বাল্যবিবাহ, বৈবাহিক ধর্ষণ বৈধ করার ভাবনা ইরাকে

0
99
Print Friendly, PDF & Email

মেয়েদের গণ্ডি বেঁধে দিতে বাল্যবিবাহ ও বৈবাহিক ধর্ষণকেও বৈধ করার কথা ভাবছে ইরাকের পার্লামেন্ট। বিল পেশ হয়ে গিয়েছে। শুধু পাশ হওয়াটুকুই বাকি। এত দিন যে সব অত্যাচার ঘরের চার দেওয়ালে বন্দি ছিল, ‘জাফারি আইন’ নাম দিয়ে তাকেই বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাবে ক্ষুব্ধ মানবাধিকার কর্মীরা।

খসড়া প্রস্তাবে বাল্যবিবাহকে সরাসরি আইন করার কথা বলা হয়নি। জানানো হয়েছে, নতুন আইনে ৯ বছর বয়স হওয়ার পর মেয়েরা বিবাহবিচ্ছেদ করতে পারে। অর্থাৎ তারও আগে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া যে আইনসঙ্গত, পরোক্ষে তা স্পষ্ট। আইনে বলা হয়েছে বর চাইলেই শারীরিক মিলনে সায় দিতে বাধ্য স্ত্রী। জোর করে সম্পর্ক স্থাপন করাকে কখনওই আইনের চোখে ধর্ষণ হিসেবে ধরা হবে না।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, মেয়েদের অধিকার খর্ব করতে যা যা করা সম্ভব, তারই ফতোয়া জারি হবে এই বিলে। পার্লামেন্টের প্রতিনিধিরা অবশ্য সে কথা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি, দৈনন্দিন জীবনে মানুষ যে সব প্রথা মেনে চলে, সেগুলোকেই আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। যেমন, বহুবিবাহ করেছেন এমন ব্যক্তিকে প্রত্যেক স্ত্রী-র সঙ্গে কত রাত কাটাতে হবে, তা বলে দেওয়া হবে নয়া আইনে।

মানবাধিকার কর্মী হানা এডওয়ারের কথায়, “এ সব আসলে যৌন আনন্দ উপভোগ করতে মেয়েদের যন্ত্র বানিয়ে ফেলার কৌশল।” সমালোচকদের কথায় ঢাল হয়ে দাঁড়াচ্ছেন বিলের সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, সমাজের উন্নয়নেই এই ব্যবস্থা। স্বামী-স্ত্রীর ঝামেলায় স্থানীয় নেতারাই নাক গলান। তা এড়াতেই নতুন আইনে পুরনো প্রথাগুলোর আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে।
ইরাকে সামনেই ভোট। অনেকের মতে, এখন এই বিতর্কিত বিল পাশ করানো হবে না। কিন্তু কিছু সরকারি কর্তার বক্তব্য, রাজনৈতিক দলগুলির গরিষ্ঠ ভাগই এই বিল সমর্থন করছে। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নুরি-আল-মালিকি শরিকদের চটাবেন না। বাগদাদের রাস্তাতেও সেই চিহ্ন। পড়েছে বড় বড় পোস্টার। তাতে বোরখার আড়ালে মেয়ের মুখ। লেখা “জাফারি আইন, আমার অহঙ্কার, আমার গর্ব।”

শেয়ার করুন