পাকিস্তানকে জেতালেন ‘আসামী’ আকমল

0
97
Print Friendly, PDF & Email

আজ তাঁর হাজিরা দেওয়ার কথা ছিল আদালতে। কদিন আগে ট্রাফিক আইন ভেঙেছেন। তারই মামলার তারিখ পড়েছিল আজ। ট্রাফিক আইন ভাঙা হয়তো গুরুতর অপরাধ নয়। কিন্তু অভিযোগের সঙ্গে আছে ট্রাফিক পুলিশের গায়ে হাত তোলার অপরাধও! পাকিস্তানের একটি টিভি চ্যানেলে খবর ছড়াল, আদালতে হাজিরা না দেওয়ায় নাকি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে উমর আকমলের বিরুদ্ধে!
খবরটি নাকচ করে দিয়েছেন তাঁর আইনজীবী। আদালতকে বোঝানো গেছে, আকমল দেশেরই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়ে পাকিস্তান সফরে। দায়িত্বটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা আকমল নিজে আজ ব্যাট হাতে বুঝিয়ে দিলেন। প্রতিকূল স্রোতে দাঁড়িয়ে তাঁর ব্যাট চওড়া না হলে আজ অঘটনের শিকারই হতো পাকিস্তান। এশিয়া কাপে অভিষেকেই ‘বড় ভাই’ পাকিস্তানকে কোণঠাসা করে ফেলেছিল আফগানিস্তান। ১১৭ রানে তুলে নিয়েছিল ৬ উইকেট। সেখান থেকে আকমলের সেঞ্চুরিই বাঁচিয়েছে পাকিস্তানকে। পরে বোলারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে আফগানদের ১৭৬ রানে অলআউট করে ৭২ রানে বোনাস পয়েন্টসহ ম্যাচটি জিতেছে পাকিস্তান।
একসময় মনে হচ্ছিল পাকিস্তান বুঝি ১৫০-এর মধ্যেই গুটিয়ে যাবে। কিন্তু শেষ তিন জুটিতে ১৩১ রান যোগ করে রক্ষা পেয়েছে পাকিস্তান। এর মধ্যে আকমলই যোগ করেন ৯১। ৪৯ ওভার শেষেও তাঁর রান ছিল ৮৫। শেষ ওভারে দুটো চার আর এক ছক্কায় ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন। সাড়ে চার বছর পর সেঞ্চুরি পেলেন। সেটিও কী দুর্দান্ত এক সময়ে, দলের ভীষণ প্রয়োজনে। ২৭ রানে তাঁর ক্যাচ ফেলেছিলেন শেনওয়ারি। সেটার মূল্য এভাবে দিতে হবে, আফগানরা হয়তো ভাবতেই পারেননি।
ব্যাট হাতে আফগানরা কিন্তু ভালোই জবাব দিচ্ছিলেন। ২ উইকেটে ১৩৯ তুলে ফেলেছিলেন। রান রেট অবশ্য কম ছিল। ব্যাটিং পাওয়ার প্লে আর শেষ ১০ ওভারে খানিকটা মেরে খেললেই হতো। কিন্তু অভিজ্ঞতা আর পাকিস্তানি স্পিনারদের মাপা বোলিংয়ের কাছে হার মানতে হলো। মাত্র ৩৭ রানে শেষ ৮ উইকেট হারিয়েছেন তাঁরা। হাফিজ তিনটি, সাঈদ আজমল দুটি আর শহীদ আফ্রিদি নিয়েছেন একটি উইকেট। তিন স্পিনার মিলে ২৮.২ ওভার বোলিং করে দিয়েছেন মাত্র ৮৫ রান। আগের রাতেই ফতুল্লায় বাংলাদেশি স্পিনাররা ‘শিশিরে’ কাবু হয়েছেন।
পাকিস্তানের জয়ের নায়ক অবশ্যই আকমল। শেষ চার উইকেটেই পাকিস্তান যোগ করেছে ১৩১ রান। উমর অপরাজিত ছিলেন ১০২ রানে। শেষ ১০ ওভারে পাকিস্তান তুলেছে ৮৪ রান। অথচ কী ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই না পড়েছিল পাকিস্তান। ১ উইকেটে ৭৮ থেকে পাকিস্তান মুহূর্তের মধ্যেই হয়ে গেছে ৫ উইকেটে ১০৮। মাত্র ৭ ওভারের মধ্যে ৩০ রানের ভিতরে হারিয়ে ফেলেছে ৪ উইকেট। খানিক পরে শহীদ আফ্রিদিও ফিরে গেলে পাকিস্তানের সর্বনাশের চূড়ান্ত। ৬ উইকেটে ১১৭ হয়ে যায় পাকিস্তানের স্কোর। উদ্বোধনী জুটিতেই আসলে পাকিস্তান তুলে ফেলেছিল ৫৫ রান। পরের ৫৩ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়েছেন তাঁরা।
এর পরই শুরু উমর আকমলের প্রতিরোধের। প্রথমে আনোয়ার আলীকে নিয়ে সপ্তম উইকেটে ৬০ রানের জুটি গড়েন। এরপর গুলকে নিয়ে ৪০ এবং সাঈদ আজমলকে নিয়ে জুটি গড়েন ৩১ রানের।
এমন ব্যাটিং দেখে আকমলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা ট্রাফিক পুলিশটিই না শেষে গলে গিয়ে মামলা তুলে নেন!

শেয়ার করুন