অতি দ্রুত ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন, ১৮ দলীয় জোট নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
গতকাল বিকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিশাল গণসমাবেশে তিনি বলেন, ভোটে নয়, এ সরকার অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় আছে। অস্ত্রের জোরে বেশিদিন ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না বলে হুশিয়ার করে দেন খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়া আরও বলেন, এ সরকারের সময় কম। অতি দ্রুত নির্বাচন দিয়ে জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। প্রহসনের নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে না যাওয়ায় জনগণকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ৫ জানুয়ারি জনগণ নিরপেক্ষ সরকারের যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছে। এবার ভোটাধিকার আদায় করতে কঠোর সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে যুবকদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। অতি শিগগিরই জনগণ আপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় জনগণকে অভিনন্দন জানাতে বিএনপি আয়োজিত এ গণসমাবেশে দলটির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রহসনের নির্বাচন, সারাদেশে হত্যা-নির্যাতন, অবৈধ সরকারের পরিকল্পিত সন্ত্রাস এবং লুটপাটের চিত্র তুলে ধরেন। বিশেষ করে যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে হত্যা-খুনের নিন্দা জানিয়ে তিনি এসব অভিযানে প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী অংশ নিচ্ছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।
গণসমাবেশে দলটির নেতারা ছাড়া ১৮ দলীয় জোটের কয়েকজন নেতা বক্তৃতা করেন। এর বাইরে জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ গণসমাবেশে বক্তৃতা করেন। জোটের অন্যতম অংশীদার জামায়াত ইসলামীর কোনো নেতাকে গণসমাবেশে দেখা যায়নি। জোটের অন্যদলের কিছু শীর্ষ নেতা মঞ্চে থাকলেও কেবল বিএনপির নেতাকর্মীরাই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
গত ২৫ অক্টোবরের পর টানা হরতাল-অবরোধ ও ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিরোধের কর্মসূচির পর খালেদা জিয়া গতকাল প্রথম খোলা আকাশের নিচে কোনো জমায়েতে বক্তৃতা করেন। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গণসমাবেশের মঞ্চ থাকলেও জনতার স্রোত শাহবাগ, মত্স্যভবন, হাইকোর্ট, প্রেস ক্লাব, সেগুনবাগিচা এলাকা ছাড়িয়ে যায়।
সমাবেশ থেকে আগামী ২৯ জানুয়ারির বিক্ষোভ কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান খালেদা জিয়া।
গণসমাবেশে খালেদা জিয়া দীর্ঘ বক্তৃতা করেন। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ৪২ বছর পর স্বাধীনতা হারাতে যাচ্ছি। আমাদের আন্দোলনের প্রধান লক্ষ্য দেশ রক্ষা ও গণতন্ত্র উদ্ধার। তিনি বলেন, দেশ ও গণতন্ত্র রক্ষায় আরেকবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে সরকারকে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে বাধ্য করতে হবে। স্বঘোষিত জাতীয় বেইমান দেশপ্রেমিক হতে পারে না।
খালেদা জিয়া বলেন, জনবিচ্ছিন্ন বলেই সরকার জনগণকে এত ভয় পায়। দুই স্বৈরাচার এক হয়ে দেশকে গিলতে বসেছে। মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। অতি অল্প সময়ে সরকারকে বিদায় নিতে হবে। এ সরকারই জঙ্গিবাদের মদতদাতা। বিএনপি জঙ্গিবাদ দমন করেছে।
ইনকিলাব, আমার দেশ, দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ কেন প্রশ্ন করে তিনি অবিলম্বে এসব বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবি জানান।
খালেদা জিয়া বলেন, দৈনিক আমার দেশ-এর সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে বিনা দোষে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
খালেদা জিয়া বলেন, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন জায়গায় যৌথবাহিনী যে অভিযান চালাচ্ছে তাতে জনগণের অনেক সন্দেহ রয়েছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে জনগণকে নির্যাতন করা হচ্ছে। সাতক্ষীরা ও গাইবান্ধায় অভিযানে বাড়িঘরে হামলা ও নির্যাতনের ভয়াবহতা তুলে ধরে তিনি বলেন, মানুষ বিশ্বাস করতে পারছে না, এরা কি বাংলাদেশের পুলিশ বাহিনী নাকি অন্য বাহিনী?
