বাকি উপজেলায় বিপর্যয় ঠেকাতে আওয়ামী লীগের নতুন কৌশল

0
99
Print Friendly, PDF & Email

প্রথম ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পরাজয়ের পর আগামীগুলোতে সর্তকতার সঙ্গে পা বাড়াতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে প্রথমদফা নির্বাচনে এত কমসংখ্যক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে দলটির হাইকমান্ড। একই সঙ্গে পরবর্তী ধাপের নির্বাচনগুলোতে বিপর্যযয় কাটাতে নতুন করে বেশ কিছু কৌশল নিয়ে এগুনোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে দলটি।

এর মধ্যে রয়েছে, বিদ্রোহী প্রার্থীদের বুঝিয়ে বসিয়ে দেয়া, নির্বাচনী প্রচারণায় জোর দেয়া, বিশেষ করে সরকারের সফলতা এবং বিএনপি জামায়াতের ‘ধ্বংসাত্মক’ কর্মকাণ্ড সাধারণ ভোটারদের সামনে তুলে ধরা, জামায়াত অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে অধিক প্রচারণা।

এছাড়াও প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রভাবশালী নেতাদের আসনে পরাজিত হয়েছেন দলীয় প্রার্থী।ওইসব এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীদের ঠেকাতে কার্যকর কোনো উদ্যোগই দেখা যায়নি। ফলে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতাদের ওপর আস্থা হারান খোদ নিজ দলের কর্মী-সমর্থকরাও। তাই আগামী নির্বাচনগুলোতে প্রভাবশালী নেতাদের উপজেলাগুলো থাকবে বিশেষ দৃষ্টিতে।

এজন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছে দলটি। যেসব উপজেলায় এখনো বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছে দলের স্বার্থে তাদের নির্বাচন না করতে নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে হাইকমান্ড থেকে। প্রথম দফা নির্বাচন থেকে শিক্ষা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের আঁটঘাট বেঁধে মাঠে নামারও নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে বলেও আওয়ামী লীগ সূত্র জানিয়েছে।

এদিকে শুক্রবার থেকেই উপজেলাভিত্তিক লিস্ট ধরে প্রয়োজনীয় নিদের্শনা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে। আগামী নির্বাচনগুলোতে কোনোভাবেই হারতে চায় না আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে জামায়াত অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে প্রচারণার কাজ বেশি চালানো হবে। নির্বাচনের ফলাফল বের হওয়ার আগ পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের মাঠে থাকতে কঠোর নির্দেশনা আসছে।

সূত্র জানিয়েছে, দলীয় কোন্দল, একাধিক প্রার্থী এবং জোটের সঙ্গে সমন্বয় না হওয়ায় এই পরাজয়ের কারণ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে দলটির নেতারা। যে কারণে সামনের নির্বাচনগুলোতে এই ধরনের ভুল আর হতে দেবে না। যেকোনো মূল্যে এই নির্বাচনে বেশিসংখ্যক উপজেলায় দল-সমর্থিত প্রার্থীকে জয়ী করতে চায় শাসক দল।

আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, বিভিন্ন জেলায় দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোন্দল রয়েছে। অনেক এলাকায় নেতা-কর্মীদের ক্ষোভ থাকায় বিরোধী পক্ষের প্রার্থীর কাজ করেছে দলীয় নেতা-কর্মীরা। তাছাড়া দল ক্ষমতায় থাকায় অনেকেই মনে করেন প্রার্থী হতে পারলেই হয়ত জয়ী হওয়া যাবে। কিন্তু তারা মানুষের মনের ভাষা বুঝতে পারছেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় এক নেতা বলেন, ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সমন্বয় না করে নির্বাচন করা হয়েছে। যেটি ছিল বড় ধরনের ভুল। কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী একজন আবার ১৪ দলের শরিক দলের প্রার্থী একজন। এসব উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী অনায়াসে জিতে যাচ্ছে। আগামীতে যাতে এই ধরনের ভুল না হয় সেদিকে আমরা খেয়াল রেখেই কাজ করবো।

এ বিষেয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম নতুন বার্তাকে বলেন, “প্রথম দফা নির্বাচনের ফলাফলে আমরা সন্তুষ্ট নই। যেমন ফলাফল আশা করেছিলাম তেমন হয়নি। সামনের নির্বাচনগুলোতে দলীয় কোন্দল ও সাংগঠনিক অবস্থা মজবুত করে এবং অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।”

শেয়ার করুন