কারাগারের খাবার খেলেন সুব্রত, মেঝেতে ঘুম

0
197
Print Friendly, PDF & Email

ভারতের আর দশটা সাধারণ কয়েদির মতো দিল্লির তিহার কারাগারে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম রাত কাটিয়েছেন সাহারাগোষ্ঠীর প্রধান সুব্রত রায়। নির্ধারিত কারাকক্ষের মেঝেতে ঘুমিয়েছেন তিনি। খেয়েছেন কারাগারের খাবার।
কারা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আজ বুধবার বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
তিহার কারাগারের মুখপাত্র সুনীল গুপ্ত গতকালই জানান, কারাগারের ৩ নম্বর কক্ষে সুব্রত রায়কে রাখা হবে। অন্য কারাগারের মতো এই কারাগারে আসামি বা কয়েদিদের জন্য কোনো বিশেষ শ্রেণীর ব্যবস্থা নেই।। তাই তাঁকে সাধারণ কারাকক্ষেই রাখা হবে।
সুনীল গুপ্ত বলেন, ‘আমাদের দুটি ভবন আছে। একটি তিহার, অন্যটি রোহিনি। তাঁকে (সুব্রত) তিহার ভবনে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে তিনি অন্য কয়েদিদের মতো থাকবেন। তাঁকে মেঝেতে ঘুমাতে হবে। কারাগারের খাবার খেতে হবে। সপ্তাহে দুদিন তাঁর সঙ্গে দর্শনার্থীদের সাক্ষাতের সুযোগ দেওয়া হবে।’
আদালতের নির্দেশের পর গতকাল রাত আটটায় তিহার কারাগারে নেওয়া হয় সুব্রতকে। এরপর স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়।
সুব্রত রায় নানা অজুহাতে আদালতে হাজির না হওয়ায় ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশ পুলিশ তাঁকে লক্ষেৗ থেকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল বেলা একটায় পুলিশ পাহারায় তাঁকে সুপ্রিম কোর্টে হাজির করা হয়। আদালত চত্বরে গাড়ি থেকে নামার পরই মনোজ শর্মা নামের এক ব্যক্তি তাঁর মুখে এক দোয়াত কালি নিক্ষেপ করেন। তিনি চিৎকার করে বলেন, ‘সুব্রত রায় চোর। সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ তিনি চুরি করেছেন।’

মনোজ জানান, তিনি আইনজীবী। দুই বছর আগে কমনওয়েলথ গেমস কেলেঙ্কারিতে জড়িত কংগ্রেসের সাংসদ সুরেশ কালমাডিকে জুতা মেরেছিলেন।
মুখ ও জামায় কালিমাখা অবস্থায় আদালতে ঢোকেন সুব্রত রায়। আদালতে তিনি অর্থ পরিশোধের বিকল্প প্রস্তাব দেন। অর্থ ফেরত দিতে দুই মাস বাড়তি সময় চান। তিনি বলেন, এ সময়ের মধ্যে তাঁদের সম্পত্তি বিক্রি করে লগ্নিকারীদের অর্থ ফেরত দেবেন। সাহারা পরিবারের ১৬ লাখ কর্মীর দিকটাও আদালতকে মনে রাখতে অনুরোধ করেন তিনি। তবে এতে আদালত সন্তুষ্ট হননি। তাঁর পুলিশি হেফাজতের মেয়াদ বাড়ানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তিনি ছাড়াও মামলার অভিযোগে তালিকাভুক্ত তাঁর দুই কোম্পানির পরিচালকদের প্রায় এক সপ্তাহ বিচারিক হেফাজতে থাকতে হবে।
শেয়ার ও স্টক এক্সচেঞ্জে লগ্নিকারীদের স্বার্থ দেখতে গঠিত সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া (সেবি) সাহারাগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করেছে। কোম্পানির যে দুটি প্রকল্প থেকে ২৪ হাজার কোটি রুপি সংগৃহীত হয়, সেবি তা বেআইনি বলে জানিয়ে আমানতকারীদের অর্থ ফেরতের নির্দেশ দেয়। দীর্ঘ টালবাহানার পর সাহারা দাবি করে, তারা অধিকাংশ অর্থই ফেরত দিয়েছে। বাকি আছে মাত্র পাঁচ হাজার কোটি রুপি।
সুপ্রিম কোর্টের কাছে কোম্পানির দাবি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। তাই তাঁদের বিচারিক হেফাজতে থাকতে হবে। গতকালই তাঁদের তিহার কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ১১ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।

শেয়ার করুন