নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার চাঁদখানা সরঞ্জাবাড়ী গ্রামের এক সংখ্যালঘু হিন্দুর ৭৫ শতাংশ জমি জাল দলিল করে নিজের নামে নিয়েছেন জাতীয় পার্টির হুইপ ও নীলফামারী-৪ আসনের (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরী।
অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এমপি শওকত।
শওকত চৌধুরী বলেন, জমিটি অন্যের মাধ্যমে কেনা হয়েছে এবং জমি নিবন্ধনের সময় আমি নিজে উপস্থিত না থাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।
জানা গেছে, এমপি শওকত চৌধুরী কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলী ইউনিয়নে বিভিন্ন কৃষকের কাছ থেকে ২ একর ৩০ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। এরমধ্যে সরঞ্জাবাড়ী গ্রামের কার্তিক চন্দ্রের পুত্র স্বপন কুমারের (২০) পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৭৫ শতাংশ জমি রয়েছে। স্বপনের এই জমিটি তার অজান্তে ২০১৩ সালের ৮ জুলাই এমপির নামে সাব কবলা করা হয়। যার দলিল নম্বর ৩৯২৪, দাগ নম্বর ১৬০৫, খতিয়ান নম্বর ৯৭/৯৯, খারিজ কেস নম্বর ৯৯ ও মৌজা সরঞ্জাবাড়ী।
জমির মালিক স্বপন জানেন না তার জমিটি বিক্রি হয়ে গেছে। স্বপন কুমার জানান, বাবার মৃত্যুর পর ভাই, বোন ও মাকে নিয়ে অতি কষ্টে ধার দেনা করে জীবন-যাপন করে আসছি। পাওনাদারের টাকার চাপে জমির কিছু অংশ বিক্রি করার জন্য প্রতিবেশী চন্দনের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা বায়না গ্রহণ করেছি। সম্প্রতি জমি গ্রহীতাকে জমি কবলা দলিল করে দেয়ার জন্য সাব-রেজিস্টার অফিসে গেলে জানতে পারি ওই দাগের সম্পূর্ণ জমি ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে গেছে। যার গ্রহীতা হচ্ছেন সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরী।
এ ঘটনায় স্বপন কুমার দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন লোকজনের কাছে জমি উদ্ধারের জন্য ধরনা দিচ্ছে। জাল কবলা দলিলটিতে বিক্রেতা হিসেবে মধ্য বয়স্ক এক অপরিচিত লোকের ছবি রয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে এমপি শওকত চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি সরাসরি কোনো কৃষকের কাছে থেকে জমি কিনতে যাইনি। তবে ওই এলাকার দুলাল নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে জমিগুলো ক্রয় করেছি। সে হয়তো আমার টাকা আত্মসাৎ করে এ জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়েছে। আর জমি রেজিস্ট্রির সময়ও আমি উপস্থিত ছিলাম না।
তিনি আরো বলেন, জমি কিনলেও এখনও জমির দখল নিতে যাইনি।
ওই জমির দলিল লেখক শাহিনুর রহমান শাহীন জানান, দলিলটি আমার হাতে লেখা হলেও প্রতারণার বিষয়টি আমার জানা ছিল না।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের সাব-রেজিস্টার সাদেকুর রহমান জাল দলিলের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি জেনে জমির প্রকৃত মালিককে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছি।