ক্ষমতাসীন দলের সাংসদ শামীম ওসমান আজ শনিবার দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুষ্ঠান ও এক স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় উদ্বোধনের জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ আসেন। তাঁকে স্বাগত জানানোর জন্য আধা ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ওই দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শতাধিক ছাত্র-ছাত্রীকে রাস্তায় রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।
অথচ গত ২৭ জানুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এক পরিপত্রে জনপ্রতিনিধিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এই নির্দেশ না মানলে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানানো হয়।
স্থানীয় সাংসদ শামীম ওসমানের অনুগত হিসেবে পরিচিত সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় শ্রমিক লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মতিন মাস্টার, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের সভাপতি মতিউর রহমান মতি, কাউন্সিলর নূর হোসেন ও আলী হোসেন ওরফে আলা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সকালে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের আদমজী নগর এমডব্লিউ উচ্চবিদ্যালয়ে কম্পিউটার ল্যাব উদ্বোধন ও পরে আদমজী এমডব্লিউ কলেজের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ শামীম ওসমান। তিনি ছিলেন এ দুটি অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। পরে তিনি ৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী হোসেন আলার কার্যালয় উদ্বোধন করেন। বেলা ১১টায় কলেজ ও স্কুলের অনুষ্ঠানের নির্ধারিত সময় ছিল। শামীম ওসমান সকাল সাড়ে ১১টার কিছু সময় পরে গাড়িতে চড়ে আদমজী কদমতলী এলাকায় আসেন। সেখানে আগে থেকেই তৈরি করা হয়েছিল বড় তোরণ। শামীম ওসমান সাড়ে ১১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে আসেন। এর প্রায় আধ ঘণ্টা আগ থেকেই স্কুল ও কলেজের শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী কদমতলী রাস্তার দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাদের অনেকের হাতে ছিল ফুলের পাপড়ি। কারও হাতে ছিল শামীম ওসমানকে স্বাগত জানিয়ে তৈরি করা ফেস্টুন। উচ্চবিদ্যালয় হলেও এখানে প্রথম শ্রেণী থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।
এদিকে আজ সকাল থেকেই অন্য দিনের তুলনায় এ এলাকায় গরম একটু বেশি ছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে সকাল ১০টার পরে বিকেল অবধি নারায়ণগঞ্জের তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য আদমজী এমডব্লিউ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক একেএম শহীদুল এর মুঠোফোনে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেনি। নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার শাহিদা বেগম জানান, কোনো জনপ্রতিনিধিকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য যদি শিক্ষার্থীদের দাঁড় করিয়ে রাখা হয় তাহলে সেটা অন্যায়। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা স্কুল ক্যাম্পাসের ভেতরে থাকতে পারে। তবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানানো যাবে।
এ ব্যাপারে সাংসদ শামীম ওসমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।