সৌদি আরবের জেদ্দা শহরের আকাশ থেকে রোববার মধ্যরাতে বেশ কয়েক টুকরো মাংস ঝড়ে পড়ে। এ ঘটনায় বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেছেন শহরবাসী। পুলিশ বলছে, বিমানের চাকার সঙ্গে আটকে থাকা কোনো মৃতদেহ থেকে মাংসপিণ্ডগুলো খসে পড়ে থাকতে পারে।
জেদ্দা পুলিশের মুখপাত্র নাওয়াফ বিন নাসের আল-বোউক এক বিবৃতিতে জানান, রোববার রাত স্থানীয় সময় রাত আড়াইটার দিকে এক লোক ফোনে পুলিশকে জেদ্দার মুশরেফা এলাকায় আকাশ থেকে মাংস খণ্ড ঝড়ে পড়ার খবরটি জানান। আরবের পত্র পত্রিকা এবং সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ঝড়ে পড়া টুকরোগুলো মানুষের বলে দাবি করা হয়।
সৌদি পুলিশ অদ্ভূত এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তবে আকাশ থেকে এসব মাংসপিণ্ড ঝড়ে পড়ার সঙ্গে যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে জরুরি অবতরনকারী সৌদি বিমানের কোনো সম্পর্ক রয়েছে কিনা তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি। চাকায় সমস্যা দেখা দেয়ায় রোববার সকালে বিমানটি মদিনায় জরুরি অবদতরণ করে। ৩১৫ জন যাত্রী নিয়ে ইরানের মাশাদ শহর ছেড়ে আসার কিছু সময় পরেই এতে ত্রুটি দেখা দেয়।
বেপরোয়া লোকজন কখনো কখনো বিমানের চাকায় লুকিয়ে সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করে থাকে। তবে আকাশে পাখা মেলার পর অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে এদের অধিকাংশই মারা যায়। বিস্ময়করভাবে বেঁচে যান দু একজন।২০১০ সালে এ জাতীয় এক ঘটনায় পদত্যাগ করেছিলেন বৈরুত বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রধান। নিরাপত্তা কর্মীদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে এক লোক সৌদিগামী বিমানের চাকায় করে লেবানন ছাড়েন। বিমানটি রিয়াদে পৌঁছানোর পর সৌদি পরিচ্ছন্ন কর্মীরা চাকা থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এ ঘটনায় পদত্যাগ করেন ওই নিরাপত্তা প্রধান।
আকাশ থেকে মানুষের মাংস ঝড়ে পড়া অত্যন্ত বিরল ঘটনা।অনেক সময় মরা পাখিদের ঝড়ে পড়তে দেখা যায়। আকাশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ পড়ার খবরও নতুন নয়। কখনো কখনো মৃত কাঁকড়াও ঝড়ে পড়তে পারে। ২০১১ সালে নতুন বছর শুরু হওয়ার আগের রাতে যুক্তরাষ্ট্রের আরকানসাস অঙ্গরাজ্যের আকাশ থেকে ঝড়ে পড়েছিলো লাল ডানার হাজার হাজার পাখি। সবমিলিয়ে তিন হাজারের মতো মৃত পাখি পড়েছিলো। পশ্চিমা সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছিল এ খবরটি।
এছাড়া ২০১১ সালের গোড়ার দিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্রিটেন এবং ব্রাজিলে মৃত পাখি, মাছ এমনকি কাঁকড়া ঝড়ে পড়ার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছিলো। এসব অদ্ভূত ঘটনার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নেই। ধারণা করা হয় আতশবাজি উৎসব বা অতিরিক্ত আলোকসজ্জার কারণেই তারা দলে দলে আত্মাহুতি দেয়।