পৌর পিতা আর দলীয় নেতার ভূমিকা এক নয় মেয়র যখন পলাতক

0
145
Print Friendly, PDF & Email

যিনি পৌর পিতা, তিনি রাজনীতিক হওয়ায় দোষ নেই; কিন্তু রাজনৈতিক কারণে তিনি যদি জনপ্রতিনিধিত্বের গুরুদায়িত্ব পালন করতে না পারেন, তাহলে ভাববার বিষয়। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র বিএনপি নেতা মোসাদ্দেক হোসেন আত্মগোপনে বলে আটকে আছে সব উন্নয়ন প্রকল্প। সমস্যাটা অভিনব নয়, প্রায়ই স্থানীয় সরকার পর্যায়ে রাজনৈতিক ভূমিকা আর প্রশাসনিক দায়িত্বের মধ্যে বিরোধ দেখা যায়। এর সমাধানের নীতি কী হবে, সেটা ভাবা দরকার।
সমস্যা হতো না, যদি মেয়র মোসাদ্দেক সরকারদলীয় নেতা হতেন। সমস্যা হতো না যদি মেয়র পদ আর দলীয় পদের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করার কথা চিন্তা করা হতো। মেয়র একই সঙ্গে রাজশাহী মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। বিএনপি আন্দোলন-অবরোধ কর্মসূচিতে গেলে দলের নেতা হিসেবে মেয়রও জড়িত হন, নেতৃত্ব দেন। গত ২৬ ডিসেম্বর এ রকম একটি মিছিল থেকে বোমা নিক্ষেপ করা হলে পুলিশের এক সদস্য নিহত হন। যথারীতি তিনি পুলিশ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হন। এরপর বিএনপির নেতারা সরকারের লাগাতার গ্রেপ্তার অভিযান এড়াতে যেভাবে আত্মগোপনে গেছেন, মেয়র মোসাদ্দেকও একই পথ অনুসরণ করেন। কিন্তু বিএনপি নেতা আত্মগোপনে যাওয়া এক কথা আর মেয়র পদের দায়িত্বরত ব্যক্তির এক মাস ধরে দায়িত্ব পালন না করা আরেক কথা। গ্রেপ্তার আতঙ্কই এই পালিয়ে থাকার কারণ।
মেয়র যদি অপরাধে সংশ্লিষ্ট হন, তাহলে তিনি বিচারের মুখোমুখি হবেন। তবে এ ক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব পালনের খাতিরে অন্য বিবেচনাও আসতে পারে। সাংসদেরা যে যুক্তিতে অপরাধ প্রমাণের আগে গ্রেপ্তার হন না, সেই একই যুক্তি সিটি করপোরেশনের মেয়রদের বেলায়ও প্রযোজ্য হতে পারে কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। অন্যদিকে, যিনি মেয়র বা জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন, তিনি সরাসরি দলীয় নেতৃত্বে থাকবেন কি না, সেটাও দেখা দরকার। জনপ্রতিনিধির বড় দায়িত্বের সঙ্গে দলের দায়িত্ব যেখানে সংঘাতপূর্ণ হবে, সেখানে জনপ্রতিনিধিত্বের দাবিকেই বড় করতে হবে। মেয়র মোসাদ্দেকেরও এটা ভাবার দরকার ছিল।

শেয়ার করুন