রা না প্লা জা ধ স ব্যয়ের তথ্য প্রকাশ করবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়

0
120
Print Friendly, PDF & Email

রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে জমা হওয়া অর্থ ও এর বিতরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিলের সর্বশেষ অবস্থা পর্যালোচনা করেছেন।
গত রোববার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলা হয়, দুর্ঘটনার পর ১০০ কোটি টাকার বেশি জমা পড়লেও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠান থেকে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের অর্থ ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশের দাবি জানানো হয়।
গতকাল পর্যন্ত ত্রাণ তহবিলের হিসাব পর্যালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দেখেছেন, বিতরণ করা অনুদান ও আনুষঙ্গিক খরচের পরিমাণ ২৬ কোটি টাকার বেশি। উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেওয়া সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন সংস্থাকে দেওয়া অর্থ এই ২৬ কোটি টাকার বাইরে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য কাকে কত টাকা দেওয়া হয়েছে, তার পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে স্বচ্ছতার সঙ্গে টাকা খরচ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য ১০০ কোটি টাকার বেশি জমা পড়া প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেন, রানা প্লাজা ধসের পর আলাদা কোনো হিসাব খোলা হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে সব অনুদানের টাকা একসঙ্গে জমা হয়। তবে রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের জন্য টাকার অভাব নেই।
সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একক তহবিলে অনুদানের অর্থ থাকলেও বড় প্রতিষ্ঠানগুলো যে টাকা দিয়েছে, তাতে একটি আনুমানিক চিত্র পাওয়া যায়। ওই টাকা থেকে আহত ব্যক্তিদের ১০ লাখ ও নিহত ব্যক্তিদের ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি আংশিকভাবে মেটানো যেত।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, গত বছরের ২৪ এপ্রিল মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে নিহত ৭৭৭ পরিবারের এক হাজার ১৬ সদস্যকে দেওয়া হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা। এই তহবিল থেকে ডিএনএ পরীক্ষার ভিত্তিতে নিশ্চিত হওয়া নিহত শ্রমিকদের ১৩৭টি পরিবারের ১৯০ জন সদস্যকে প্রায় তিন কোটি টাকা দেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষাবাবদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে ৫০ লাখ টাকার কিছু বেশি। গুরুতর আহত ও অঙ্গহানি হওয়া ৩৬ শ্রমিকের প্রত্যেককে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়া হয়েছে। এ খাতে খরচ প্রায় চার কোটি টাকা।
এ ছাড়া আহত একজন উদ্ধারকর্মীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে বিদেশে পাঠাতে ভাড়া বাবদ খরচ হয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। তাঁর পরিবারকে ১০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়া হয়েছে। আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়া ২২টি ক্লিনিক ও হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে দুই কোটি টাকা। এর মধ্যে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পেয়েছে এক কোটি টাকা।

শেয়ার করুন