উপজেলা নির্বাচনে দলের একক প্রার্থী দিতে তদারকি করার জন্য মন্ত্রীদের নির্দেশনা দিয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগের জেলা কমিটিকে এর সমন্বয়ের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় তিনি বলেন, বিএনপি জাতীয় নির্বাচনের ট্রেন মিস করলেও উপজেলা নির্বাচনের এক্সপ্রেসে উঠেছে। বৈঠকে উপস্থিত একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এসব কথা জানা যায়।
বৈঠকে একজন মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, বিএনপি উপজেলায় একক প্রার্থী দেবে। সে ব্যাপারে আমাদেরও (আওয়ামী লীগ) যেন একক প্রার্থী থাকে। প্রধানমন্ত্রী তখন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও উপ-মন্ত্রীদের বলেন, প্রত্যেক জায়গায় যেন একক প্রার্থী থাকে সেজন্য কাজ করতে হবে। নিজ নিজ এলাকায় মন্ত্রিসভার সদস্যদের সে ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে বলেন তিনি।
এ সময় পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীদের পরাজয়ের পর উপজেলা নির্বাচনকে ইমেজ বৃদ্ধির নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট এলাকার আওয়ামী লীগের জেলা কমিটিকে একক প্রার্থীর বিষয়ে যত্নবান হওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। যারা জাতীয় নির্বাচন বয়কট করে আন্দোলন করেছিল, তারা উপজেলা নির্বাচনে যাচ্ছেন বলে যে খবর প্রকাশ হয়েছে- তাকে ভালো সিগন্যাল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ, সুন্দর নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তার অবস্থান তুলে ধরেন।
সূত্র জানায়, বৈঠকে গত নির্বাচনকালীন সময়ে বিরোধী দলের হামলায় আহত আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি যত্নবান হওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রীদের নির্বাচন নিয়ে সহিংসতায় দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত অন্যদেরও খোঁজ-খবর নেয়া এবং চিকিৎসার বিষয়টি খেয়াল রাখার আহ্বান জানান তিনি।
বৈঠকে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে প্রধানমন্ত্রী যোগাযোগ ব্যবস্থার সচিত্র প্রতিবেদন নিয়ে আগামী বর্ষার আগেই সেগুলোর মেরামতের কাজ এগিয়ে নিতে নির্দেশনা দেন। চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের কাজ শিগগিরই শেষ করতেও যোগাযোগমন্ত্রীকে তাগিদ দেন তিনি। চীন, মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সংযোগ সড়কগুলোর অবস্থা সম্পর্কেও যোগাযোগমন্ত্রীর কাছে জানতে চান তিনি। পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর আগ্রহ থেকে সড়কগুলোর কানেকটিভিটি দ্রুত শেষ করার জন্য আলোচনা হয়। সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্শে দেন তিনি। এছাড়াও জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালার খসড়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে অবহিত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
নাবিক কল্যাণে দুটি কনভেনশনে সই করবে বাংলাদেশ : সমুদ্রগামী জাহাজের নাবিকদের কাজের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত ও কল্যাণের জন্য আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) দুটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এজন্য এ দুটি কনভেনশন অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর একটি সামুদ্রিক জাহাজে শ্রম কনভেনশন ২০০৬ ও অপরটি নাবিকদের পরিচয়পত্র কনভেনশন (সংশোধিত) ২০০৩।
সোমবার সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আন্তর্জাতিক নৌপথে আমাদের দেশের ৬৮টি জাহাজ চলাচল করে। দেশী-বিদেশী জাহাজ মিলিয়ে বাংলাদেশের ১২ হাজার নাবিক কর্মরত আছেন। তারা নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। এজন্য মেরিটাইম লেবার কনভেনশন ২০০৬ ও সিফেরারস আইডেনটিটি ডকুমেন্ট কনভেনশন (রিভাইস) ২০০৩ অনুসমর্থনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।