ফাও খাওয়া নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৪ নেতাকে বহিষ্কার করেছে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্রসংগঠনটি।
রোববারের কয়েক দফা সংঘর্ষে ২৪ জন আহত হওয়ার ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সোমবার বাংলানিউজকে জানান ছাত্রলীগের দফতর সম্পাদক শেখ রাসেল।
বহিষ্কৃত জাবি ছাত্রলীগের চার নেতা হলেন- সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহমেদ রাসেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল হোসেন দিপু, ক্রীড়া সম্পাদক তাজ ও উপ সমাজসেবা সম্পাদক বশিরুল হক।
এছাড়া, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রাশেদকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানানো হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
এর আগে, রোববার জাবি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৪ জন আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রোববার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের পাশে অস্থায়ীভাবে স্থাপিত ‘ঢাকা বিরিয়ানী হাউজ’ এ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক বশিরুল হকের নেতৃত্বে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রায় ২৩ জন ছাত্রলীগ কর্মী ৫ হাজার টাকার খাবার খান। পরে ৫০০ টাকা পরিশোধ করে সাড়ে ৪ হাজার টাকা বাকি রাখেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা চলায় পরীক্ষার্থীদের সহজে খাবারের ব্যবস্থা করতে শহীদ মিনারের পাশে অস্থায়ী দোকান স্থাপন করেছে ‘ঢাকা বিরিয়ানী হাউজ’।
দোকানদার ছাত্রলীগকর্মীদের ফাও খাওয়ার বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ রাসেলকে জানান। রাসেলের পক্ষের নেতা-কর্মীরা ঘটনাটির প্রতিবাদ জানাতে গেলে উভয়পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
এরপর ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদসহ অন্যান্য নেতারা সমঝোতায় বসেন। কিন্তু বৈঠকে উভয়পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে । এতে আহত হন মীর মশাররফ হোসেন হলের সানোয়ার হোসেন, শহীদ সালাম বরকত হল ও আল বেরুনী সম্প্রসারিত ভবনের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের রচি, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের আশিক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের জাহিদ, রসায়ন বিভাগের নাফিস, দর্শন বিভাগের সাদ্দাম ও গণিত বিভাগের মাহমুদ আহত হন।
খাবার খেয়ে টাকা না দেওয়ার বিষয়টি অন্যকে জানানোয় মীর মশাররফ হোসেন হলের ছাত্রলীগের কর্মীরা ‘ঢাকা বিরিয়ানী হাউজ’ ভাঙচুর চালান।
দুই দফা সংঘর্ষের পর শহীদ সালাম বরকত হলের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মীর মশাররফ হোসেন হলের সামনের দোকান ভাঙচুর করেন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গুলি ছুড়েছে বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
এ সময় নেহাল, কবির, সেতু, পল্লব, বিজয়, নিজাম, জাহাঙ্গীর, তৌহিদ, রাসেল, কৌশিক, রিফাত, পলাশ, রাজীব, রাব্বি, টিটো, ইমরান, আল আমিনসহ আরও বেশ ক’জন আহত হন।
সংঘর্ষের খবর পেয়ে সাভার সার্কেলের এএসপি রাসেল শেখের নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক পুলিশে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশ কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল ছুঁড়লে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
রোববার সংঘর্ষের পর জাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহমেদ বলেন, ছাত্রলীগের নাম ভাঙিয়ে যারা চাঁদাবাজি করেছে সাধারণ শিক্ষার্থী তাদের প্রতিহত করেছে।