ঘরের মাঠে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে জিতলেওে একই গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দল হংকংয়ের কাছে নিজেদের শেষ ম্যাচে লজ্জায় ডুবিয়েছে মুশফিকরা। সুধু তাই নয়, দুর্বল এ দলটির সঙ্গে আরও বড় ব্যবধানে হারের সংঙ্কায় পরে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ড থেকেও সিটকে পরার উপক্রম হয় মুশফিকদের। শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসান টানা তিন উইকেট তুলে নিয়ে বাংলাদেশের সম্মান রক্ষা করেন।
তবে এরপরও হার এড়াতে পাররেনি টাইগাররা। ২ বল বাকি থাকতেই উল্টো ২ উইকেটে হংকংয়ের কাছে লজ্জায় হেরেছে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে জিতে হংকংয়ের প্রয়োজন ছিলো ৫ রান। প্রথম তিন বলে সিংগ্যাল রান নিলেও চতুর্থ বলে বিশাল ছক্কায় বাংলাদেশকে হারায় তারা।
বাংলাদেশের বিপক্ষে ১০৯ রানের সহজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হংকংয়ের ওপেনার ইরফান আহম্মেদের ব্যাটিংয়ের ঝড় তোলেন। তবে সেই ঝড় বেশিক্ষণ স্থির হতে দেননি সাবেক বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। হংকংয়ের প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে সাকিব সাজঘরে পাঠিয়ে বাংলাদেশ শিবিরে স্বস্তি আনে।
দলীয় ১০ রানের মাথায় সাকিব আল হাসানের বলে মুশফিক ওপেসার ওয়াকাস (০) রান করে এলবিডাব্লিউ ফাঁদে ফেলেন। দ্বিতীয় উইকেটে ইরফান আহম্মেদের অধিনায়ক আতকিনসনকে জুটি গড়ে আক্রমাত্মক হয়ে উঠেন। কিন্তু সে জুটিতে ফাঁটল ধরান সাকিব। ইরফান আহম্মেদ (৩৪) ও (অধিনায়ক) জে জে আতকিনসনকে (৭ ) রানে সাজঘরে পাঠিয়ে দেন সাকিব আল হাসান। দলীয় ৮ ওভারে ৪৭ রানে তিন উইকেটে হারায় হংকং।
এরপর স্পিনার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মার্ক চ্যাপম্যানকে ৫ রানে সরাসরি বোল্ড করেন। দলীয় ৫০ রানের মাথায় পেসার আল আমিনে বাবর হায়াত মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরলে মুশফিকরে মুখের হাঁসি ফিরে আসে। কারণ ততক্ষনে বাংলাদেশের বিপদ দুর হয়েছে। অর্থাত ১৩.১ ওভারে হারের হাত থেকে বেঁচেছে টাইগাররা। এরপর মুনির ধর ২৭ বলে ৩৬ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে জয়ের দাঁড়প্রান্তে নিয়ে যায়। শেষ দুই উইকেটে ও ২ বল হাতে থাকতেই ১১৪ রান সংগ্রহ কলে হংকং।
তিন ম্যাচ খেলে এটি তাদের প্রথম জয়। সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ৯ রানে তিন উইকেটে ও রিয়াদ ৪ ওভারে ১৩ রানে দুটি উইকেট নেন।
এর আগে নিজেদের শেষ ম্যাচে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে হংকংয়ের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে দারুণ হতাশ করেছে মুশফিকবাহিনী। ‘এ’ গ্রুপের সবচেয়ে দুর্বল দলের বিপক্ষে ব্যাট করতে নেমে ১৬.৩ ওভারে মাত্র ১০৮ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিকরা।
গ্রুপের শেষ খেলায় হংকংয়ের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই সাজঘরে ফিরেন ওপেনার তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। জন্মদিনে নিজের মাঠে দর্শকদের হতাশ করেন তামিম। ওভারের দ্বিতীয় বলেই শূন্য রানে হংকং পেসার তানভীরের বলে সরাসরি বোল্ড হন তিনি।
এছাড়া সাব্বির রহমান প্রথম ওভারের শেষ বলে ২ রান করে তানভীরের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন। তখন দুই উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ মাত্র ৩ রান।
এরপর ওপেনার আনামুল হক বিজয় ও সাকিব আল হাসান কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন। এরপর দলীয় ৫১ রানের মাথায় আনামুল ১৭ বলে ২৬ রান করে নাদিম আহম্মেদের বলে বোল্ড হন। এরপর থেকেই নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে মুশফিকরা। সাকিব ২৭ ও মুশফিক ২৩ রান করে আউট হয়ে মাঠ ছাড়েন। তবে আর কেউ উইকেটে দাঁড়াতে পারেনি।
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ২ রান করে নাদিমের বলে বোল্ড হন। এরপর ফরহাদ রেজা (০) ও আব্দুর রাজ্জাককে (০) পরপর দুই বলে আউট করে হ্যাট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলেন নিজাকাত খান। এরপর রুবেল হোসেন (০) রানে ও আল আমিন ১ রান করে নাদিমের বলে আউট হন।
নাদিম আহম্মেদ ৩.৩ ওভারে ২১ রান খরচ করে ৪টি এবং নিজাকাত খান ৪ ওভারে ১৯ রানে ৩ উইকেট শিকার করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জহুর আহম্মেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টসে জিতে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় হংকং জে জে আতকিনসন (অধিনায়ক)।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক), সাব্বির রহমান, নাসির হোসেন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, ফরহাদ রেজা, আল আমিন হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক ও রুবেল হোসেন।
হংকং দল: ওয়াকাস বরকত, ইরফান আহমেদ, জে জে আতকিনসন (অধিনায়ক), মার্ক চ্যাপম্যান, বাবর হায়াত, নিজাকাত খান, মুনির ধর, তানভীর আফজল, হাসিব আমজাদ, নাদিম আহমেদ, এহসান নওয়াজ।