শরীরের বেশির ভাগ অংশই পুড়ে গেছে। ঝলসানো শরীর নিয়ে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিছানায় অসহ্য যন্ত্রণায় ছটফট করছেন লতিফুন বেগম। এ দৃশ্য মঙ্গলবার দুপুরের। ওই রাতেই তিনি চলে গেছেন না ফেরার দেশে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার নিজকর্নিবাড়ী গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে লতিফুন তিন মাস আগে পছন্দ করে গাবতলী উপজেলার বাইগুনি গ্রামের ইয়াছিন মণ্ডলের ছেলে হায়দার আলীকে বিয়ে করেন। হায়দার বগুড়া শহরের একটি দোকানের কর্মচারী। স্ত্রীকে নিয়ে উঠেছিলেন শহরের একটি ভাড়া বাসায়।
পুলিশ ও লতিফুনের ভাই হেলালউদ্দিন প্রামাণিক বলেন, প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে লতিফুনকে বিয়ে করেছিলেন হায়দার। কিছুদিন আগে বিষয়টি জেনে যান লতিফুন। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ শুরু হয়। বিয়ের সময় হায়দারকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দেওয়া হয়েছিল। এর পরও তিনি স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়ি থেকে আরও ২০ হাজার টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি এ টাকা নিতে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে আসেন হায়দার। রাতে খাওয়া-দাওয়া করে এক ঘরে শুয়ে পড়েন তাঁরা। মধ্যরাতে লতিফুনের শরীরে কেরোসিন জাতীয় পদার্থ ছিটিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যান হায়দার।
দগ্ধ লতিফুনকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পাঁচ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁর মৃত্যু হয়।
সারিয়াকান্দি থানার উপপরিদর্শক সেকেন্দার আলী বলেন, হায়দারের বিরুদ্ধে নারী পাচারের অভিযোগও রয়েছে। ইতিমধ্যে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে।