এটি বাস্তব প্রেমকাহিনী নয়। এদের তাই প্রেমিক-প্রেমিকা বলার সুযোগ নেই। সাদামাটা ভাষায়, এটি হত্যা মামলার প্রধান আসামি ধরতে এক নারী পুলিশ সদস্যের মেকি প্রেমের সফল ফাঁদ।
সুজন নামে হত্যা মামলার পলাতক এক আসামি ধরতে মোবাইল ফোনে প্রেমের ফাঁদ পাতেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া থানার এক নারী পুলিশ সদস্য। মিথ্যা প্রেমিকা সেজে আসামি সুজনের অবস্থান নিশ্চিত করার জন্যই এই ফাঁদ পাতা। সফলও হন ওই নারী পুলিশ। আসামি সুজন বুঝতেই পারেনি, তার মোবাইল ফোনের প্রেমিকাটি একজন নারী পুলিশ।
সুজন গ্রেফতারের পর ওই নারী পুলিশ সদস্য বাহবা কুড়াচ্ছেন। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২৮ আগস্ট রাতে জুয়া খেলা কেন্দ্র করে দুর্বৃত্তদের হাতে নির্মমভাবে খুন হন উপজেলার ভরাপাড়া গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে হারুন রশিদ। দুর্বৃত্তরা তাকে খুন করে তার লাশ একই গ্রামের আবদুল কাদিরের বাড়ির পুকুরে ফেলে রাখে। এ ঘটনায় নিহত হারুনের বাবা দুলাল মিয়া বাদী হয়ে একই গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে সুজনকে প্রধান আসামি করে ছয় জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে কেন্দুয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
চার মাস আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন্দুয়া থানার এসআই মেরাজুল ইসলাম নরসিংদী সদর থানা এলাকা থেকে সাদ্দাম ও বাদল নামের দুই আসামি গ্রেফতার করেন। তারা আদালতে হারুন হত্যার সঙ্গে সুজনসহ তাদের জড়িত থাকার কথা অকপটে স্বীকার করেন। তদন্ত কর্মকর্তা মেরাজুল ইসলাম তাকে গ্রেফতার করতে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হন। কৌশল ও সোর্স নিয়োগ করেন অনেক। কিন্তু কোনো কৌশলই যখন কাজে আসছিল না, তখন তিনি আসামি সুজনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে দেন একই থানায় কর্মরত এক নারী পুলিশের হাতে। গত ২০ দিন ধরে ওই নারী পুলিশ তার মোবাইল ফোনে আসামি সুজনের সঙ্গে প্রেম নিবেদন শুরু করেন। তিনি সুজনের অবস্থানের কথা নিশ্চিত হন। অবশেষে গত রবিবার কিশোরগঞ্জ সদর থানা এলাকা থেকে আসামি সুজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা মেরাজুল ইসলাম বলেন, নারী পুলিশকে দিয়ে মোবাইল ফোনে প্রেমের অভিনয় করানোও একটি কৌশল।