রাজধানীর শ্যামপুরের একটি বিদ্যুতের তারের কোম্পানিতে চাকরি করেছিলেন হাবিব। এরপর নির্মাণশ্রমিক হিসেবে কাজ করতে পাড়ি জমান দুবাইয়ে। তিন বছর বিদেশে থেকে দেশে ফিরে উপার্জনের টাকাও খোয়ান তিনি। ছিলেন হতাশাগ্রস্ত। তবে স্বপ্ন ছিল অনেক টাকার মালিক হওয়ার। ঢাকা শহরে একটি বাড়িরও মালিক হওয়ার স্বপ্ন হাবিবের। কিন্তু শ্রমিক হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছাড়া কোনো সম্পদই নেই তার। হতাশায় ডুবে থাকা এই শ্রমিক তার কর্মজীবনের অভিজ্ঞাতাকেই অপকর্মে কাজে লাগায়।
র্যাব কর্মকর্তারা দাবি করছেন, কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংকে সুরঙ্গ কেটে ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা চুরির ঘটনা হাবিব একাই ঘটিয়েছেন। দেড় বছর ধরে তিনি খুড়েছেন সেই সুরঙ্গ। আর এ অপকর্মে সহায়তা করেছে হাবিবেরই এক মামা শ্বশুড় সিরাজ।
মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামপুর এলাকা থেকে র্যাব হাবিব ওরফে সোহেলকে (৩৭) ইদ্রিস ওরফে মোতাহার (৩৮) নামে এক সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে পাঁচ বস্তায় ১৬ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪ টাকা উদ্ধার করে র্যাব।
অভিযান সংশ্লিষ্টরা বাংলামেইলকে জানিয়েছেন, দুই বছর আগে সোহেল ছদ্মনাম ধারণ করে ব্যাংকে চুরির জন্য ব্যাংকেরই পাশে বাসা ভাড়া নেয় হাবিব। সফল হওয়ার আগে তিনি একবার সুরঙ্গ দিয়ে ব্যাংকের বারান্দায় উঠে পড়েন। চুরির পর ট্রাকে করে চালের বস্তার সঙ্গে টাকার পাঁচটি বস্তা ঢাকার শ্যামপুরে নিয়ে আসেন তিনি।
র্যাবের হাতে আটকের পর হাবিব নিজেই বাংলামেইলের কাছে তার দুঃসাহসিক চুরির অভিযানের বর্ণনা দিয়েছেন।
যেভাবে র্যাবের জালে হাবিব:
র্যাব সূত্র জানায়, কিশোরগঞ্জের সোনলী ব্যাংকের লুটের ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাশ পায় একটি বাসা থেকে সুরঙ্গ পথ তৈরি করে টাকা চুরি করা হয়েছে। র্যাবের তদন্তের প্রথমধাপে ওই বাসায় কে বা কারা ছিলেন তা বের করা হয়। হাবিব ওই বাসায় সোহেল নাম-পরিচয় দিয়ে ভাড়া নেয়। ভুয়া নাম-পরিচয়ের কারণে প্রথমে তাকে শনাক্ত করা যাচ্ছিল না। পরে গোয়েন্দা তৎপরতায় বেরিয়ে আসে হাবিব ওই বাসায় দুইবছর ছিলেন। এছাড়া হাবিব কিশোরগঞ্জে কয়েকটি স্থানে গিয়েছেন বলেও তথ্য পায় র্যাব।
পরে র্যাবের গোয়েন্দা দলের সহায়তায় হাবিবের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। রাজধানীর শ্যামপুরের কদমতলীর বালুরমাঠ এলাকার তনয় ভিলা বাসাটি শনাক্ত করার আগেই হাবিবের সহযোগী ইদ্রিসকে আটক করে র্যাব। মঙ্গলবার দুপুরে ইদ্রিসকে আটক করার পর তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয় তনয় ভিলায়।
