শরীয়তপুরে ফসলী জমিতে মাছের খামার করার হিড়িক

0
130
Print Friendly, PDF & Email

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : বেশী লাভের আশায় ও কাঙ্খিত ফসল উৎপাদন না হওয়ায় শরীয়তপুরে কৃষিজমি নষ্ট করে মাছের খামার তৈরির হিড়িক পড়েছে। এতে বছরে মোট কৃষি জমির পরিমান থেকে ১ভাগ করে কমে যাচ্ছে ফসলী জমি। ফসল উৎপাদনের চেয়ে মাছের খামারে বেশি লাভজনক হওয়ায় কৃষকেরা এদিকে ঝুকে পড়েছেন। এ ক্ষেত্রে জমির পরিমান কমে যাওয়া খাদ্য উৎপাদন ব্যহত হওয়ার আশংকা করছেন কৃষি বিভাগ।

শরীয়তপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর ও কৃষকদের সাথে কথা বলে জানাগেছে। শরীয়তপুর জেলায় ১লাখ ১৮হাজার ২শত ৫৩ হেক্টর জমি রয়েছে। এর মধ্যে আবাদী জমি রয়েছে ৯০ হাজার ৫শত হেক্টর। অনাবাদি জমি রয়েছে ৪হাজার ৯০ হেক্টর। খাল, বিল, পুকুর ডোবা ও জলাভুমি রয়েছে ১১হাজার ২শত ৫০ হেক্টর। ফসলী জমি থেকে জেলায় খাদ্যশষ্যের চাহিদা ছিল এক লাখ ৮৪ হাজার ২শত ৬৮ মেট্রিক টন। এ জেলায় বছরে খাদ্য উৎপাদিত হয় এক লাখ ৬৫ থেকে ৭৫ হাজার মেট্রিক টন। ১লাখ ১৮হাজার ২শত ৫৩ হেক্টর জমি থেকে নতুন নতুন মৎস খামার করায় প্রতি বছরই ফসলী জমি কমে যাচ্ছে।

এভাবে ফসলি জমি কমলে খাদ্য উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি বিভাগ। তবে কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ ধানের সঙ্গে মাছ চাষ করলে আরো বেশী লাভবান হওয়া সম্ভব। শরীয়তপুর জেলায় গত এক বছরে প্রায় ৩৫ হাজার একর ফসলি জমিতে প্রায় ৩শতাধিক মাছের খামার তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে নড়িয়া উপজেলায় সাত হাজার ৫১০ একরে ৯০টি, ডামুড্যায় ৭হাজার ১৭৫ একরে ৫৫টি, সদর উপজেলায় পাঁচ হাজার ৯৪০ একরে ৪০টি, ভেদরগঞ্জে দুই হাজার ৪৭০ একরে ৩০টি, জাজিরায় দুই হাজার ৪৮০ একরে ৩০টি ও গোসাইরহাট উপজেলায় দুই হাজার ৪৭০ একরে ৪৫টি মাছের খামার করা হয়েছে।

কৃষক ও খামারিদের সূত্রে জানা গেছে, খামার ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে একর প্রতি স্থান ভেদে বছরে ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা ভাড়ায় ৮ থেকে ১২ বছর মেয়াদে এসব জমি ভাড়া নিয়ে পুকুর কেটেছেন। এসব জমি নিচু হওয়ায় মাছের খামার করার আগে তাতে বছরে একটি ফসল আবাদ করা যেত। জমিতে বোরো ধান আবাদ করে কৃষকের প্রতি বছরই লোকসান গুনতে হচ্ছে। ফলে কৃষকরা বেশী লাভবান হওয়ায় মাছ চাষের জন্য জমি লিজ দিয়ে দিচ্ছে।
নড়িয়া উপজেলার জপসা এলাকার কৃষক নওয়াবালী মিয় বলেন, আমাদের এলাকা নিচু হওয়ায় শুধু বোড় ধান ছাড়া অন্য কোন ফসল হয়না। এ জন্য আমরা মাছ চাষের জন্য জমি লিজ দিয়েছি। এতে আমরা ফসলের চেয়ে বেশী লাভবান হতে পারি।

শেয়ার করুন