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যৌথবাহিনীর নামে কীভাবে মানুষকে নির্যাতন করেছে। আদৌ যৌথবাহিনীর ছিল কি না, সেটা নিয়ে মানুষের মনে সন্দেহ আছে। বাংলাদেশের পুলিশ ও অন্য বাহিনী এতো নিষ্ঠুর হবে, এটা নিয়ে মানুষের সন্দেহ রয়েছে। তাদের কাজ-কর্ম দেখে মনে হয় না সার্বভৌমত্ব অটুট আছে।
তিনি বলেন, সরকার জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরানোর জন্য সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এরসঙ্গে জড়িত সরকারি দলের লোকজন। ধরা পড়লেও প্রচার করা হচ্ছে না। সরকার ব্যর্থ হচ্ছে তাদের নিরাপত্তা দিতে। কারণ সরকারের লোকেরাই পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটাচ্ছে। একটা কাজ করলে সেটা ঢাকা দেয়ার জন্য আরেকটা কাজ শুরু করছে। একদিন এর জবাব দিতে হবে। কোথায় কোথায় কত মানুষ গুম হয়েছে সে হিসাব আমাদের কাছে আছে। সময় হলে সেগুলো প্রকাশ করা হবে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচনে জনগণ ভোট দেয়নি উল্লেখ করে বেগম জিয়া বলেন, অবিলম্বে নির্বাচন দেয়ার ব্যবস্থা করুন। নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রমাণ করে দিয়েছে নির্দলীয় সরকার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। ভোটের আগেই ১৫৩ আসনে এমপি হয়ে গেছে। জনগণের ভোট ছাড়াই তাদের এমপি বলা হচ্ছে। ১৪৭ আসনে ৫ শতাংশের কম ভোট পড়েছে। এদের জনপ্রতিনিধি বলব কী করে? তাই নির্লজ্জ সরকারকে বলব, অতি দ্রুত নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে নিজেদের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন।
সারাদেশে গুম, খুন, হত্যা নির্যাতন চলছে এতে আওয়ামী লীগের লোকজন জড়িত রয়েছে অভিযোগ করে খালেদা জিয়া বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে জনগণের ওপর অত্যাচার চলছে। গুম, খুন করা হচ্ছে। নির্বাচনের সময়ই ২২ জন নেতাকে গুম করা হয়েছে। এগুলো বন্ধ করুন। যৌথবাহিনীর অভিযানের নামে জনগণের ওপর নির্যাতন বন্ধ করুন।
নির্বাচনের দিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখিয়ে তিনি বলেন, ভোট কেন্দ্রে জনগণ যায়নি। এই যে কুকুর দেখা যাচ্ছে। কুকুর কি তাদের ভোট দিয়েছে? তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন আজ্ঞাবহ ও মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন। এই কমিশন দিয়ে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করা যাবে না। সরকারের বাইরে তারা যেতে পারে না। কথা বলার কোনো সাহস রাখে না। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোট পড়েনি। কিন্তু ফল ঘোষণার জন্য তিন দিন সময় নিয়ে নির্লজ্জভাবে ৪০ ভাগ ভোট দেখিয়েছে।
পেশাজীবীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন হচ্ছে উল্লেখ করে খালেদা জিয়া বলেন, আইনজীবীদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। সাংবাদিকদের ওপর হত্যা নির্যাতন চালানো হচ্ছে। জেলে নেয়া হচ্ছে। এভাবে গুণ্ডাবাহিনী দিয়ে শেষ রক্ষা হবে না। এই সরকার সন্ত্রাসীদের ছেড়ে দিচ্ছে উল্লেখ করে একটি জাতীয় পত্রিকার সংবাদ দেখিয়ে তিনি বলেন, এই সরকার সন্ত্রাসীদের সরকার।
খালেদা জিয়া বলেন, এই সরকার যে গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, এর প্রমাণ আরেকবার দিল। ১৯৭৫ সালে একদল গঠন করে বাকশাল কায়েম করেছিল। সরকারি ব্যবস্থাপনায় চারটি সংবাদপত্র রেখে সব সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল। তিনি সরকারের উদ্দেশে বলেন, ইনকিলাব বন্ধ করলেন কেন? তারা পত্রিকায় যেটি ছাপিয়েছে সেটা আগেই ওয়েবসাইট, ফেসবুক ও অনলাইনে এসেছে। সঠিক ব্যাখ্যা না দিয়ে কাগজ বন্ধ করে দিয়েছেন। এর আগে চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, আমার দেশ বন্ধ ও এর নির্দোষ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এবার একদলের অধীনে নির্বাচনে সংসদ বসছে বিরোধী দল ছাড়া। আজকে বুঝতে হবে দেশের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। মানুষ এগুলো চায় না। মানুষ চায় উন্নয়ন, চায় কাজ। মানুষ গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে চায়।
নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন, তোমরা নতুন ভোটার। তোমরা ভোট দিতে পারলে না। এ অবৈধ সরকার আসলে যুবকদের জন্য নয়, নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য। আবার লুটপাট করার জন্য ক্ষমতায় বসেছে। হয়তো দেশটার অস্তিত্বই রাখবে না। এভাবে চলতে দেয়া যায় না।
বাংলাদেশের সম্মান আজ সারাবিশ্বে ভূলুণ্ঠিত উল্লেখ করে বিএনপি নেত্রী বলেন, দেশের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনতে এখন গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন অতি দ্রুত আলোচনা, নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
খালেদা জিয়া বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতার বাইরে ছিল তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ১৭৩ দিন হরতাল দিয়েছে, ব্যাংকে আগুন দিয়েছে। গান পাউডার দিয়ে মানুষ মেরেছে। ১৫ দিন চট্টগগ্রাম বন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। মঈনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের সঙ্গে সমঝোতার (আন্ডারস্ট্যাডিং) মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করেছে। বহুবার সংবিধান সংশোধন করেছে। এখন বলছে, সংবিধান থেকে একচুলও নড়ব না। একচুল কেন? বহু হাত নড়ে গেছেন। এখন আর এসব কথা মানায় না। শান্তি, স্বস্তির ধারা ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজন গ্রহণযোগ্য নির্বাচন।
