ক্রসফায়ারকে সাজানো নাটক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৯ জানুয়ারি কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি উপলক্ষে যৌথসভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ক্রসফায়ারে নিহত উপজেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি আজহারুল ইসলামের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তাকে যৌথবাহিনী আটক করে আদালতে সোপর্দ না করে বিনা বিচারে হত্যা করেছে। কিছু দিন আগে তার বাবা মারা গেছেন। তার একটি সন্তানও রয়েছে, যার বয়স মাত্র ১৫ দিন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোহাম্মদ শাহজাহান, আমানউল্লাহ আমান, নাজিম উদ্দিন আলম, অর্থ সম্পাদক আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম ওবায়দুল হক নাসির প্রমুখ।
সাতক্ষীরা ও নীলফামারীতে ক্রসফায়ারে পাঁচজন নিহতের ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এভাবে চলতে পারে না। এটি একটি ভয়ঙ্কর বিষয়, যা রাষ্ট্রীয়ভাবে ঘটানো হচ্ছে। এটা কোনো সভ্য সমাজ কিছুতেই বরদাস্ত করতে পারে না। তিনি বলেন, আগের দিন তালা থানার ওসি সেখানে সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বলেন, আজহারুল ইসলাম নামের কোনো ছাত্রদল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়নি এবং তার জানা মতে আজহারুল ইসলামের নামে কোনো মামলা নেই। সেই ওসিই গতকাল সকালে কীভাবে বলেন বন্দুকযুদ্ধে আজহার মারা গেছে। আজহার হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুরো জেলাবাসীই আজ স্তম্ভিত। মির্জা ফখরুল বলেন, জানি না কী কারণে এ বিষয়টি গণমাধ্যম গুরুত্ব দিচ্ছে না। এ ঘটনাগুলো তুলে ধরা দরকার। কারণ এটি বিএনপির জন্য নয়, মানুষের নিরাপত্তা ও গণতন্ত্রের জন্য মিডিয়ার সোচ্চার হওয়া উচিত।
তিনি বলেন, সারা দেশে মধ্যম সারির নেতা-কর্মীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নিয়ে ক্রসফায়ারের নাটক সাজিয়ে হত্যা করছে। এভাবে চলতে থাকলে দেশের কোনো মানুষ নিরাপদ থাকবে না। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিবেক কি একেবারেই হারিয়ে গেছে? তাদের ভেতরে কি বিচার বলতে কিছুই নেই। তারা কি এদেশের সন্তান নন? বিরোধী দলের একজন নেতাকে ঘর থেকে ধরলেন- আর বাইরে নিয়ে গুলি করে ফেলে দিয়ে বললেন, বন্দুক যুদ্ধে মারা গেছে। মির্জা ফখরুল অবিলম্বে বিচারবহির্ভূত এই হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।