দেশের ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে না বলে আশংকা করা হচ্ছে। বেসরকারী বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এই আশংকা করা হচ্ছে।
দেশের শীর্ষ পর্যায়ের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বেসরকারী বিনিয়োগের নিম্নমুখিতা চলতে থাকলে তা দেশের সমষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ফেলবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগের (জিইডি) ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩ সালে জিডিপি-তে বেসরকারী বিনিয়োগের অবদান ছিল ১৯ শতাংশ। আর ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২২.৭ শতাংশ। আগের বছরে জিডিপি-তে বেসরকারী বিনিয়োগের অবদান ছিল ২০ শতাংশ ।
জিডিপি-তে বেসরকারী বিনিয়োগের অবদান ২০১১ ও ২০১২ সালে উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ে। কিন্তু ২০১৩ সালে তা কমে যায়।
বেসরকারী বিনিয়োগ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে সাবেক তত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, অর্থনীতিতে এর মারাত্বক প্রভাব পড়বে এবং ব্যাংক খাতও তারল্য সংকটে পড়বে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগের মধ্যে ব্যবধান গত চার বছরে ক্রমেই কমে যাচ্ছে।
২০১১ সালে শুরু হওয়া ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নির্ধারিত প্রত্যাশার তুলনায় প্রকৃত বিনিয়োগ কম হচ্ছে। বিনিয়োগ জিডিপি অনুপাত সামান্য বাড়লেও তা প্রাপ্ত সঞ্চয়কে ধরতে পারছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদও বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন, এটা সামগ্রিক অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্র¯ত্ম করবে।
বিশ্ব ব্যাংকের নেতৃস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বিনিয়োগের জন্য বর্তমান পরিবেশের উন্নয়ন না হলে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে না।
প্রতিবেদনে পরামর্শ দেয়া হয়েছে, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে অবশ্যই ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রতিবেদনে কর্মসংস্থান সম্পর্কে বলা হয়েছে, বছরে ৬.৩ শতাংশ হারে কাজের সুযোগ বেড়েছে। গত চার বছরে আভ্যšত্মরীণ চাকরি বাজারে ৬০ লাখ লোক কাজ পেয়েছে। আর এই সময়ে ২০ লাখ লোক চাকরির জন্য বিদেশে গেছে।
জিইডি’র তথ্য অনুযায়ী গত চার বছরে ৮২ লাখ ৬০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে যা অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে বেশী। চলতি অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসেও মোট জনসংখ্যার ০.২০ শতাংশ লোক বিদেশে গেছে চাকরির জন্য।
জিইডি’র প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে বেকারত্বের হার বাড়ছে। তবে নারীদের ক্ষেত্রে এ চিত্র ভিন্ন।