বিএনপির সাবেরুল হক সাবু বলেছেন, চলমান উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল শক্তি প্রয়োগ করে চর দখলের মত ভোট কেন্দ্র দখল করেছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এর একজন সংসদ সদস্য বলেছেন কারচুপির কথা বলেই বিএনপি আন্দোলনে অজুহাত দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলা যশোরে অনুষ্ঠিত সংলাপের এই পর্বে তি¯ত্মা নদীর পানি, হিন্দুদের নিরাপত্তা এবং বাংলাদেশের অনুষ্ঠানে বিদেশী সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দেবার বিষয়গুলো আলোচনায় উঠে আসে।
বাংলাদেশে উপজেলা নির্বাচনের ৩য় পর্যায়ে ৮১ টি উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ সংলাপে একজন দর্শক প্যানেল আলোচকদের কাছে জানতে চান উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের পক্ষে নেয়ার জন্য সরকার মরিয়া হয়ে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে সে ব্যাপারে তাদের বক্তব্য কি ?
জবাবে প্যানেল আলোচক যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, উপজেলা নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা চর দখলের মত কেন্দ্র দখল করেছে। এখানে দুর্বৃত্তায়নের , শক্তি প্রয়োগের ক্ষমতা চলছে। যারা দুবৃত্ত এবং সন্ত্রাস তাদেরকে সংগঠিত করে, নির্বাচনে জনগণের মতামতকে প্রতিফলিন করতে দেয়া হচ্ছে না। নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আরও বেশি জেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা জয়ী হত।
তাহলে বিএনপি নির্বাচনে ভালো ফল কিভাবে করছে বা কারচুপি হলে দলটি কেনই বা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এ প্রশ্নের জবাবে সাবু বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন করা উচিত। এটি স্থানীয় সরকার পরিবর্তনের জন্য নয়, এলাকায় স্থানীয় প্রতিনিধিত্ব করার জন্য।
নির্বাচনে প্রভাব বি¯ত্মারের অভিযোগ প্রত্যাখান করে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আব্দুল হাই বলেন, আমরা যদি কারচুপি করতাম তাহলে ভোটের ৯৫ ভাগই কারচুপি করতাম। যার যেখানে সমর্থক থাকবে সেখানে তার প্রতিনিধিত্ব থাকবে এটাই স্বাভাবিক। নির্বাচনে কারচুপির কথা বলে বিএনপি আসলে আন্দোলনের একটি অজুহাত তৈরির চেষ্টা করছে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সাবেক সভাপতি এম আর খায়রুল ওমাম বলেন, নির্বাচনে জনমতের প্রতিফলন ঘটছে। তবে নির্বাচনের সবগুলো পর্বের ফল একসাথে ঘোষণা করলে সন্ত্রাস কম হত।
অপর আলোচক যশোর ভিত্তিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা জয়তি সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস বলেন, উপজেলা ইউনিয়ন পরিষদ এ পর্যšত্ম রাজনৈতিক দলের উর্ধ্বে ছিল। বর্তমানে একটা রাজনীতিকরণ করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে জনগণই প্রধান মতামতটি দিতে পারছে বলে আমার মনে হয়। তবে সরকার নির্বাচনের ফল অনুকূলে নেয়ার চেষ্টা করলেও সে অনুযায়ী ফল পাচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে দর্শকরাও নানা ধরনের মšত্মব্য করেন। তারা বলেন, কারচুপি, কারচুপি আর কারচুপি। নির্বাচনে যদি কারচুপি হয়েই থাকে তাহলে তারা জাতীয় নির্বাচন থেকে ফিরে আসছে না কেন?
নির্বাচনটা সরকার আসলে জনগণের চোখ পরিষ্কারের জন্য ব্যবস্থা করেছে। তারা চায় না যে গণতান্ত্রিকভাবে অন্যান্য রাজনৈতিক দল এগিয়ে আসুক এটা তারা চায় না।
ভোটার যে ব্যালটে ভোট দেবেন ঐ ব্যালটে প্রত্যেক পোলিং এজেন্ট কাউন্টার স্বাক্ষর করবেন। তাহলে আর ভোট দখলের প্রক্রিয়া চলবে না।
আরেকজন দর্শক জানতে চান বাংলাদেশ হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না কেন? ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে যশোরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনার প্রেক্ষিতে এই বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। আলোচনায় অংশ নিয়ে আব্দুল হাই এসব ঘটনার জন্য পরোক্ষভাবে বিএনপিকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, হিন্দুদের উপর আক্রমণগুলোর বিচার হওয়া জরুরি।
তবে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে মি. সাবু বলেন, রাজনৈতিক কারণে বিএনপি কথা বলা হলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পক্ষই এসব ঘটনার সাথে জড়িত। বিবিসি