দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ৩২ উপজেলার মোট ৯৮০টি কেন্দ্রে অনিয়ম, দখল-নির্যাতন এবং হামলা-মামলার অভিযোগ তুলে এটাকে আন্দোলনের ইস্যু করতে চাইছে দেশের অন্যতম বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপিসহ ১৯ দলীয় জোট।
দলের দফতরের দায়িত্বে থাকা যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ এমন আভাস দিয়ে বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ছত্রছায়ায় সরকার সমর্থকরা সারা দেশে যে ভোট ডাকাতির মহোৎসব চালাচ্ছে, তাতে কমিশনের পদত্যাগের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি অভিযোগ করেন, আগের দিন গভীর রাত থেকেই সরকারি দলের ক্যাডারদের কেন্দ্র দখল, ভোটারদের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন, এজেন্ট বের করে দিয়ে জালভোট প্রদান, সন্ত্রাসীদের অস্ত্র উঁচিয়ে মহড়াই প্রমান করেছে- এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এ পরিস্থিতিতে বিএনপিসহ সমমনা ১৯ দলীয় জোট এটাকে সামনে রেখে সরকারবিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে রাইজিংবিডিকে জানান রিজভী আহমেদ।
এর আগে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, যশোরের চৌগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতি জহুরুল ইসলামকে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীরা’ বোমা মেরে আহত করেছে। এছাড়া নির্বাচন চলাকালীন ফেনী সদর উপজেলার শর্শদী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মো: সরোয়ার ভূঁইয়াকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা অপহরণ করেছে। এখনও পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করা যায়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপির তালিকা অনুযায়ী, ফেনী সদর উপজেলার ৮৪টি কেন্দ্র দখল করে নিয়েছে সরকার সমর্থকরা। নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরুর পরপরই প্রশাসনের ছত্রছায়ায় সরকার সমর্থকরা এজেন্টদের মারধর করে বের করে দিয়েছে। এছাড়া পরশুরাম উপজেলার ১৩টিরও বেশি কেন্দ্র দখল করা হয়েছে।
ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ১৯২টি কেন্দ্রে ভোট ‘ডাকাতির’ মহোৎসব হয়েছে এবং নোয়াখালী জেলার ১৩টি ইউনিয়নের প্রায় সবকটি ইউনিয়নের কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এনেছে বিএনপি।
এ ছাড়া চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ১৮টি, মাগুরার শালিকা উপজেলায় ১১টি, যশোরের চৌগাছা উপজেলায় ২৬টি, কক্সবাজারের চকোরিয়া উপজেলায় ৯টি, ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ৬০টি, বরিশালের সদর উপজেলায় ৬৬টি, কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় ৪০টি, টাঙ্গাইলে ৫০টি, মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় ৪২টি, মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলায় ২০টি, চাঁদপুরের একটি উপজেলায় ৩৩ টি, বাগেরহাটের কঁচুয়া উপজেলায় ২৬ টি, জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় ৩০টি, নেয়াখালীর চাটখিল উপজেলায় ৪৫ টি, সিলেট জেলার বালাগঞ্জে ২৮ টি, নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় ১৬ টি, নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় ১৬টি, ফরিদপুরের একটি উপজেলায় ১৮ টি, ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় ১৬টি, ময়মনসিংহের সদর উপজেলায় ১১ টি, কুমিল্লা জেলার মনোহর উপজেলায় ১৪ টি, ঢাকার সাভার উপজেলায় ৫০ টি, রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ৭ টি এবং খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৬টির বেশি ভোট কেন্দ্র দখল, বিএনপি নেতা-কর্মীদের মারধর, এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেছে বিএনপি।