তিনি বলেন, টেন্ডারবাজি, জমি দখল সব করছে ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ তাদের অঙ্গ সংগঠনগুলো। তাদের নাম হলো দখলদার অবৈধ সরকার।
খালেদা জিয়া বলেন, আপনাদের দু-একজন বাদে সব উপদেষ্টার নামে অনেক কথা শোনা যায়। আর নতুন মন্ত্রীদের নামেও অনেক অভিযোগ আছে। এখন এই মন্ত্রীদের সম্পদের হিসাব নিয়ে রাখুন। নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে সম্পদের হিসাব দেয়ার পর বন্ধ করার প্রক্রিয়ার কঠোর সমালোচনা করেন তিনি বলেন, বিদেশে টাকা পাচার করছেন আপনারা। কে, কত টাকা পাচার করছে, সেই তথ্য আমাদের কাছে আছে।
তিনি বলেন, ৪২ বছর পর আবার স্বাধীনতা হারাতে বসেছি। এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। মুক্তিযোদ্ধা যারা বেঁচে আছেন তারা তো এ দৃশ্য দেখার জন্য বেঁচে নেই।
আগে অনুমতি না দিয়ে রোববার রাতে (আগের রাতে) সমাবেশের অনুমতি দেয়ায় প্রশাসনের কঠোর সমালোচনা করেন খালেদা জিয়া। বিএনপির দলীয় কার্যালয় বন্ধ করে রাখার প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের অফিস কেন বন্ধ করে রাখা হয়েছে? আমরা তো কখনও আওয়ামী লীগকে বাধা দিইনি। আপনারা রাস্তায় নৈরাজ্য করার পরও আমরা গুলি চালাইনি।
খালেদা জিয়া বলেন, একদলীয় শাসন ছাড়া আওয়ামী লীগ অন্য কোনো কিছুতে বিশ্বাস করে না। তারা বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের দিয়ে জেল ভরিয়ে ফেলেছে। আমাদের সিনিয়র নেতাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের নামে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার দলীয় স্বার্থের বাইরে অন্য কোনো চিন্তা করতে পারেন না। বিএনপি ও সব বিরোধী দলের নেতাদের বন্দি করে রাখা হয়েছে। তিনি রাজবন্দিদের মুক্তি দাবি করেন।
খালেদা জিয়া বলেন, বিদেশিরা এই নির্বাচন গ্রহণ করেনি। বাংলাদেশের মানুষ গায়ের জোরে অবৈধভাবে ক্ষমতায় কাউকে থাকতে দেবে না। তাই তিনি অবিলম্বে সবার অংশগ্রহণে নির্বাচন দেয়ার দাবি জানান।
অন্যান্য বক্তা
গণসমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, এলডিপির সভাপতি কর্নেল অব. অলি আহমদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, লে. জে. মাহবুবুর রহমান, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ড. আবদুল মঈন খান, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, জাগপা সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, সেলিমা রহমান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শামসুজ্জামান দুদু, শওকত মাহমুদ, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, পেশাজীবী নেতা রুহুল আমিন গাজী, সানাউল্লাহ মিয়া প্রমুখ।
কাজী জাফর আহমদ
বিএনপির এই আন্দোলন ও গণসমাবেশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন নবগঠিত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমদ।
তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ৫ শতাংশের বেশি ভোট পড়েনি। এতে করে আমরা একটা সফলতায় পৌঁছেছি। বেগম জিয়া যে বলেছেন, নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না, সেটা প্রমাণিত হয়েছে। তিনি গণতন্ত্র রক্ষা, মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
কর্নেল (অব.) অলি আহমদ
এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেন, আমরা এই নির্বাচন মানি না। প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করে নিদর্লীয় সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন দিতে হবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হত্যা, নির্যাতন ও গুম করে চলমান আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না। এই সরকারের পতন ও নতুন নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। নেতাকর্মীদের প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, দেশে কি নির্বাচন হয়েছে? আপনি কি আপনারা ভোট দিতে পেরেছেন? আমরা ভোট দিতে পারিনি। আমরা একতরফা এ নির্বাচন মানি না। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আমরা আমাদের অধিকার ফেরত চাই।
আন্দালিব রহমান পার্থ
বিএনপি ট্রেন মিস করেছে সরকারের মন্ত্রীদের এমন বক্তব্যের জবাবে বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ বলেন, আমরা ট্রেন মিস করিনি। যেই ট্রেনে জনগণ চড়ে না সেই ট্রেনে ১৮ দল ওঠে না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের আন্দোলনে থাকতে হবে, এমন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে যাতে এই সরকারকে নামিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা যায়।
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন, একাত্তর সালে যারা পাকিস্তানের সমর্থন করেছে, তারা পাকিস্তানের রাজাকার। আর ২০১৪ সালে যারা ভারতের দালালি করছে, তারা ভারতীয় রাজাকার। অর্থাত্, তাদের নাম দিয়েছি ‘ভাজাকার’।