ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের প্রস্তাবিত দুই স্তরবিশিষ্ট টেস্ট ক্রিকেট ও ব্যবসাভিত্তিক নিয়ন্ত্রণব্যবস্থার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি), বাংলাদেশসহ সব জাতীয় ক্রিকেট সংস্থাকে এ ধরনের অন্যায় পদ্ধতি প্রতিরোধে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার টিআইবির পাঠানো এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “প্রস্তাবিত দুই স্তরবিশিষ্ট ব্যবস্থাটি অত্যন্ত বৈষম্যমূলক, অযৌক্তিক ও চক্রান্তমূলক। এই ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশসহ টেস্ট ক্রিকেটে অপেক্ষাকৃত নতুন দেশগুলো বিশ্বক্রিকেট থেকে হারিয়ে যাবে, যা কোনোমতেই গ্রহণযোগ্য নয়।”
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, “ইতিমধ্যে যোগ্যতা প্রমাণকারী বাংলাদেশের মতো উদীয়মান দলের কাছে তথাকথিত শক্তিশালী দলগুলোর হেরে যাওয়ার ভয় থেকেই এ ধরনের একটি কাপুরুষোচিত ও অসৎ উদ্দেশ্যমূলক পদ্ধতির প্রস্তাব।”
টিআইবি আইসিসিকে ভবিষ্যৎ ট্যুর প্রোগ্রাম পরিচালনার দায়িত্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রস্তাবও প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানাচ্ছে। টিআইবি মনে করে, আইসিসির নজরদারি যদি ট্যুর প্রোগ্রামে না থাকে, তাহলে ক্রিকেট খেলার আয়োজন দ্বিপক্ষীয় সমঝোতার ওপর নির্ভরশীল হবে, যা একদিকে বৈষম্যমূলক, অন্যদিকে অগণতান্ত্রিক।
বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, প্রস্তাবগুলো গৃহীত হলে বিশ্ব ক্রিকেটের পরিপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ তথাকথিত তিন বৃহৎ শক্তির (অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও যুক্তরাজ্য) করায়ত্ত হবে। এতে আইসিসিভুক্ত অন্য দেশগুলোর কোনো বাস্তব প্রতিনিধিত্ব থাকবে না। প্রস্তাবিত চার সদস্যের নির্বাহী কমিটিতে ওই তিন দেশের জন্য সংরক্ষিত আসনের প্রস্তাব জবাবদিহির ঊর্ধ্বে ক্ষমতার অপব্যবহারের অবারিত সুযোগ সৃষ্টি করবে, যা কোনো অবস্থাতেই বিশ্বক্রিকেটের সুশাসন ও ভবিষ্যৎ উন্নতির জন্য সহায়ক নয়।”
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, “প্রস্তাবিত সংস্কার ‘ভদ্রলোকের খেলা’ হিসেবে পরিচিত ক্রিকেটকে দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার একটি বাণিজ্যিক উদ্যোগে পরিণত করবে। ফলে খেলোয়াড়ি মনোভাব, নৈতিকতা এবং সুষম ও সুস্থ প্রতিযোগিতার মূল্যবোধ বিসর্জিত হবে। ব্যবসাভিত্তিক ক্ষমতাকে প্রাধ্যন্য দেওয়া হলে ক্রিকেট জগতের খেলার মাঠে ও বাইরে দুর্নীতির ঝুঁকি বাড়াবে, যা নিতান্তই অগ্রহণযোগ্য।”
ড. ইফতেখারুজ্জামান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডসহ ক্রিকেটের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে জাতীয় স্বার্থকে অন্য সব বিবেচনায় ঊর্ধ্বে প্রাধান্য দিয়ে বৈষম্যমূলক ও ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সব প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের আহ্বান জানান।