তফসিল ঘোষণার পরই এলাকার মানুষের মাঝে ভোট নিয়ে আগ্রহ দেখছি। মনোনয়ন ফরম কেনার আগেই কয়েকজন উপজেলা চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আমার কাছে ফোন করে দোয়া চেয়েছেন। অনুরোধ করেছেন নির্বাচনে সহযোগিতা করার জন্য। আশা করি এবারের নির্বাচনটা উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।’ বলছিলেন হাটহাজারী মেট্রিক্স সলিউশনের পরিচালক প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ।
অটোরিকশাচালক আবদুল খালেক বললেন, ‘গত সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী না থাকায় আমরা ভোট দিতে পারিনি। এবার শুনছি অনেক প্রার্থী ভোটে দাঁড়াচ্ছেন। আশা করি এবার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারব।’
ওপরের উচ্ছ্বাসপূর্ণ মন্তব্যগুলোই বলে দেয় হাটহাজারীতে উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে ভোটারদের মনের কথা। ২৪ জানুয়ারি সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম কেনার পর এলাকায় ভোট নিয়ে শুরু হয়েছে নানা আলোচনা। প্রার্থীদের যোগ্যতা, ভাবমূর্তি, দলীয় অবস্থান ইত্যাদি নিয়ে চলছে বিচার-বিশ্লেষণ। প্রার্থীরাও শুরু করেছেন অনানুষ্ঠানিক গণসংযোগ। স্থানীয় সরকারব্যবস্থার নির্বাচন হলেও ভোটাররা প্রার্থীদের এখনো দলীয় পরিচয়েই চিহ্নিত করছেন।
উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার লক্ষ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদের জন্য ১২ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য আটজন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ফরম নিয়েছেন পাঁচজন।
সংশ্লিষ্ট দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে সাতজন আওয়ামী লীগ, তিনজন বিএনপি, একজন জাতীয় পার্টি এবং একজন ইসলামি সমমনা দলগুলোর সমর্থক। আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা হলেন অধ্যক্ষ মো. ইসমাইল (বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান), জসীম উদ্দিন শাহ, এস এম রাশেদুল আলম, সোহরাব হোসেন চৌধুরী, আবুল মনছুর (বর্তমানে ধলই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান), অধ্যাপক খুরশিদ আলম ও অ্যাডভোকেট মো. ফয়জুল ইসলাম।
বিএনপির সমর্থকেরা হলেন মাহবুবুল আলম চৌধুরী, মো. নাজিম উদ্দীন, সোয়েব মোরশেদ ফারুকী। মহিউদ্দীন (জাপা) ও মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ ইসলামি সমমনা দলগুলোর সমর্থক।
পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন নিয়েছেন আওয়ামী লীগের উদয় কুমার সেন, ইছা আহম্মদ ও মোহাম্মদ আকতার হোসেন, বিএনপির মো. আইয়ুব খান ও মো. জসিম উদ্দীন, জাপার মো. আবুল কালাম আজাদ ও মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন এবং ইসলামি সমমনা দলগুলোর মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদের জন্য ফরম নিয়েছেন আওয়ামী লীগের ছৈয়দা সাহেদা সুলতানা, বিএনপির নু. মাহফুজা ইউছুপ ও সাজেদা বেগম এবং স্বতন্ত্র মনোয়ারা বেগম ও মরিয়ম বেগম।
জানা গেছে, দলের একাধিক স্থানীয় নেতা মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেও সংশ্লিষ্ট দলের পক্ষ থেকে কাউকে সমর্থন দেওয়ার ব্যাপারে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। জানতে চাইলে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম বলেন, ‘এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন হিসেবে যে কারও প্রার্থী হওয়ার অধিকার আছে। তবে মনোনয়ন ফরম জমা দেওয়ার পর আমরা দলীয়ভাবে আলোচনা করে কাউকে সমর্থনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।’ একই রকম মন্তব্য করেন উত্তর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. আসলাম চৌধুরী।