র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান লে. কর্নেল আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিকেল ৪টার দিকে পাঁচ বস্তা টাকাসহ হাবিবকে আমরা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হই। অনেক কৌশল আছে যা বলা ঠিক না। তবে এটুকু বলতে পারি যে তথ্য-প্রযুক্তির ব্যবহার করে হাবিবকে আটক করা গেছে। অত্যন্ত চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় আমরা গুরুত্ব দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে অভিযান পরিচালনা করেছি।’
কে এই হাবিব:
র্যাব ও হাবিবের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাবিবের বাবার নাম সিরাজ উদ্দিন। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়। তিনি শ্যামপুর এলাকার পলি ক্যাবল নামে একটি কোম্পানিতে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন ১৫ বছর। এ সময় তিনি কিশোরগঞ্জের সাদিয়া আক্তার নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন। ২০০৮ সালে দুবাইয়ে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে যান হাবিব। ফিরে আসেন ২০১১ সালে। বিদেশ থেকে আয় করে আনা ৭ লাখ টাকা তিনি বিভিন্নভাবে নষ্ট করে ফেলেন। বিদেশ যাওয়ার আগে ঋণ করা দুই লাখ টাকাও পরিশোধ করতে হয় হাবিবকে।
এরপর কিশোরগঞ্জের নগুয়া এলাকায় স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন হাবিব। তিনি যুক্ত হন গাজীপুরের তার এক মামা শ্বশুড়ের সঙ্গে। তার নাম সিরাজ। তিনি সেখানকার আনোয়ার ইস্পাতের কারখানায় ফোরম্যান হিসেবে কাজ করেন। বিদেশ থেকে আসার পর ৪ লাখ টাকারও বেশি সিরাজ তার কাছ থেকে নিয়েছে বলে দাবি হাবিবের। এ টাকা চাইলে তা না দিয়ে সিরাজ টালবাহানা শুরু করে। একপর্যায় হাবিবকে ব্যাংকে চুরি করে অনেক টাকার মালিক হওয়ার পরামর্শ দেয় সে।
দেড় বছরের সুড়ঙ্গ-মিশন:
গ্রেপ্তারের পর হাবিব দাবি করেছেন, মামা শ্বশুড় সিরাজের পরামর্শেই তিনি চুরির পরিকল্পনা করেন। সিরাজ তাকে বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংকে অনেক টাকা থাকে। এ টাকা লুট করলে তুমি ধনী হয়ে যাবে। আমি তোমাকে সহায়তা করবো।’ একপর্যায় চুরি করতে সম্মত হয় হাবিব।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১২ সালের প্রথম দিকে কিশোরগঞ্জের ইশা খাঁ রোডের সোনালী ব্যাংকের ভবনটির কাছে আড়াই হাজার টাকায় একটি বাসা ভাড়া নেয় সিরাজ ও হাবিব। ওই বাসা ভাড়া নেয়ার সময় হাবিব জানায়, তার নাম সোহেল। ওই বাসায় বেশিরভাগ সময়ই থাকতেন না তিনি। দেড় মাস পর শুরু হয় সুড়ঙ্গ খোড়ার কাজ।
