উপজেলা নির্বাচন শেষে ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি

0
120
Print Friendly, PDF & Email

ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়ে বর্তমান ও আগামী দিনে নেতৃত্ব দিতে পারেন এমনদের মাঝে প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্ব ও কোন্দল চলছে। হচ্ছে নানা পরিকল্পনা। প্রত্যেকই নিজের পক্ষে সাফাই গেয়ে যাচ্ছেন। যেহেতু মহানগর কমিটি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া নিজেই কাজ করে যাচ্ছেন। তাই এখন নয়, ৩১ মার্চ উপজেলা নির্বাচন শেষ হলে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। দলীয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

যদিও গত ৯ মার্চ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করে খালেদা জিয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খুব দ্রুত মহানগর কমিটি দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দফতর সূত্রে জানা গেছে, আগামী দিনে সরকার পতনের আন্দোলন ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি আদায়ের জন্য আন্দোলন উপযোগী করে তুলতে ঢাকা মহানগর কমিটি গঠন করতে দুইটি উপায় ভাবা হচ্ছে।

প্রথমত, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর বিএনপির বর্তমান আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকাকে স্বপদে বহাল রেখে নতুন সদস্য সচিব নির্বাচিত করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা। যাদের কাজ হবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকা মহানগরের প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা।

দ্বিতীয়ত ঢাকা মহানগর কমিটিকে আন্দোলনের সুবিধার্থে দুই ভাগে ভাগ করতে হবে। যার একটির দায়িত্ব থাকবেন সাদেক হোসেন খোকা অন্যটির দায়িত্বে থাকবেন জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হাবিব উন-নবী খান সোহেল।

তবে এ বিষয়টিকে ‘স্পর্শকাতর’ আখ্যা দিয়ে দায়িত্বশীল অধিকাংশ নেতাই বলেন, মহানগর কমিটি নিয়ে স্বয়ং দলীয় প্রধান সিদ্ধান্ত নেবেন।

সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি যদি দুই ভাগে করা হয় তাহলে সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বে থাকবেন না। তাই সাদেক হোসেন খোকাকে সভাপতি রেখে হাবিব উন-নবী সোহেলকে সদস্য সচিব করে নতুন কমিটি গঠন করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

অতি সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ ঢাকা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক হিসেবে নাম চূড়ান্ত থাকলেও এখন শোনা যাচ্ছে সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বে কমিটি হতে পারে। নইলে মহানগরকে দুই ভাগে ভাগ করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।

মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠকে আলোচনা হওয়ার পর কোনো অগ্রগতি হয়েছে কি না জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান শীর্ষ নিউজকে বলেন, যেহেতু দীর্ঘ দিন ধরে মহানগর বিএনপির কোনো পূর্ণাঙ্গ কমিটি নেই। তাই উপজেলা নির্বাচন নয়, যেকোনো সময় মহানগর কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে। আর সে কমিটির নেতৃত্বে আসতে পারে একেবারেই নতুন মুখ অথবা পুরনো নতুনের সমন্বয়েও গঠিত হতে পারে কমিটি।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু শীর্ষ নিউজকে বলেন, বিএনপি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ না নিলেও উপজেলা নির্বাচনে দল ও জোট সমর্থিত প্রার্থীরা তৃণমূল থেকে মনোনীত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তাছাড়া বিগত দিনের আন্দোলন সংগ্রামে কেন্দ্রীয় নেতাদের চেয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অবদান অনেক। আর এখন দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে কাজ করা হচ্ছে । যার সার্বিক দায়িত্বে রয়েছেন দলে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তাই আমার ধারণা তৃণমূলের কথা বিবেচনায় রেখে উপজেলা নির্বাচন শেষ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা মহানগর বিএনপির কমিটি করা হচ্ছে না।

এদিকে ১২ মার্চ সাদেক হোসেন খোকা এক সংবাদ সম্মেলনে নগরীর আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি চাওয়ার পর কমিটি গঠন নিয়ে নাটকীয়তা সৃষ্টি হয়। এরপর তার বক্তব্য নিয়ে দলে বিরাজ করছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

মহানগর বিএনপির নতুন কমিটি গঠন প্রসঙ্গে বিএনপির একজন প্রভাবশালী নেতা শীর্ষ নিউজকে বলেন, কমিটিতে কাকে রাখা হবে আর কাকে রাখা হবে না। এ ব্যাপারে একমাত্র দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সিদ্ধান্ত নেবেন। তাই গ্রুপিং ও লবিং নামে শত চেষ্টার কাজ করেও লাভ নেই। যিনি নেতৃত্ব নিতে যোগ্য তাকেই নির্ধারণ করা হবে।

উল্লেখ্য, গত ৬ ফেব্রুয়ারি স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দলকে আন্দোলনের উপযোগী করতে ঢাকা মহানগর বিএনপিসহ সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন খালেদা জিয়া।

বর্তমান কমিটি ব্যর্থ মন্তব্য করে বেগম জিয়া বলেন, দ্রুত তিনি কমিটি গঠন করবেন। যদিও এর আগেই ঘনিষ্ঠ কয়েকজন নেতার সঙ্গে বৈঠক করে স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহকে আহ্বায়ক করে ২১ সদস্যের একটি ‘হাই প্রোফাইল’ কমিটি চূড়ান্ত করে রাখেন। আর ওই কমিটিতে সাদেক হোসেন খোকা এবং আবদুস সালাম কাউকেই রাখা হয়নি।

শেয়ার করুন