জাতীয় দলে জার্সি গায়ে কোনো ওপেনার এতো নিয়মিত হতে পারেনি একমাত্র তামিম ছাড়া। গেলো কয়েক বছরে তামিমের সঙ্গি হয়েছেন এনামুল-আশরাফুল-নাফিস-নাঈম-জুনায়েদ-ইমরুল সহ বেশকিছু ক্রিকেটার। কিন্তু দলে স্থায়ী হতে পারেনি কেউই। আশরাফুলতো স্পট ফিঙিং কেলেঙ্কারি দায় মাথায় চেপে নিষিদ্ধ হয়েছেন। নাঈম-এনামুল-ইমরুল-জুনায়েদ-নাফিসদের পারফর্ম করে সঙ্গী হতে হয়েছে তামিমের। সেখানে জিতেছেন ইমরুল কায়েস। সঙ্গে দ্বিতীয়বার টেস্ট স্কোয়াডে সুযোগ পাওয়া শামসুর রহমান শুভ। ২৭ জানুয়ারি তামিমের সঙ্গী হচ্ছেন কে তার সাময়িক উত্তর হয়তো পাওয়া যাবে। তামিম তার স্থায়ী সঙ্গী নিয়ে সমস্যায় আছে বিগত বছরগুলোতে।
টেস্টের সবচেয়ে কঠিন পজিশন ওপেনিং বুধবার মিরপুল শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে এমন মন্তব্য করেন জাতীয় দলের সম্ভাব্য সহ-অধিনায়ক! এ ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, ওপেনিং পজিশনে সময় দেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ। টেস্টের সবচেয়ে কঠিন পজিশন হলো ওপেনিং পজিশন। ১২০ ওভার ফিল্ডিং করে দশ মিনিটের মধ্যে ব্যাটিং নেমে ব্যাটিং করাটা খুব কঠিন। দীর্ঘ আড়াইবছর পর দলে সুযোগ পাওয়া ইমরুল সম্পর্কে তামিম বলেন, ইমরুল প্রমাণিত ওপেনার। গত বিশ্বকাপেও ওয়ানডে ম্যাচে ভালো খেলেছে।
তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি যখনই কোনো ওপেনার নতুন করে আসে, তাকে সময় দেয়াটা জরুরি। ইমরুল অনেকদিন পর দলে ফিরলো এক্ষেত্রে ওকে ভালো খেলার সুযোগ দিতে হবে। শুধু ইমরুল না। নতুন যেমন শামসুর রহমান কিংবা এনামুল হক বিজয় তাদেরকে সুযোগ দিতে হবে।
টেস্ট ক্রিকেট অনেক কঠিন । ২/৩ ম্যাচ ভালো না হলেও একদিন না একদিন ওরা ভালো পারফর্ম করবেই। বিজয় ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো খেলেছে। যদিও টেস্টে এখনো ভালো স্টার্ট পায়নি। আমি নিশ্চিত বিজয় ভালো খেলার যোগ্যতা রাখে। ওপেনিং পজিশনে যারা সফল হয় তাদের নামও অনেক বেশি ছড়ায়। যারা নতুন আসে আমার কাছে মনে হয় তাদের সময় দেওয়া হলে তারা ভালো করবে।
বাংলাদেশের সেরা ওপেনার বলেন, একটা ভালো ওপেনিং পার্টনার থাকলে দলের জন্য ভালো সুবিধা হয়। সুনির্দিষ্ট করা থাকলে পরিকল্পনা করতে সুবিধা থাকে। দলের দিক থেকে চিন্তা করলে এটা খুবই পজেটিভ একটা দিক দলে যদি একটা স্থায়ী ওপেনার থাকে।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলে এসে অনেকে জাতীয় দলে ভালো খেলতে পারে না-এবারোও কি এমন হওয়ার আশংকা রয়েছে কিনা সাংবাদিকদের করা এমন প্রশ্নের উত্তরে তামিম ইকবাল বলেন, আমি সবাইকে বলেছি বিপিএল হোক আর ঘরোয়া ক্রিকেট হোক যেভাবে রান করেছো সেভাবেই জাতীয় দলের হয়ে খেলতে। ঘরোয়া ক্রিকেটে যেভাবে ইমরুল, শামসুর এবং শুভ ভাই রান করেছে আমি বিশ্বাস করি জাতীয় দলের হয়েও ওরা এভাবেই খেলতে পারবে।
অন্য যে কোন সময় থেকে প্রস্তুতি অনেক ভালো হয়েছে মানছেন তামিম ইকবাল। তিনি বিসিবিটি অল্প সময়ের মধ্যে দুটি চারদিনের ম্যাচ আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদও দেন তামিম। প্রস্তুতি সম্পর্কে তামিম বলেন, আমরা দুটি ৪ দিনের ম্যাচ খেলেছি। সবাই টাচে আছে। প্রস্তুতিটা আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে ভালো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, শ্রীলংকা ভালো একটি টেস্ট সিরিজ খেলে আসছে। ওদের কোয়ালিটি নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই। আমার যদি আমাদের খেলাটা খেলতে পারি, শেষবার ওদের ওখানে যে সিরিজটা খেলে এসেছি এর চেয়ে ভালো ফলাফল হবে। আমাদের জন্য আরো প্লাস পয়েন্ট আমরা দেশের মাটিতে খেলবো। আমরা যদি ভালো খেলি আমি নিশ্চিত অনেক কিছুই ঘটা সম্ভব।
শ্রীলঙ্কা সিরিজটাকে কিভাবে মূল্যায়ন করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তামিম বলেন, আমাদের ভাবনায় সবসময় ম্যাচ জেতার তাড়না। আমরা একটি দল হয়ে গত এক/দেড় বছর ধরে ভালো খেলছি। সবার মধ্যে আত্মবিশ্বাস আছে। সবাই ভালো পারফর্ম করছে। এটা দলের জন্য ভালো দিক। যেভাবে শেষ এক/দেড় বছর আমরা ক্রিকেট খেলেছি সে কারণে এ সিরিজটা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
তামিম আরো বলেন, এছাড়া আগামী তিন মাস আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই সিরিজের পর একটি বড় টুর্নামেন্ট এর পর তারচেয়ে আরো বড় টুর্নামেন্ট। এ সিরিজটা যদি আমরা ভালোভাবে খেলতে পারি, তবে এ আত্মবিশ্বাসটা আমরা পরবর্তী টুর্নামেন্টগুলোতে কাজে লাগাতে পারবো।
টেস্ট স্কোয়াড নিয়ে সন্তুষ্ট তামিম ইকবাল। তিনি বলেন, প্রথম টেস্টের দলটি এমন কবে সেটাই ভেবেছিলাম। যারা ছন্দে ছিল তারাও দলে আছে, এছাড়া যারা দলের বাইরে ছিলো তারা পারফর্ম করে সুযোগ পেয়েছে। সেরা একাদশে সবাই তাদের বেস্ট দেওয়ার চেষ্টা করবে। আগে সবার মধ্যে নেতিবাচক একটি ধারনা ছিলো। কিন্তু এখন সেটা নেই। শ্রীলঙ্কা দলও জানে আমাদেরকে হারাতে হলে তাদের বেস্ট ক্রিকেট খেলতে হবে। আমরাও জানি তাদের বিপক্ষে জিততে হলে আমাদেরকেও আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে।
সহ-অধিনায়কের পদের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সহ-অধিনায়কের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। আমাকে অফিসিয়ালি এখনো কিছু জানানো হয়নি। আমাকে যেহেতু অফিসিয়ালি কিছু জানানো হয়নি এ ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারবো না।