শেখ হাসিনার বক্তব্যের একদিন পর বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন,“বাকশালের একদলীয় মোহ থেকে প্রধানমন্ত্রী এখনো বেরিয়ে আসতে পারেননি।
“সেজন্য বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তার বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা মেটাতে কুৎসা ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের ধারাবর্ষণ করে যাচ্ছেন তিনি।”
শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলেন, “অনেকে বলেন,‘জিয়া গণতন্ত্র দিয়েছিল’। ’৭৬ থেকে ’৭৯ পর্যন্ত রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কারফিউ দিয়ে দেশ চালিয়েছে। নামে মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তার অবস্থান ছিল স্বাধীনতার বিরুদ্ধে।”
রিজভী বলেন, “আমরা প্রধানমন্ত্রীর এহেন মিথ্যাচারের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, মিথ্যাচার ও অপ্রচার করে জিয়াউর রহমানের অবিসংবাদিত অসীম সাহসী স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণাকে খাটো করা যাবে না।”
শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ওয়াজেদ মিয়ার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ঘিরে কিছু ঘটনা ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের অংশ বিশেষ তুলে ধরে তিনি বলেন, “ওই বইয়ে তিনি জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণার কথা বলেছেন। ওই সময় জিয়ার জন্য তিনি দোয়া করেছিলেন।”
রিজভী বলেন, “শহীদ জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছিলেন বলেই বাকশালের গুহা থেকে আওয়ামী লীগ নামক দলটি পুনরুজ্জীবিত হতে পেরেছিল।”
প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপি নেতা বলেন,“প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যার বেসাতির আরব্য উপন্যাসের কাহিনী শুনতে শুনতে জাতি ক্লান্ত হয়ে গেছে। জিয়া পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার না করলে তার শান্তির ঘুম হয় না।
“একটি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী যথার্থ ডক্টরেট ডিগ্রি পেতে পারেন, সেটি হলো মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের কৃতিত্বের জন্য।”
৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত বর্তমান সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করে রিজভী বলেন, “বর্তমান হাসিনামার্কা গণতন্ত্র সন্ত্রাসীদের গণতন্ত্র। র্যাব-পুলিশ-বিজিবি দ্বারা সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করার গণতন্ত্র।”
নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে ওই সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান মিনুকে কারাগারে পাঠানোর নিন্দাও জানান তিনি।
নোয়াখালীর সেনাবাগ, কুমিল্লার নাঙ্গলকোট, পিরোজপুর সদর, ঝালকাঠী সদর, ফেনীর পশুরাম ও সাতক্ষীরার বিভিন্ন উপজেলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদও জানান রিজভী।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভীর সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ, মোহাম্মদ শাহজাহান, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক কাজী আসাদুজ্জামান প্রমুখ।