র্যাবের তথ্য ও হাবিবের দাবি অনুয়ায়ী, ২৫ ফুট লম্বা ও তিন ফুট চওড়া সুরঙ্গটি করতে সময় লেগেছে দেড় বছর। এই ১৮ মাস প্রতিদিনই ছেনি আর হাতুরি দিয়ে গর্ত খোড়েন হাবিব একাই। এই কাজ চলে দিনের বেলা। রাতে ঘরের দরজা বন্ধ করে নিজের বাসায় ফিরে যান হাবিব, যেখানে তার স্ত্রী থাকেন। স্ত্রীর কাছেও পুরো বিষয়টি গোপন করেন হাবিব। সুরঙ্গ খোড়ার সব উপকরণই কিনে দেয় সিরাজ। তবে সিরাজ কখনো তার সঙ্গে ওই বাসায় ছিল না বলে দাবি করেন হাবিব। বন্ধের দিন তিনি রাতেও সুরঙ্গ খোড়েন। ছয় মাস পর সুরঙ্গ খোড়ার কাজে ব্যাবহার করা হয় কাটার ও ড্রিল মেশিন। এসবও কিনে দেন সিরাজ মামা।
হাবিবের দাবি, সিরাজ তাকে বলেছেন- ‘তুমি মিস্ত্রির কাজ করছ। বিদ্যুতের কাজ জানো। তোমারে দিয়াই হইব।’ টাকা চাইলে হাবিবের খাওয়ার জন্য চাল, ডালসহ সবই কিনে দেন সিরাজ। কাঠ ও বাস দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে কৌশলে বিদ্যুতের বাতি জ্বালিয়ে চলেছে কাজ। ঘর ভাড়া নেয়ার দেড় মাস পরে প্রথম হাতুড়ি ঠোকেন হাবিব। এর আগে ব্যাংকের দাড়োয়ান আবু বকরের কাছ থেকে ব্যাংকের কোন স্থানে কী আছে তা জেনে যায় হাবিব। ভল্ট ও ব্যাংক খোলা ও বন্ধের সময় সূচির ব্যাপারেও তথ্য নেন হাবিব।
গত কোরবানীর ঈদের এক সপ্তাহ পরে তার মাটি খোড়ার কাজ শেষ হয়। এরপর চুরি করার ১৫-২০ দিন আগে মেঝে খুড়ে তিনি বারান্দায় উঠে যান। এ ভুল অভিযানের কারণে মামা সিরাজ তাকে হুমকিও দেয়। তবে বারান্দার গর্তের উপরে পুরনো আসবাবপত্র ছিল বলে তিনি ধরা পরেননি বলে জানান।
হাবিব দাবি করেন, সুরঙ্গ খোড়ার আগেই তিনি ভবনটি মেপে একটি নকশা করে কাজ শুরু করেন। এরপর গত শুক্রবার রাতে হয় তার চূড়ান্ত অভিযান। ওই রাতে ৮টার দিকে তিনি সোনালী ব্যাংকের মেঝেতে পৌঁছান। এরপর নিজেকে সামলে নিয়ে কক্ষে ফিরে আসেন। রাত ১০টার দিকে পাঁচটি বস্তা নিয়ে আবারও সুরঙ্গ দিয়ে ব্যাংকে ঢোকেন হাবিব। এসময় তিনি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে একের পর এক ভল্ট ভাঙার কাজ করেন।
ব্যাংকের ভল্টে ২২০ কোটি টাকা ছিল বলে জানতে পেরেছে র্যাব। তবে হাবিব লুট করেছেন ১৬ কোটি ৪০ লাখ। রাত পৌনে ২টার দিকে শেষ হয় তার এ অভিযান। একে একে পাঁচটি টাকার বস্তা নিয়ে নিজের কক্ষে ফিরে আসেন হাবিব।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানিয়েছেন, রাতের বেলা গর্ত খোড়ার মাটিগুলো ব্যাগে ভরে অল্প অল্প করে ধুরের এলাকায় ফেলেছেন তিনি।
চালের ট্রাকে টাকার বস্তা ঢাকায়:
হাবিব জানান, গত শনিবার সকাল ৯টার দিকে তিনি টাকার বস্তাগুলো সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। আগেই সরঙ্গ খোড়ার উপকরণগুলো রাস্তার পাশে ফেলে দেন। সকালে একটি রিকশায় তিনটি টাকার বস্তা তুলে কিশোরগঞ্জ শহরের তেরিপট্টি এলাকায় যান হাবিব। এরপর পেঁয়াজমহল এলাকা থেকে একটি ট্রাক ভাড়া করেন চাল নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার জন্য। ১২ হাজার টাকা ভাড়ায় ট্রাকটি নারায়ণগঞ্জের পাগলা বা ঢাকার শ্যামপুরে যাবে বলে চুক্তি হয়। এরপর ওই ট্রাকে ২৩০ বস্তা চাল কিনে তোলেন হাবিব। চাল তোলার ফাঁকে রিকশার তিনটি টাকার বস্তা নিচে রাখা হয়। পরে আরেকটি রিকশায় করে বাসা থেকে অপর দুইটি বস্তাও আনা হয়। সবগুলো বস্তাই ছিল চালের নিচে।
