মীর কাশেমের বিরুদ্ধে ১৬তম সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন

0
83
Print Friendly, PDF & Email

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আটক জামায়াতের নির্বাহী সদস্য ও দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে জবানবন্দি দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের ১৬তম সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা ও চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (৬৬)।

মঙ্গলবার বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর জবানবন্দি নেন জেয়াদ আল-মুলুম। এ সময় আসামির কাঠগড়ায় মীর কাশেম আলী হাজির ছিলেন।

জবানবন্দি গ্রহণ শেষে সাক্ষীকে জেরা করেন মীর কাশেম আলীর আইনজীবী এডভোকেট মিজানুল ইসলাম।

জেরা শেষে মামলার কার্যক্রম আগামীকাল পর্যন্ত মুলতবি করেছেন ট্রাইব্যুনাল।

জবানবন্দি সাক্ষী জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘১৯৭১ সালে রোজার ঈদের আনুমানিক দুইদিন পর আল-বদর বাহিনী আমাকে বাড়ি থেকে আটক করে হাত-পা বেঁধে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লাস্থ ডালিম হোটেলে বদর বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমার ঘাড়ে ২/৩টা লাথি মারে এবং বলে ‘শালা বহুত মজবুত হ্যায়’। পরে আমাকে হোটেলের নিচ তলার একটি কক্ষে ঢোকায়, সেখানে আগে থেকে অনেক লোককে ধরে আনা হয়েছিল এবং আমার আপন ছোট ভাই দস্তগীর চৌধুরী ও প্রতিবেশী মফিজও ছিল।

সাক্ষী আরও বলেন, হোটেলে পৌছানোর ২/৩ ঘন্টা পর আমাকে দ্বিতীয় তলায় নেয়া হয়। সেখানে আমার ভাই ছিল না। কিছুক্ষণ দ্বিতীয় তলায় রাখার পরে আবার তৃতীয় তলায় নিয়ে যায়। আনুমানিক সন্ধ্যার পর চট্টগ্রামের এডভোকেট শফিউল আলমকে, আল-বদর সদস্য নুরুল আফসার ও কাশেম সাহেব (বর্তমান) মীর কাশেম আলী আমাদের রুমে এনে ফেলে দিয়ে বাইরে থেকে তালা দিয়ে করে চলে যায়। এডভোকেট শফিউল আলমকে যখন ফেলে রেখে চলে যায়, তখন তার মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল ও মেঝেতে পড়েছিল।

জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, পরের দিন দুপুরের দিকে সন্দ্বীপের বাসিন্দা আনুমানিক ১৪/১৫ বছরের ছেলে জসীমকে আলবদর বাহিনীর নুরুল আফসার, মীর কাশেম আলী এবং জালাল আমাদের কক্ষে ফেলে দিয়ে চলে যায়। তখন শফিউল সাহেব তাকে দেখে বলেন ওতো মরে গেছে। পরে ভাত সরবরাহকারী যাকে আমরা ‘ভাতওয়ালা স্বপন’ বলে ডাকতাম সে জসীমকে দেখে আমাদের জানানো যে, এর আগে আরও অনেক লোককে এভাবে মেরে কর্ণফুলী নদীতে ফেলে দিয়েছে এরা।

গত বছরের ১১ ডিসেম্বর থেকে মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে ১৪টি অভিযোগ গঠন করা হয়।

শেয়ার করুন