সমসাময়িক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে প্রযুক্তি। অপরিহার্য এই প্রযুক্তি আমরা যখন অযথা ব্যবহার করি, তখনই শুরু হয় বিপত্তি। প্রযুক্তি পণ্য তেমনই এক বিপত্তি ডেকে এনেছে শিশুদের জীবনে।
তারা এখন পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিবর্তে প্রযুক্তি পণ্য নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকছে। যুক্তরাজ্যের আর্থিক প্রতিষ্ঠান হ্যালিফেক্সের জরিপে উঠে এসেছে এমন তথ্য।
হ্যালিফেক্স ইনস্যুরেন্স ডিজিটাল হোম ইনডেক্স শীর্ষক এক বার্ষিক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাত বছর বয়সের মধ্যেই শিশুরা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছে। ফলে পরিবারের সঙ্গে তাদের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। জরিপ অনুযায়ী সাত-আট বছর বয়সী শিশুদের এক-তৃতীয়াংশ, ৯-১০ বছর বয়সী শিশুদের দুই-তৃতীয়াংশ এবং ১২-১৪ বছর বয়সী শিশুদের প্রতি ১০ জনের প্রায় ৯ জনই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী শিশুদের এক-তৃতীয়াংশই ঘণ্টায় কয়েকবার মোবাইলে তাদের খুদে বার্তা এসেছে কি না, তা দেখে। দুই-তৃতীয়াংশ শিশু বিছানায় শুয়েও মোবাইল ফোন, ট্যাবলেট বা অন্য কোনো প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতে ৬০ শতাংশ মা-বাবা পরিবার বা বন্ধুর পরিবর্তে প্রযুক্তি পণ্যের পেছনে শিশুদের বেশি সময় ব্যয় করা নিয়ে উদ্বেগের কথা স্বীকার করেছেন। শিশুদের এই প্রবণতা পারিবারিক যোগাযোগের ধরনেও পরিবর্তন ঘটাচ্ছে। জরিপে দেখা গেছে, এক-তৃতীয়াংশের বেশি শিশু এক ছাদের নিচে থেকেও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলছে। মা-বাবা ও শিশুদের তিন ভাগের এক ভাগই স্বীকার করেছে যে তারা সবাই রাতে খাবার টেবিলে বসেও কোনো একটা প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
৩০ শতাংশ শিশু অবশ্য প্রযুক্তি পণ্য বেশি ব্যবহারের প্রবণতার জন্য মা-বাবাকেই দায়ী করেছে। দেখা গেছে, মা-বাবারা প্রতিদিন গড়ে তিন ঘণ্টা টেলিভিশন দেখেন। জরিপ অনুযায়ী ৬৮ শতাংশ মা-বাবা শিশুদের সঙ্গে থাকা অবস্থায়ও কোনো একটি প্রযুক্তি পণ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। মা-বাবার এসব আচরণ শিশুদের সামনে নেতিবাচক উদাহরণ হিসেবে দাঁড়াচ্ছে। সূত্র : আইএএনএস।