‘বন্দুকযুদ্ধে’ ও গুলিবিদ্ধ হয়ে ৯ দিনে নিহত ৭

0
200
Print Friendly, PDF & Email

দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘বন্দুকযুদ্ধ’, ‘গুলিবিনিময়’ ও গুলিবিদ্ধ হয়ে গত নয় দিনে সাতজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে চারজন নিহত হয়েছেন পুলিশ ও যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় ‘বন্দুকযুদ্ধ’ ও ‘গুলিবিনিময়ে’। অপর তিনজনের লাশ গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া গেছে। সর্বশেষ গতকাল রোববার চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের স্থানীয় এক নেতার গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়।
সাতক্ষীরার সদর উপজেলায় গত শনিবার যৌথ বাহিনীর অভিযানের সময় ‘গুলিবিনিময়ে’ ছাত্রশিবিরের কর্মী আবু হানিফ ওরফে ছোটন নিহত হন। একই দিন নীলফামারীতে উদ্ধার করা হয় সদর উপজেলার লক্ষ্মীচাপ ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর লাশ। তিনি গত ১৪ ডিসেম্বর আসাদুজ্জামান নূরের (বর্তমানে সংস্কৃতিমন্ত্রী) গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি। ১৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম নগরের হালিশহর বেড়িবাঁধের গলাচিপা এলাকায় মো. নাছির ও মো. রাজীব নামের দুই যুবক পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। ১৪ জানুয়ারি সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার ঘোনাপাড়ায় জামায়াতে ইসলামীর রুকন আনারুল ইসলাম যৌথ বাহিনীর সঙ্গে ‘গুলিবিনিময়ে’ নিহত হন। এর আগে ১১ জানুয়ারি গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বাঁশকাটা থেকে জামায়াতের নেতা নাজমুল হাসানের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, সীতাকুণ্ডের বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের টেরিয়াল থেকে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় ছাত্রশিবিরের নেতা মোশারফ হোসেনের (২২) গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি উপজেলার সৈয়দপুর ইউনিয়নের কেদারখীল গ্রামের মাহমুদুল হকের ছেলে ও ছাত্রশিবিরের সীতাকুণ্ড পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে সীতাকুণ্ডের টেরিয়াল ও ছোট দারোগাহাটের মাঝামাঝি স্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে মোশারফের লাশ দেখতে পেয়ে লোকজন থানায় খবর দেন। ঘণ্টা খানেক পর পুলিশ সেখানে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। লাশের মাথায় ও বুকে গুলির চিহ্ন ছিল। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।
সীতাকুণ্ড থানার পুলিশ জানায়, মোশারফের বিরুদ্ধে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ি পোড়ানো ও ভাঙচুরের অভিযোগে পাঁচটি মামলা রয়েছে।
মোশারফের পরিবারের দাবি, গত শুক্রবার মিরসরাই উপজেলার মিঠাছড়া ইউনিয়নের মঠবাড়িয়ায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। শনিবার ভোরে সাদা পোশাকের ১০-১২ জন ব্যক্তি র‌্যাব পরিচয়ে তাঁকে বোনের বাড়ি থেকে ধরে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যান। এরপর পরিবারের সদস্যরা থানা ও র‌্যাবের কার্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে গতকাল দুপুরে সংবাদ সমেঞ্চলন করার প্রস্তুতি নেন। এর আগে দুপুর ১২টার দিকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম হাওলাদার জানান, লাশের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। পরনে ছিল লুঙ্গি ও গেঞ্জি। মোশারফের ভগ্নিপতি মফিজুর রহমান লাশ শনাক্ত করেন।
মোশারফ ওয়ার্ড শিবিরের নেতা ছিলেন জানিয়ে চট্টগ্রাম (উত্তর) জেলা ছাত্রশিবিরের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘র‌্যাব শনিবার ভোরে গ্রেপ্তারের নামে মোশারফকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে।’
জানতে চাইলে র‌্যাব-৭-এর সীতাকুণ্ড অস্থায়ী ক্যাম্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো অভিযান র‌্যাবের পক্ষ থেকে চালানো হয়নি। এ ছাড়া অপহরণের স্থান নির্ধারিত সীমানার বাইরে হওয়ায় বিষয়টি আমাদের জানা নেই।’ তিনি বলেন, প্রতিটি অভিযানের বিষয়ে গণমাধ্যমে জানানো হয়। এ ঘটনা নির্বাচন-পরবর্তী রাজনৈতিক সংঘাতের অংশ হতে পারে। অনেক জায়গায় র‌্যাবের নামে দুষ্কৃতকারীরা এভাবে অপহরণ করছে।
উৎসঃ   প্রথম আলো

শেয়ার করুন