শীর্ষ নিউজ ডটকম, রাজশাহী : আসামির বাবা হওয়ায় আবু রায়হান নামের এক ব্যক্তির দোকানে তালা দিয়েছে রাজশাহী নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশ। এরপর থেকেই বন্ধ রয়েছে নগরীর উপকণ্ঠ বায়া এলাকার রায়হান টেইলার্স নামের ওই দোকানটি।
দোকান মালিক আবু রায়হান ওই এলাকার জামায়াত কর্মী মাসুমের বাবা। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন সন্ধ্যায় বায়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ককটেল হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মাসুম।
এর আগে রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জামায়াত কর্মী মাসুমের বাড়িতে গিয়ে পুরুষ সদস্যদের না পেয়ে মহিলাদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। দু’দিনের মধ্যে ০১৭৪৭৭৮২৬৯২ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলে। অন্যথায় পরিবারের সদস্যদের আটক করে থানায় নিয়ে যাবার হুমকি দিয়ে যায় পুলিশ।
পুলিশ তালা দিয়ে গেছে ওই এলাকার কৃষি বিতানেও। দোকান মালিক রফিকুল ইসলাম বকুল ওই মামলার এজাহার নামীয় রাকিব ও খালেদের বাবা। এ সময় দুই লাখ টাকা দাবি করে পুলিশ। টাকা হাতে না পাওয়া পর্যন্ত দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হবে না বলে পুলিশ জানিয়েছে বলে জানান ওই দোকান মালিক।
একইভাবে পুলিশ হুমকি দিয়েছে বায়া বাজারের মুদি ব্যবসায়ী মেহেদী স্টোরে। ওই মামলার এজাহার নামীয় আসামি বিএনপি কর্মী মেহেদী হাসানের বাবা হাবিবুর রহমান ওই দোকানের মালিক। এর আগে ওই বিএনপি কর্মীর বাড়িতে গিয়ে মোবাইল নম্বর দিয়ে যোগাযোগ করতে বলে পুলিশ।
তাদের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে যোগাযোগ না করলে মুদি দোকান বন্ধসহ তাণ্ডব চালানোর হুমকি দেয়। এছাড়া থানা পুলিশের এক কর্মকর্তা দোকানে এসে দুই লাখ নিয়ে যোগাযোগ করতে বলেছেন বলে অভিযোগ করেন দোকান মালিক হাবিবুর রহমান।
অভিযোগ রয়েছে, এর আগে ওই মামলার আসামিদের গ্রেফতারের নামে ওই এলাকায় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক তাণ্ডব চালায় পুলিশ। এ সময় আসামিদের বাড়িতে হামলা, পরিবারের সদস্যদের মারপিট ও লুটপাট চালিয়েছে। এছাড়া আসামিদের গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের ভয় দেখিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই নূরুল করীম চাঁদাবাজিতে জড়িয়ে পড়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তবে এ অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করেন শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান। অভিযোগ পেলে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।
উল্লেখ্য, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন ৪ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় নগরীর উপকষ্ঠ বায়া সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে ককটেল নিক্ষেপ করে দুর্বৃৃত্তরা। এতে দুই পুলিশ আহত হন।
ওই দিন রাতেই পুলিশ বাদি হয়ে শাহমখদুম থানায় ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত একশ’ থেকে দেড়শ’ জনকে আসামি করে দু’টি মামলা দায়ের করে। এরা সকলেই স্থানীয় ১৮ দল কর্মী। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত ওই মামলায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ওই ঘটনার পরদিনই জেলা জাতীয় পার্টি এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে, ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেতে বাধা দিতেই ভোটের আগের দিন বায়াসহ উপজেলার বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে বোমা হামলা চালিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করেছে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। ওই এলাকা জাতীয় পার্টির ভোটব্যাংক হওয়ায় এ নাশকতা চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।