হাবিবের ভাষ্যমতে, প্রতিটি টাকার বস্তার ওজন ছিল ৫০ কেজি। ট্রাকে বস্তা রাখার সময় চালক সন্দেহ করে। একপর্যায় হাবিব তাকে বলেন, পাঁচটি বস্তায় কাপড় আছে। তবে একটি বস্তায় টাকা দেখে ফেলে চালক। চালক ওই টাকাকে অবৈধ টাকা বলে অভিহিত করে হাবিবের কাছে ৫০ শতাংশ বা অর্ধেক টাকা দাবি করে। সকাল ১১টার দিকে রওয়ানা হওয়ার পর এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে দরকষাকষি চলে।
হাবিব বলেন, ‘টাকা দিলে পড়ে ধরা খেলে দেব কোথা থেকে? তাই এ চিন্তা করে ওকে বেশি টাকা দেইনি। অন্য প্যাকেট থেকে ১৪টি বাণ্ডিল দিয়েছি।’
হাবিব জানায়, আগেই তিনি কিছু টাকা একটি ব্যাগে আলাদা করে রেখেছেন। নরসিংদীতে ট্রাক আসার পর চাকা পাঞ্চার হয়। এ সময় হাবিব চালকের সঙ্গে রফা করেন। বিকেল ৫টার দিকে ট্রাক রাজধানীর শ্যামপুরের লাল মসজিদ এলাকায় পৌঁছায়। চালক হাবিবকে জানায়, সে আর থাকতে পারবে না। এ সময় ২৩০ বস্তা চাল রাখার জন্য একটি পিকআপ ভ্যান ঠিক করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আগে শ্যামপুর এলাকায় কাজ করতাম। তাই এইখানে বাসা ভাড়া পাওয়া যাবে বা রাখা যাবে ভাবছি।’ চাল নামানোর জন্য দুই হাজার টাকাও খরচ হয় হাবিবের। এরপর বাসার খোঁজে বের হন তিনি। এসময় বালুরমাঠ এলাকায় একটি বাড়ি ভাড়া হবে বলে শোনেন। বাড়িওয়ালা বিশ্ব ইজতেমায় গেছেন। তার স্ত্রী হাবিবকে জানান, এক মাসের ভাড়া অগ্রিম দিলে ওইদিন থেকেই ভাড়া নিতে পারবেন হাবিব। এরপর হাবিব সাড়ে আট হাজার টাকা দিয়ে তনয় ভিলার ষষ্ঠ তলায় বাসা ঠিক করেন।
এরপর পিকআপ থেকে ভ্যানে করে তিনটি ও দু’টি করে দুই ধাপে টাকার বস্তাগুলো বাসায় নিয়ে রাখেন। চালের বস্তা তোলা হচ্ছে- এমনটি সবাইকে বলে সঙ্গে আট বস্তা চালও তোলা হয়। এসময় ইদ্রিস হাবিবকে সহায়তা করে। ট্রাকে থাকা বাকি ২২ বস্তা চাল ফরিদপুরের আটরশির একটি ওরসের জন্য পাঠিয়ে দেন হাবিব। চালকের কাছে চিরকুট লিখে ১২ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে চালের বস্তাগুলো পাঠানো হয়। বাসায় চালের বস্তার পাশে টাকার বস্তাগুলো রাখা ছিল।
পরিকল্পনা ছিল ঢাকায় বাড়ি কেনার:
হাবিব জানান, অনেক টাকার মালিক হওয়ার পাশাপাশি রাজধানীতে একটি বাড়ির মালিক হওয়ার স্বপ্ন তার। এ কারণে টাকা উপার্জনের সহজ পথ খুঁজছিলেন। তাই সিরাজের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যাংকে চুরির কাজ করেন। সফল হওয়ার পর টাকাগুলো দিয়ে বাড়ি কেনারই পরিকল্পনা ছিল হাবিবের। তবে ভাবেননি ধরা পড়ে যাবেন। ধরা পড়ে এখন বুঝেছেন অনেক বড় ভুল হয়ে গেছে।
