শহীদ মিনারে আঘাত

0
321
Print Friendly, PDF & Email

একুশে ফেব্র“য়ারি গোটা জাতি যখন ভাষা শহীদদের প্রতি বিনম্রচিত্তে শ্রদ্ধা নিবেদন করছিল, তখন দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মিনার ভেঙে ফেলার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছে দুর্বৃত্তরা। জানা যায়- নরসিংদী, কুষ্টিয়া, পাবনা, সিলেট, ফেনী ও গাজীপুরে অন্তত সাতটি শহীদ মিনার ভেঙে ফেলা হয়েছে। দেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পেরেছে, এটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। স্বভাবতই স্থানীয় মানুষের মনে এসব ঘটনায় তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। শুধু স্থানীয় মানুষ নয়, গোটা জাতি এ সংবাদে উৎকণ্ঠিত। কারা কিভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে সক্ষম হল, অবিলম্বে তার তদন্ত হওয়া দরকার। এ দুর্বৃত্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
শহীদ মিনার কেবল মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধই নয়, এটি বাঙালির মননের প্রতীক। এটি আমাদের এক ধরনের অহংকারও বটে। দেশের আনাচে-কানাচে গড়ে ওঠা প্রতিটি শহীদ মিনার আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে রক্ষার জন্য ১৯৫২ সালের ফেব্র“য়ারি মাসে এ দেশের মানুষ নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বাঙালি জাতির জীবনে এ ঘটনার তাৎপর্য অসীম। একমাত্র বাঙালির শত্র“রাই পারে শহীদ মিনারের ওপর আঘাত হানতে। তাই দেখা গেছে, যখনই বাঙালি জাতিসত্তার ওপর আঘাত এসেছে, তখনই আঘাত হানা হয়েছে শহীদ মিনারের ওপর। ১৯৭১ সালে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীও ভেঙে ফেলেছিল কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। গত বছর মানবতার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধ তথা যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায় ঘোষিত হওয়ার পরও দেশের বিভিন্ন স্থানে শহীদ মিনারের ওপর আঘাত হেনেছিল দুর্বৃত্তরা। এ অপশক্তিকে রুখে দেয়াই জনতার কর্তব্য। আইন-শৃংখলা বাহিনীকেও এ ব্যাপারে কঠোর হতে হবে। যারা শহীদ মিনারে আঘাত হানার মতো ধৃষ্টতা দেখায়, তাদের ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শনের সুযোগ নেই। 

শেয়ার করুন