সংবিধান-মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন করছে সরকার : জামায়াত

0
101
Print Friendly, PDF & Email

দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নৈরাজ্য সৃষ্টি এবং ৪র্থ পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের হুমকী, ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন ও নির্বাচনের পূর্বেই সরকার দলীয় সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষণার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে দলটির ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা: শফিকুর রহমান এ নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ৪র্থ পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনের প্রাক্কালে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী
ক্যাডাররা অব্যাহতভাবে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। কোনো কোনো উপজেলায় সরকারী দলের সমর্থিত
প্রার্থীগণ ভোটারদেরকে প্রকাশ্যে হুমকী দিচ্ছেন। কোনো কোনো উপজেলায় ভোটের পূর্বেই
প্রার্থীগণ নিজেদেরকে বিজয়ী ঘোষণা করছেন। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলায় আওয়ামী সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নিজে ও আওয়ামী দলীয় ক্যাডাররা ভোটারদেরকে প্রকাশ্যে হুমকী এমনকি পিটিয়ে মারাসহ আঙ্গুল কেটে ফেলারও ঘোষণা দিয়েছেন। ভোটের দিন কেন্দ্র দখল করে ব্যালট পেপারে সিল মারার নির্দেশ দিয়েছেন। সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জামায়াত ও ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত প্রার্থীদের এলাকায় ব্যাপক ধরপাকড় চালাচ্ছে। ২০ মার্চ চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে জামায়াতের ২ জন এবং চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ৪ জনসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করছে রাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। যশোর সদর উপজেলার আওয়ামী সমর্থিত প্রার্থী ভোটের পূর্বেই নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করে বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের গেজেটও হয়ে গেছে। ২৩ তারিখ সন্ধ্যার পর তা ঘোষণা করা হবে মাত্র।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগের সন্ত্রাস ও প্রকাশ্যভাবে নির্বাচন আচরণবিধি লংঘন করা সত্বেও নির্বাচন কমিশন কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি। নির্বাচন কমিশনের এই ভূমিকায়
প্রতীয়মান হচ্ছে, ৪র্থ পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচনে ভোট গ্রহণের নামে আরেকটি প্রহসনের নির্বাচনের ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা নির্বাচন কমিশনকে দলীয় প্রভাবের ঊর্ধ্বে উঠে নিরপেক্ষভাবে সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনের এবং সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণকে সতর্ক ও সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, একদিকে সরকার জনগণের ন্যায্য ভোটাধিকার কেড়ে নিচ্ছে, অপরদিকে সংবিধান ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন করছে। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও বগুড়া জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন আদালত থেকে জামিন প্রাপ্ত হয়ে কারাগার থেকে মুক্তি লাভের পূর্ব মুহূর্তে সরকার পুনরায় তাকে কারাগারের গেট থেকে গ্রেফতার করে মিথ্যা মামলা দিয়ে পুনরায় কারাগারে পাঠিয়েছে। আদালতের নির্দেশে জামিন পাওয়ার পর কারাগারের গেট থেকে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে অন্যায়ভাবে আটক রাখা এ সরকারের রুটিন ওয়ার্কে পরিণত হয়েছে। সরকারের এ ভূমিকা সংবিধান ও মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন এবং আদালতের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন। আমরা সরকারের এ ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সরকারী দলের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য বন্ধ এবং আটক সকল নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেয়ার দাবী করছি এবং ৪র্থ পর্যায়ের উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন করার জন্য নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

শেয়ার করুন