হাবিবের দাবি, সুরঙ্গ খুড়তে তার অনেক কষ্ট হয়েছে। অনেক ভয়ও লেগেছে। তবে অনেক টাকা পাওয়া যাবে এ আশায় এ ঝুঁকি নিয়েছেন তিনি। এ অপরাধের জন্য তিনি সিরাজকেই দায়ী করেন।
এদিকে আটক ইদ্রিস নিজেকে মোতাহার বলে পরিচয় দিয়ে কথা বলেছেন এবং হাবিবকে সহায়তা করেছেন বলে দাবি র্যাব কর্মকর্তাদের।
তবে ইদ্রিস জানান, তিনি হাবিবের সঙ্গে কয়েক বছর আগে শাহীন ক্যাবলস নামে একটি কারখানায় কাজ করেছেন। সহকর্মী হওয়ার সুবাদে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন এবং বাসা ঠিক করে দিয়েছেন। টাকা লুটের কিছুই জানেন না বলেও দাবি করেন ইদ্রিস।
টাকা ও আসামি হস্তান্তর:
মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় র্যাব সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘কিশোরগঞ্জের ব্যাংকে লুটের ঘটনায় সারাদেশে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার পর র্যাব রহস্য উদ্ধারে সচেষ্ট হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনার মামলার তদন্তও চলছে। জড়িত অপর সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে র্যাবের ডিজি বলেন, ‘ইদ্রিস ওরফে মোতাহারকে প্রধান আসামি হাবিবের সঙ্গে পাওয়া গেছে। তাই তাকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, দুই বছর ধরে ব্যাংকে চুরির এই প্রক্রিয়া চলছিল।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ব্যাংকের লোকজন জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। আলামত জব্দ করে সিজার লিস্ট হবে। এরপর পুলিশ ও ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে দুইজনকে নিয়ে র্যাবের দল কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে পৌঁছে। একে একে গাড়ি থেকে পাঁচটি টাকার বস্তা নামানো হয়। এরপর সংবাদ সম্মেলন কক্ষে এনে টাকার বস্তাগুলো খুলে টাকা গণনা শুরু হয়।
এসময় সোনালী ব্যাংকের ঢাকা ডিভিশনের ডিজিএম সর্দার নূরুল আমিন বলেন, ‘আমরা একটি প্রতিনিধি দল এখানে এসেছি। টাকা গণনা শেষে আইনগত প্রক্রিয়ায় আমরা এগুলো বুঝে নেব।’
রাতে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) কর্নেল জিয়াউল আহসান বলেন, ‘ব্যাংকের বান্ডেল অনুযায়ী গণনা করে পঁচটি বস্তায় ১৬ কোটি ১৯ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪ টাকা পাওয়া গেছে। রাতে কিশোরগঞ্জ থানা থেকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসেছেন। তার উপস্থিতিতে এবং ব্যাংকের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মেশিনে টাকা গণনা হচ্ছে। এরপর আইও এ টাকা আইনগত প্রক্রিয়ায় ব্যাংককে বুঝিয়ে দেবে।’