয়া, শাহিনা আক্তার ও বাবুল নামে তিনজন বাসযাত্রী দগ্ধ হয়। পরে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে শাহিনা আক্তার মারা যান। এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় আসামি মির্জা ফখরুল। এ মামলায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ধারাও যুক্ত রয়েছে।
গত বছর ২৪ ডিসেম্বর বাংলা মোটরে ট্রাফিক বক্সের সামনে পুলিশের রিকুইজশন করা বাসে পেট্রল বোমা মেরে কনস্টেবল ফেরদৌস খলিল হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি আবদুস সালাম।
এছাড়া গত বছরের ৩০ নভেম্বর মালিবাগ চৌধুরীপাড়া এসআর অটোমোবাইলের সামনে রাস্তার উপর যাত্রীবাহী বাসে পেট্রল বোমায় দগ্ধ হয়ে হাবিব নামে এক যাত্রী নিহতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলা।
এদিকে খন্দকার মোশারফ তার নিজের ও স্ত্রী বিলকিস আক্তারের যৌথ নামে ৮ লাখ ৪ হাজার ১৪২ ব্রিটিশ পাউন্ড যা বাংলাদেশী টাকায় ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকা যুক্তরাজ্যে পাচারের অভিযোগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি মানিলন্ডারিং আইনে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় এ মামলা করে দুদক। গত ১০ মার্চ মোশারফকে তার বাসভবন থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ফখরুল ও মোশাররফ বর্তমানে কাশিমপুর কারাগারে এবং আব্বাস ও সালাম ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন।