আল জাজিরার প্রতিবেদন অনেক কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ২০-৩০টি

0
100
Print Friendly, PDF & Email

বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনেক কেন্দ্রে ২০ থেকে ৩০টা ভোট পড়েছে বলে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক প্রভাবশালী টিভি স্টেশন আল জাজিরা।

লক্ষ্যণীয় ব্যাপার হচ্ছে, কারো বক্তব্যের ভিত্তিতে নয়, আল জাজিরা প্রতিনিধির সরেজমিন অনুসন্ধানে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ঠিল লক্ষ্যণীয়ভাবে নগণ্য। দুপুর ২টা পর্যন্ত বেশ কিছু কেন্দ্রে মাত্র ২০ থেকে ৩০টা ভোট পড়েছে, যেখানে ভোটারের সংখ্যা ছিল ৩ হাজারের বেশি।’

কম ভোট পড়ার কারণ সম্পর্কে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ভোটারদের মনে নিরাপত্তা ভীতি এবং ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকায় উপস্থিতি ছিল নগণ্য।’

‘ভায়োলেন্ট বাংলাদেশ পোল নট ক্রেডিবল ( বাংলাদেশে সহিংস নির্বাচন গ্রহণযোগ্য নয়)’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, অন্তত ২৪ জনের মৃত্যু, ব্যাপক মাত্রায় জালিয়াতি এবং তিক্ত রাজনৈতিক অচলাবস্থার কারণে পশ্চিমা দেশগুলো দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘বিশ্বাসযোগ্য নয়’ বলে মন্তব্য করেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‌সব দলের অংশগ্রহণে নতুন নির্বাচনের জন্য ঐকমত্য প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।

এত বলা হয়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে সহিংস নির্বাচনের দিন। ভোটের দিন ২১ জন লোক নিহত হয়। ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পর মারা যায় আরো তিনজন।

এর আগে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে মারা যায় ১০ জন। প্রতিবেদনে বলা হয়, গণমাধ্যমের খবরে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ভোট পড়ার কথা বলা হলেও নির্বাচন কমিশন বলছে ভোট পড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপিসহ ২৭টি দল নির্বাচন বর্জন করায় ৩০০ আসনের সংসদ নির্বাচনে সরকার সমর্থক ১৫৩ জন প্রার্থী বিনা ভোটেই জিতে যান।

আল জাজিরা জানায়, নির্বাচন শেষ হওয়ার একদিনের মধ্যেই বিদেশি সরকার এবং আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো ভোটের নিন্দা জানিয়ে বলছে, এই নির্বাচন বিশ্বাসযোগ্য নয়। যুক্তরাষ্ট্র যত দ্রুত সম্ভব অবাধ, স্বচ্ছ, শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে।

আল জাজিরার সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশের বিশ্লেষকরা পশ্চিমা দেশগুলোর সুপারিশ মেনে দ্রুত আরেকটি নির্বাচনের জন্য প্রধান দলগুলোর মধ্যে সমঝোতার আহ্বান জানিয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘শিগগিরই একাদশ সংসদ নির্বাচন হতে হবে। আমি আশা করি দশম সংসদের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন দল তার মেয়াদকে প্রলম্বিত করবে না।’

ড. ইফতেখারজ্জামান বলেন, ‘নির্বাচন যদিও সাংবিধানিক ও আইনসিদ্ধ ছিল তথাপি রাজনৈতিক ও নৈতিক দিক থেকে তা প্রশ্নবিদ্ধ।’

আল জাজিরা জানায়, গত ২৫ অক্টোবর থেকে রাজনৈতিক সহিংসতায় বাংলাদেশে ২০০ জনের বেশি লোক নিহত হয়েছে।

শেয়ার করুন