ভারতে ট্রানশিপমেন্ট চায় বাংলাদেশ

0
97
Print Friendly, PDF & Email

ভারতের সঙ্গে ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে চায় বাংলাদেশ। ভারতের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশি পণ্য পরিবহনের এ চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৯৯ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর ঢাকা সফরে। এ চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করে সরকার ভারতের ভেতর দিয়ে আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আঞ্চলিত যোগাযোগ স্থাপন করতে চায়।

নতুন সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ভারত সফরে গিয়ে কলকাতার ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ আগ্রহের কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে দু’দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষতঃ ট্রানশিপমেন্ট চুক্তি নবায়নের প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার উন্নতির জন্য এ অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে। এ স্বার্থে দেশগুলোর মধ্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো খুবই জরুরি। আমরা ভারতীয় রুট ব্যবহার করে আমাদের পণ্য আফগানিস্তান এবং শ্রীলঙ্কায় পাঠাতে চাই, যেমনটা ভুটান ও নেপালের ক্ষেত্রে পাঠিয়ে থাকি। একইসঙ্গে আমরা ভারতকেও আমাদের দেশের ভেতর দিয়ে পণ্য সরবরাহের সুবিধা দেয়ার পক্ষপাতি। ইতোপূর্বে ১৯৯৯ সালে এ ব্যাপারে দু’পক্ষ একমত হয়েছিল।’

উল্লেখ্য ১৯৯৯ সালে করা ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তি অনুযায়ী, ২৫ ক্যাটাগরির বাংলাদেশি পণ্যের জন্য শুল্কমুক্তভাবে অভ্যন্তরীণ সড়কপথ ব্যবহারের সুযোগ দিতে রাজি হয়েছিল ভারত।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ সারা বিশ্বে তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক। বছরে প্রায় ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করা হয়। ভারত তৈরি পোশাকের বাজার বেশ বড়, কিন্তু সেখানে বাংলাদেশের রপ্তানিকৃত পণ্যের অর্থমূল্য বড়জোর ৫০ কোটি মার্কিন ডলার। আমি এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে চাই।’

২০১২-১৩ সালের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশ ভারতের কাছে প্রায় ৫৬ কোটি ৪ লাখ টাকার পণ্য রপ্তানি করেছিল, যা আগের বছরের তুলনায় ১৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি। তৈরি পোশাক শিল্প বাংলাদেশের পুরো রপ্তানিপণ্যের ৮০ শতাংশ। ভারতে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি মার্কিন ডলার তৈরি পোশাকের বাজার রয়েছে, যা বাংলাদেশের লক্ষ্য হতে পারে।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘ভারত আমাদের কাছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করে থাকে। সে পণ্যের অধিকাংশ মূলত আমাদের রপ্তানিকৃত পণ্যেরই কাঁচামাল, যেমন- তুলো, সুতো, তন্তু বা এসব থেকে উৎপন্ন দ্রব্যাদি। এছাড়াও চিনি, কারখানার যন্ত্রাংশ প্রভৃতিও আমরা ভারতের কাছ থেকে কিনে থাকি। যাইহোক, মূলত রপ্তানির জন্য আমরা নতুন এবং বড় বাজার খুঁজছি।’

প্রসঙ্গত, তোফায়েল আহমেদ ১৯৯৬ সালে থেকে ২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী ছিলেন।

তাছাড়া, এর আগে ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুৎকেন্দ্রের সরঞ্জাম বহরের জন্য ভারত বাংলাদেশের ট্রানজিট সুবিধা নিয়েছে। এ নিয়ে তখন দেশে তখন ব্যাপক বিতর্ক হয় কারণ ভারতকে এ সুবিধা দেয়ার বিপরীতে বাংলাদেশ লাভের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে অভিযোগ ছিল।

শেয়ার করুন