দলীয়ভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের লক্ষ্যে আইন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্থানীয় সরকার আইন সংশোধনের জন্য সংসদে খসড়া প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
গতকাল সোমবার রাজধানীর মিরপুরে গোলারটেক মাঠে মিরপুর, শাহ আলী ও দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আশরাফ এ কথা বলেন। তাঁর মতে, যাঁরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনকে নির্দলীয় রাখতে চান, তাঁরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন না। দলীয়ভাবে সমর্থনে নির্বাচন হলে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করা সম্ভব।
সৈয়দ আশরাফ বলেন, দেশে দুই ধরনের আইন প্রচলিত। একটি হলো সংসদীয় আইন ও স্থানীয় সরকার আইন। একটি দেশে দুই ধরনের ব্যবস্থা থাকতে পারে না। সে জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকারব্যবস্থা, সিটি করপোরেশন, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং গ্রাম পর্যায়ে একই ধরনের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা চালু করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইনসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, ভারতে জাতীয় সরকার, বিধানসভা, এমনকি পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সংসদীয় পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়।
হলফনামার আইনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে: নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীদের হলফনামা দেওয়ার প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, ‘এই হলফনামা এখন রাজনীতিবিদদের চরিত্র হনননামায় পরিণত হয়েছে। ইনকাম ট্যাক্সে তো আমাদের সবকিছু আছে। রাজনীতিবিদেরা যদি দুর্নীতি করে তাহলে তারাই ধরতে পারে। নির্বাচন কমিশনে হলফনামা দিতে হবে আবার ইনকাম ট্যাক্সে হিসাব দিতে হবে। এক দেশে দুই নীতি থাকতে পারে না।’ নির্বাচন কমিশনে হলফনামা জমা দেওয়ার আইনও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সংবাদপত্রের সমালোচনা: আশরাফ বলেন, সারা দেশে পত্রপত্রিকায় উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল বলা হচ্ছে বিএনপি এত, আওয়ামী লীগ এত, জাতীয় পার্টি এত, জামায়াত এত। কিন্তু তারা কীভাবে জানল, উনি আওয়ামী লীগের, না বিএনপির? মনোনয়নপত্রে কারও কি কোনো দলীয় মার্কা লেখা আছে?
উপজেলায় বিএনপির আসা সন্দেহজনক: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আসলেই তিনি কি স্থানীয় নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে বিশ্বাস করেন? কারণ, বিএনপি ১৯৯১ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা নির্বাচন আইন বাতিল করে। নির্বাচিত সব উপজেলা চেয়ারম্যানদের বরখাস্ত করে। তাই উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ সন্দেহজনক।
মিরপুর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আগা খানের সভাপতিত্বে কাউন্সিল অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী, স্থানীয় সাংসদ আসলামুল হক প্রমুখ। সম্মেলন উদ্বোধন করেন দলের ঢাকা মহানগর সভাপতি এম এ আজিজ।