শেখ হাসিনার নতুন সরকারকে বৈধতা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, নতুন সরকারের সঙ্গে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র কাজ করবে বলে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশা বিসওয়াল যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদেরকে জানিয়েছেন বলে রাষ্ট্রদূতকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিডিয়ায় যে সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে তা সত্য নয়। গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের খোদ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার স্বপন কুমার সাহার পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে নতুন সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাবে এমন কোনো কথা উল্লেখই করেননি নিশা দেশাই। এছাড়া নতুন সরকারকে বৈধতা দেয়ার বিষয় নিয়েও কোনো আলোচনা হয়নি।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদেরকে উদ্ধৃত করে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার করা হয় যে, যুক্তরাষ্ট্র নতুন সরকারকে বৈধতা দিয়েছে। এই সরকারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র অবশ্যই কাজ করে যাবে। নতুন সরকারের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান পাল্টিয়েছে বলে ওইসব খবরে মন্তব্য করা হয়। তবে গতকাল বাংলাদেশ দূতাবাসের এই বিবৃতির পর বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। বেশ কয়েকটি মিডিয়া বর্তমান সরকারের প্রতি বিদেশিদের অবস্থান নিয়ে নানা ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে আসছে। এটি তার একটি উদাহরণ। বাংলাদেশ দূতাবাসের দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আকরামুল কাদের এবং মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশা বিসওয়ালের মধ্যকার অনুষ্ঠিত বৈঠকে নিয়ে কতিপয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশে নবনির্বাচিত সরকারের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে উক্ত প্রতিবেদনগুলোতে কয়েকটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যকে সঠিকভাবে উদ্ধৃত করা হয়নি। একই সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনেও কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল তথ্য পরিবেশিত হয়েছে, যা রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। বস্তুত নিশা দেশাইর সঙ্গে রাষ্ট্রদূতের বৈঠকটি ছিল একটি রুটিন বৈঠক। এটা কোনো রুদ্ধদ্বার বৈঠক নয়। বৈঠকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্রের প্রদত্ত ১৩ জানুয়ারি দেয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তিটির অবতারণা করেন, যার মাধ্যমে মার্কিন প্রশাসন এর আগে শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন। মার্কিন সরকারের আগের এ বক্তব্যের সঙ্গে মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই কোনো নতুন বক্তব্য সংযুক্ত করেননি। রাষ্ট্রদূতও নিশা দেশাইকে উদ্ধৃত করে এ বিষয়ে সংবাদপত্রে কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি। বিবৃতিতে বলা হয়, সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিকভাবে কতিপয় সংবাদপত্রে বলা হয়েছে, নবগঠিত সরকারকে মার্কিন প্রশাসন বৈধতা প্রদান করেছে। দূতাবাস এ ব্যাপারে নিশ্চিত করে বলতে চায়, মার্কিন সরকার কর্তৃক বৈধতা প্রদানের কোনো বিষয়ে উক্ত বৈঠকে কোনো আলোচনা হয়নি। সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় একটি নির্বাচিত সরকারের পক্ষ থেকে অন্য কোনো বিদেশি সরকারের কাছে বৈধতা চাওয়ার বিষয়টি অযৌক্তিক। নিশা দেশাইর আফগানিস্তান সফর প্রসঙ্গেও বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত কোনো বক্তব্য প্রদান করেননি বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।