যুক্তরাষ্ট্র থেকে ধরে আনা হয়েছে ফ্রিডম মুরাদকে

0
206
Print Friendly, PDF & Email

দুই যুগ আগে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলার আসামি ও পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী নাজমুল মাকসুদ ওরফে ফ্রিডম মুরাদকে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তারের পর ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সহকারী পুলিশ সুপার মিডিয়া কাজী হুমায়ুন রশিদ বুধবার জানান, বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে যুক্তরাষ্ট্রে পলাতক মুরাদকে আটক করতে ইন্টারপোল রেড নোটিশ জারি করেছিল। এফবিআই ও যুক্তরাষ্ট্র পুলিশের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার করার পর গতকাল তাকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার জন্য ১৯৮৯ সালের ১০ আগস্ট মধ্যরাতে ধানম-ির ৩২ নাম্বার রোডের বঙ্গবন্ধু ভবনে ফ্রিডম পার্টির সদস্য কাজল, নাজমুল মাকসুদ ওরফে মুরাদ ও হুমায়ন কবিরের নেতৃত্বে ১০-১২জন সন্ত্রাসী হামলা করে। তারা একযোগে গুলি ও বোমা হামলা চালিয়ে ‘কর্নেল ফারুক-রশিদ জিন্দাবাদ’ বলে সস্নোগান দেয়। এ ঘটনার পরের দিন বাসার নিরাপত্তা রক্ষী পুলিশ সদস্য জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ধানম-ি থানায় পৃথক দুটি মামলা করেন। এর আট বছর পর ১৯৯৭
সালের ২০ ফেব্রুয়ারি ফ্রিডম পার্টির নেতা ও বঙ্গবন্ধুর খুনি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব). সৈয়দ ফারুক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব). আবদুর রশিদ ও মেজর (অব). বজলুল হুদাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযোগপত্র দেয়ার ১২ বছর পর ২০০৯ সালের ৫ জুলাই ১৬ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার চার আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। তারা হলেন_ গোলাম সরোয়ার, ফ্রিডম সোহেল, মো. জর্জ ও মো. শাহজাহান ওরফে বালু। জামিনে আছে হামলার নেতৃত্বদানকারী হুমায়ুন কবির, মিজানুর রহমান, খন্দকার আমিরুল ইসলাম ওরফে কাজল ও গাজী ইমাম হোসেন। পলাতক হিসেবে দেখানো হয়, লে. কর্নেল (অব). খন্দকার আবদুর রশিদ, মো. হুমায়ুন কবির (২), জাফর আহম্মদ, নাজমুল মাকসুদ ওরফে মুরাদ ও রেজাউলকে। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সৈয়দ ফারুক ও বজলুল হুদার ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
সিআইডির বিশেষ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ জানান, কর্নেল ফারুকের সঙ্গে এই মামলার আসামি মুরাদ। ১৯৯৬ সালের ৩ অক্টোবর মুরাদ যুক্তরাষ্ট্রে পালিয়ে যায় এবং ফ্রিডম পার্টির কর্মী হিসেবে সেখানে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করে। ২০১১ সালে বাংলাদেশের অনুরোধে ইন্টারপোল তার নামে রেড নোটিশ জারি করে। ২০১২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা থেকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস মুরাদকে গ্রেপ্তার করে। এরপর বাংলাদেশের অনুরোধে তাকে ফেরত পাঠানো হয়। মুরাদ একটি হত্যাসহ তিনটি মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। মামলাগুলো বিচারাধীন রয়েছে।
জানা গেছে, ঘটনার ২৪ বছর পার হলেও হত্যা চেষ্টার এই মামলা দুটির বিচার আজো শেষ হয়নি। বর্তমানে মামলাটি ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়ার আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী বিচারক আফজালুর রহমান নিখোঁজ থাকায় বিচার কার্যক্রম আটকে রয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।

শেয়ার করুন