আওয়ামী লীগের কেন্দ্রিয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের হাতে হাত রেখেও কুষ্টিয়া জেলা জামায়াতের রোকন নওশের আলির ‘শেষ রক্ষা’ হয়নি। হানিফের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের লোক’ হিসেবে ‘সার্টিফিকেট’ পেয়েও তার খুব ‘লাভ’ হয়নি। হানিফের দাবি অনুযায়ী ‘নির্বাচনী খরচ’ হিসেবে দশ কোটি টাকা না দেয়ায় তিনি এখন এলাকা ছাড়া।
নওশের আলির ঘনিষ্ঠজনদের অভিযোগ, মাহবুব উল আলম হানিফ ‘নির্বাচনী খরচ’ হিসেবে দশ কোটি টাকা চেয়েছিলেন নওশের আলির কাছে। টাকা দিতে না পেরে নওশের আওয়ামী লীগে যোগ দেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর রাত নয়টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের কাটাইখানা মোড়ে শহর যুবলীগ আয়োজিত এক নির্বাচনী সভায় মাহবুব উল আলম হানিফের সঙ্গে করমর্দন করে নওশের আওয়ামী লীগে যোগ দেন। তিনি ভেবেছিলেন, আওয়ামী লীগে যোগ দিলে টাকাটা দিতে হবে না।
নওশের আলির ঘনিষ্ঠ কয়েকজন প্রিয় দেশ ডটনেট’র কাছে অভিযোগ করেন, কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনে এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন মাহবুব উল আলম হানিফ। তিনি বিজয়ীও হন। নির্বাচনের আগে তিনি নওশের আলির কাছে দশ কোটি টাকা চান। টাকা দিতে না পারায় হানিফের লোকেরা নওশেরকে একপর্যায়ে হুমকি দেন। এরপর থেকে তিনি আত্মগোপনে আছেন।
নির্বাচনের চারদিন আগে থেকেই নওশেরকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও তিনি বসছেন না। তিনি জামায়াতপন্থী শ্রমিক সংগঠন জেলা শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি। এছাড়া তিনি জেলা বাস, মিনিবাস মালিক সমিতিরও সহসভাপতি।
এমন অভিযোগও আছে, নওশের আলির কাছ থেকে দশ কোটি টাকা নিয়ে হানিফ কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দি বিএনএফের মনোনীত প্রার্থী রাকিব উর রহমান খান লিটন চৌধুরিকে দিতে চেয়েছিলেন।
অন্যদিকে গত ৩ জানুয়ারি বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের বড় বাজার এলাকায় বিএনএফের জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রাকিব উর রহমান খান লিটন চৌধুরি অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য হানিফ আমাকে বিশ কোটি টাকা দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় হানিফের ক্যাডাররা আমাদের দলের নেতাকর্মীদের উপর দফায় দফায় হামলা, নির্যাতন চালান।’
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মাহবুব উল আলম হানিফ প্রিয় দেশ ডটনেট’র কাছে দাবি করেন, ‘এসব অভিযোগের একটাও সত্য নয়। সবই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার।’